Jitendra Chaudhury: মানিকের রাজ্যে ‘ভরসা’ জিতেন্দ্র , চৌধুরীতে ভর করে কতটা এগোবে বাম-কংগ্রেস?

Jitendra Chaudhury: বাম-কংগ্রেস হাত মিলিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ত্রিপুরায়। আর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নাম উঠে এসেছে সিপিএম-র আদিবাসী নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর।

Jitendra Chaudhury: মানিকের রাজ্যে 'ভরসা' জিতেন্দ্র , চৌধুরীতে ভর করে কতটা এগোবে বাম-কংগ্রেস?
ছবি : সংবাদ সংস্থা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 01, 2023 | 9:14 PM

আগরতলা: ২৫ বছরের লাল দুর্গ ভেঙে ত্রিপুরায় পদ্মফুল ফুটিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (Bharatiya Janata Party)। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে বামকে ধরাশায়ী করে জয়ী হয় বিজেপি। ৫ বছরে বিজেপির রাজত্ব দেখল ত্রিপুরাবাসী। এখন বিগত ৫ বছরের বিজেপি শাসনের মূল্যায়নের পালা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে টিলার রাজ্যে। আগামিকাল তার ফলাফল প্রকাশ। এবার জনগণ কোন দলকে বেছে নেয় তা জানা যাবে রাত পোহালেই।

২৫ বছরের বামফ্রন্ট শাসন ঘুচাতে যে দল ৫ বছর আগে সক্ষম হয়েছিল সেই বিজেপিই কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে? এদিকে টিলার রাজ্যে ২৫ বছরের শাসনের মেরুদণ্ড ছিলেন মানিক সরকার। বার্ধক্যের কারণে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি তিনি। তবে সিপিএম প্রার্থীদের হয়ে সব প্রচারে গিয়েছেন। সেখান থেকে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছেড়েছেন। বারবার তাঁর বক্তব্যে প্রত্যাশা ভেসে উঠেছে। বিজেপিকে সরকার থেকে হঠাতে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে বিরোধী দলগুলি। যেমন এক সময়ের শত্রু বাম ও কংগ্রেস এই নির্বাচনে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে একজোট হয়েছে। তাঁরা আসন বণ্টন করে লড়েছে এই নির্বাচনে। আর মুখ্য়মন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও একটা আভাস নির্বাচনী প্রচার থেকেই দেওয়া হয়েছে বাম-কংগ্রেসের জোটের তরফে। নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকেই কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদন অজয় কুমার জানিয়েছিলেন, বাম-কংগ্রেস জোট এই নির্বাচনে জিতলে সিপিএম-র একজন বর্ষীয়ান আদিবাসী নেতা ও মাটির ছেলেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

কংগ্রেস নেতার এই মন্তব্যের পরই মুখ্য়মনন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সিপিএম নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর নাম উঠে আসে। ৬৫ বছর মার্কসবাদী নেতা বর্তমানে সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক। দলের ত্রিপুরা ইউনিটের সমস্ত দায়িত্ব, দায়ভার তাঁর কাঁধেই। রাজ্য ইউনিটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি। এবং রাজ্যের ক্যাবিনেটে একাধিকবার মন্ত্রীও থেকেছেন তিনি। কেন্দ্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এদিকে বাম-কংগ্রেস জোটের এই ঘোষণাকে নাকচ করে দিয়েছে বিজেপি। শাসক দল জানিয়েছে, জনজাতিদের ভোটের দিকে তাকিয়ে বাম-কংগ্রেস জোট এই মন্তব্য করেছে।

তবে আদিবাসী নেতা ও মাটির ছেলে হওয়া ছাড়াও আরও বেশ কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে যা জিতেন্দ্র চৌধুরীর পক্ষে রয়েছে। বাম-কংগ্রেসের জোটের বিযয়ে যাঁরা প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন জিতেন্দ্র। সে কারণে নির্বাচনে সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পেলে মুখ্যমন্ত্রী হলে কংগ্রেসের প্রথম পছন্দ হতে পারে জিতেন্দ্র চৌধুরী। এছাড়াও সবরকম রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তীক্ষ্ণ তাঁর রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা। রাজনীতিকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন তিনি। কলেজ থেকেই সিপিএম করে চুলে পাক ধরিয়েছেন তিনি। ১৯৭১ সাল থেকে সিপিএম ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি। তার এক দশক পরে নেশা ও পেশা হিসেবে রাজনীতিকেই বেছে নেন তিনি। এর ৭ বছর পরই দলের রাজ্য় কমিটিতে জায়গা করে নেন তিনি। ১৯৯৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম জিতেছিলেন তিনি। তারপর ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মানিকের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের তাঁকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। তারপর ২০২১ সালে তিনি সিপিএম-র সম্পাদক হন। এদিকে জোটের জন্য় তিনি কংগ্রেসের পাশাপাশি তিপ্রা মোথার প্রধান প্রদ্যোৎ দেববর্মার কাছেও গিয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে সেরকম সাড়া পাননি। এই জোট কার্যকর না হলেও জিতেন্দ্রর সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্বীকার করেছেন দেববর্মা। এবং সেই খাতিরে সাবরুম থেকে কোনও প্রার্থীও দেয়নি তিপ্রা মোথা। জনজাতিদের সঙ্গেও তিনি একটি যোগাযোগের সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সিপিএম-র উপজাতীয় শাখা ত্রিপুরা রাজ্য গণ মুক্তি পরিষদের সভাপতি এবং আদিবাসী অধিকার রাষ্ট্রীয় মঞ্চের জাতীয় আহ্বায়ক তিনি। এবার বাম-কংগ্রেস জোটের জনজাতি মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ত্রিপুরার খেলায় কতটা প্রভাব ফেলতে পারে তা জানা যাবে রাত পোহালে।