তৃণমূলের দেওয়াল লিখনের সামনে বিজেপির ব্যানার, সংঘর্ষে মাথা ফাটল প্রাক্তন কাউন্সিলরের
বিজেপির (BJP) দাবি, তৃণমূলই (TMC) মারধর করেছে তাঁদের কর্মীদের। প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।
বারাসত: দু দফা ভোট হয়ে গেলেও রাজ্যের একাধিক জায়গা এখনও সংঘর্ষে উত্তপ্ত। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তৃণমূল-বিজেপি (TMC-BJP) সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বারাসাত (Barasat)। তৃণমূলের দেওয়াল লিখনের সামনে রাখা ছিল বিজেপির ব্যানার। আর তা নিয়েই সংঘর্ষ। সংঘর্ষের জেরে মাথা ফাটল প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের দাপুটে নেতা অরুন ভৌমিকের (Arun Bhowmick)।
ব্যানার রাখা দেখে প্রতিবাদ জানাতে যায় তৃণমূল। শুরু হয় বাক-বিতণ্ডা। সেখান থেকেই শুরু সংঘর্ষ। বারাসাতের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৫৭ কাঠা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তৃণমূলের অন্তত আট জন আহত হয়েছেন যার মধ্যে দুজনের আঘাত গুরুতর। ঘটনায় মাথা ফেটেছে সাত নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অরুন ভৌমিকের। তৃণমূলের অভিযোগ, পোস্টার-ব্যানার বিতর্ক মেটাতে গিয়েই বিজেপি দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত হন অরুন ভৌমিক। অরুন ভৌমিক ছাড়াও রহমত আলি নামে আরও এক তৃণমূল নেতার আঘাত গুরুতর। অরুন ভৌমিক, রহমত আলি সহ আট তৃণমূলের নেতা সমর্থককে নিয়ে আসা হয়েছে বারাসাতের যশোর রোডের পাশে বেসরকারি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে। বিজেপি ঘটনাটিকে প্রাথমিক ভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ বললেও তৃণমূলের অভিযোগ, সুপরিকল্পিত ভাবে দুদিক থেকে ঘিরে রেখে রড ও বাঁশ নিয়ে হামলা চালায় বিজেপি কর্মী সমর্থক ও বিজেপির ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় বিজেপিরও বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন।
বারাসাতের ওই এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ বিবাদ শুরু হয়। বারাসাত বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী চিরঞ্জিতের সমর্থনে একটি দেওয়াল লিখন ছিল সেখানে। তার ঠিক পাশেই বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে একটি ব্যানার রেখে যায় বিজেপি সমর্থকরা। তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী সমর্থকরা বিজেপির ব্যানার নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলে। তৃণমূলের দাবি ছিল তৃণমূলের দেওয়াল লিখন আংশিক ঢেকে যাচ্ছে বিজেপির ব্যানারে। এর থেকেই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। ঘটনাস্থলে ছুটে যান অরুন ভৌমিক। বিজেপির আপত্তি থাকায় দু’দলের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়।
তৃণমূলের অভিযোগ,বিজেপি কর্মীরা প্রচুর সংখ্যায় এসে দলবল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রাতেই সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় বেসরকারি হাসপাতালে আসেন অরুন ভৌমিক ও আহত কর্মীদের দেখতে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি কর্মীরা দুদিক থেকে মুষ্টিমেয় তৃণমূলকে ঘিরে ধরে হামলা চালিয়েছে। অশনি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ঘটনা খারাপ দিকে মোড় নিচ্ছে বুঝে বারাসাত থানার পুলিশকে জানানো সত্বেও পুলিশের একটি গাড়িতে সামান্য সংখ্যক পুলিশ কর্মী ঘটনাস্থলে হাজির হয় এবং পুলিশের সামনে বিজেপি মারধর করলেও পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়। তৃণমূল নেতৃত্ব আরো জানিয়েছে, আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে।
আরও পড়ুন: বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত কামারহাটি, আহত গেরুয়া শিবিরের চার কর্মী
বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূলের দাবি সর্বৈব মিথ্যা। তিনি জানান, তাঁদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। প্রাণের ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে কোনোক্রমে পালিয়ে যান তাঁরা। আহত কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।