মিঠুন আসলে জলঢোঁড়া, জাতগোখরো হলে মোদীর পায়ে মাথা ঠেকাত না: মদন মিত্র

TV9 বাংলাকে এক্সক্লুসিভ মদন মিত্র (Madan Mitra) বললেন, 'মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) আসলে জলঢোড়া, তা না হলে মোদীর পায়ে গিয়ে মাথা ঠেকাতেন না।' আর সঙ্গে তুলে দিলেন মিঠুনের-বিজেপি যোগের পিছনে এক গাদা প্রশ্ন।

মিঠুন আসলে জলঢোঁড়া, জাতগোখরো হলে মোদীর পায়ে মাথা ঠেকাত না: মদন মিত্র
মিঠুন সম্পর্কে মদন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 08, 2021 | 7:08 PM

কলকাতা: তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁর প্রসঙ্গ। কিন্তু এড়াতে পারলেন না মমতার দলের নেতারা। মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)  বিজেপির ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে যে সব জনপ্রিয় সংলাপ বলেছেন, তা উদ্ধৃত করেই এবার তাঁকে বিঁধল তৃণমূল নেতৃত্ব। TV9 বাংলাকে মদন মিত্র (Madan Mitra) বললেন, ‘মিঠুন চক্রবর্তী আসলে জলঢোড়া, তা না হলে মোদীর পায়ে গিয়ে মাথা ঠেকাতেন না।’ আর সেই সঙ্গেই তুলে দিলেন মিঠুনের-বিজেপি যোগের পিছনে একাধিক প্রশ্ন।

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট  (West Bengal Assembly Election 2021) প্রকাশিত হওয়ার পর ভোট বঙ্গের প্রথম রবিবার ছিল একেবারেই হাইভোল্টেজ।  এক দিকে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যখন নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশ, প্রায় সেই একই সময়ে শিলিগুড়ির পথে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মোদী-মমতার সভা পাল্টা সভার থেকেও ভোট বাংলায় রবিবার জমে থেকেছে ‘মহাগুরুকে’ ঘিরেই। লালা-সবুজের গণ্ডি পেরিয়ে আজ মিঠুন চক্রবর্তী পা রাখলেন গেরুয়া বলয়ে।

একসময় তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভার সাংসদের পদে মনোনয়ন পেশ করার পর নবান্নে এসে কার্যত বয়সে ছোট মমতার হাঁটু ছুঁয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল মিঠুনকে। আজ ফের একই কাজ করতে উদ্যত হয়েছিলেন মিঠুন। তবে উল্টোদিকে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা নন, মোদী। এদিন, নরেন্দ্র মোদীকে হাঁটু ছুঁয়ে প্রণাম করার চেষ্টা করেছেন তিনি। আপ্লুত কন্ঠে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এই দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো।” বক্তৃতা শেষে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁর সদর্প উচ্চারণ, ‘‘আমি জলঢোড়াও নই। বেলেবোড়াও নই। আমি হলাম জাত গোখরো! এক ছোবলেই ছবি।’’

তবে লক্ষ্যণীয়ভাবে মিঠুনকে এদিন মমতা কিংবা তৃণমূল সম্পর্কে একটি শব্দও সরাসরি উচ্চারণ করতে শোনা যায়নি। তবে মিঠুন না বললেও বাণ ছুড়লেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। তাও আবার এক্কেবারে মদন সুলভ ভঙ্গিতেই।

TV9 বাংলাকে মদন মিত্র বললেন, “আমি খুব দুঃখ পেলাম। মিঠুন চক্রবর্তী বলে আমি যে মানুষটাকে চিনতাম, চাপের কাছে নত হওয়ার মতো মেরুদণ্ড ছিল না তাঁর। কিন্তু দেখা গেল মানুষের জীবনে এমন একটা সময় আসে, যে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়ানোর চেষ্টা হয়।”

ঠিক এই জায়গাতেই মদন মিত্রকে প্রশ্ন করা হয়, ঠিক কোন ‘চাপের’ কথা বলছেন তিনি? মদন কথার রেশ টেনেই বলতে থাকলেন, “মিঠুন যে বললেন, আমি হেলেও নই, ঢোরাও নই, আমি গোখরো, সত্যিই ওঁ যদি গোখরো হতেন, তাহলে মোদীর পায়ে গিয়ে জমা হতেন না।” ফের প্রশ্ন ‘এটা কি সিবিআই/ইডি-র চাপ?’ মদনের উত্তর, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।’ তবে গোখরো প্রসঙ্গে চলতে থাকে কথা। মদন বলেন, “ডায়লগে গোখরো বলা যায়। জীবন যখন হেলে, ঢোড়া হয়ে যায়, তখন বাইরে ডায়লগটা থাকে গোখরোর মতো, কিন্তু ওটা আসলে হেলে ঢোরা হয়ে যায়।”

মিঠুনের সংলাপের পাল্টা মদন বললেন, “মারব এখানে, পড়বে ঝাড়খণ্ডে।” (ঝাড়খণ্ডটা অবশ্য তিনি কথার কথাই বলেছেন বলে দাবি করেছেন, এর অন্য কোনও তাৎপর্য নেই)। এখানেই না থেমে, মিঠুনকে অনুকরণ করে মদন এদিন ফের বলেন, “মিঠুন চক্রবর্তী যেন ভুলে না যান, আমরাও খবর দেখি না, পড়ি না। খবর তৈরি করি।”

আজ ‘গর্বিত বাঙালি’ মিঠুনকে কটাক্ষ করেন ফিরহাদ হাকিমও। বললেন, “মিঠুন দা কখন কোন দলে থাকেন, তা বোঝা দায়। এর আগে সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন, তারপর আমাদের সঙ্গে। এখন বিজেপির সঙ্গে। এরপরে হয়তো অন্য কারোর সঙ্গে থাকবেন।”