ফের জোটে জট! প্রার্থী বদল চেয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কংগ্রেসের
থামছে না অন্দরের কোন্দল। ক্রমশই জটিল হচ্ছে জোট পরিস্থিতি।
কলকাতা: ভোট আবহে যেখানে জোরদার রাজনৈতিক প্রচারে ব্যস্ত দলগুলি, সেখানে জোটের জট নিয়ে ক্রমাগতই জেরবার হচ্ছে বাম-কংগ্রেস (left Congress Alliance)। প্রার্থী বদলের দাবি করে জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার, কংগ্রেসের প্রার্থী বদল চেয়ে কমপক্ষে তিনটি জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা।
মালদা মালদার ১২ টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনে লড়ছে কংগ্রেস। এর মধ্যে, মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দুলাল শেখের নাম প্রত্যাহার চেয়ে নিজেদের দলীয় কার্যালয় নিজেরাই ভাঙচুর করলেন কংগ্রেস (Congress) কর্মী সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে জেলা প্রেসিডেন্ট আবু হাসেম খান চৌধুরী দুলালকে প্রার্থী করেছেন। অথচ, মোথাবাড়িতে সম্ভাব্য কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন মতিউর রহমান। সোমবার রাতে, বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস কর্মীরা কোতোয়ালিতে আবু হাসেম খান চৌধুরীকে ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভও দেখান। পরে, পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনায়, কংগ্রেস জেলা সভাপতি কালীসাধন রায় জানান, এ ধরনের বিক্ষোভ অত্যন্ত দুঃখজনক। দলের সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব মিটিয়ে ফেলা হবে। সিপিএম জেলা সম্পাদক অম্বর রায়ের মতে, আসন রফা নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা আছে। তবে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ বাম শিবির। তবে, জোট সমস্যা জলদি মিটে যাবে বলেই মনে করছে বাম-কংগ্রেস।
নদিয়া জোটের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই বার বার সংযুক্ত মোর্চার তরফে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাম-কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা। মঙ্গলবার, কালীগঞ্জের দেবগ্রামে কংগ্রেসের (Congress) তরফে প্রার্থী আবুল কাশেমকে প্রত্যাহারের দাবিতে সম্মিলিত মিছিল করেন বিক্ষুব্ধ বাম-কংগ্রেস সমর্থকেরা। অন্যদিকে, শান্তিপুরে আসন রফা নিয়ে প্রায় যুযুধান দুই শিবিরে পরিণত হয়েছে বাম-কংগ্রেস। সহাবস্থানের পরিবর্তে অপ্রকাশ্যে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সংযুক্ত মোর্চার নেতৃবৃন্দ।
মুর্শিদাবাদ প্রার্থী বদলের দাবিতে মঙ্গলবার রঘুনাথগঞ্জে বিক্ষোভে নামেন কংগ্রেস নেতা কর্মীরা। উল্লেখ্য, রঘুনাথগঞ্জে কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী হয়েছেন আবুল কাসেম বিশ্বাস। কিন্তু, প্রার্থীকে না-পসন্দ দলীয় কর্মীদের। অন্যদিকে, সুতিতে, প্রাক্তন বিধায়ক হুমায়ুন রেজাকে পদপ্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ কংগ্রেসের (Congress) দলীয় কর্মী সমর্থকেরা। হুমায়ুন রেজাকে প্রার্থী করার বিরোধিতা করে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন সুতি ২ ব্লক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা জগতাই ১ অঞ্চলের দলীয় সভাপতি ইউসুফ আলি। আইএনটিইউসির জঙ্গিপুর মহকুমা সভাপতিও তিনি। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতটি কংগ্রেসের দখলে। সেটির ১১ জন সদস্যও সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ব্লক সভাপতিকে প্রার্থী না করলে তাঁরাও দল ছাড়বেন। হুমায়ুন প্রার্থী পদ ত্যাগ না করলেও দল ছাড়লেন সুতির কংগ্রেসের সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস। একই সঙ্গে, সদ্য তৃণমূল (TMC) ত্যাগী মইদুল ইসলামকে নির্দল প্রার্থী ঘোষণা করে তাঁর পক্ষে দাঁড়ালেন আলফাজুদ্দিন।
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে আসন রফা নিয়ে প্রায়ই জটে জড়িয়েছে জোট। কিছুদিন আগেও, সাগরদীঘিতে প্রার্থী বদল নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন খোদ কংগ্রেস কর্মীরাই। এছাড়াও সামশেরগঞ্জে, ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে তীব্র জোট জট। সংযুক্ত মোর্চার দুই শরিক সিপিএম ও কংগ্রেস এবার ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে। সংযুক্ত মোর্চার ফর্মূলা অনুযায়ী, সামসেরগঞ্জ আসনটি সিপিএমের জন্য বরাদ্দ হলেও সেখানে কংগ্রেসও তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে। যা নিয়ে জোর চাপানউতর শুরু হয় মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক মহলে। যদিও দুই শরীকের তরফেই দাবি করা হয়, খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু রামগড় ছাড়তেই ‘জয়ের মুখ’ দেখলেন তৃণমূল প্রার্থী বীরবাহা