এক অ্যাডেই বাজিমাত, বউমা করতে চেয়ে ফোন, অবিবাহিত পায়েলের জুটেছিল ‘বিবাহিত’র তকমা

নিছকই অ্যাড শুট নয়, শহরের বুকে হোর্ডিংয়ে পায়েলকে দেখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সে সময়ের বহু যুবক, কাতারে কাতারে আসতে শুরু করেছিল বিয়ের প্রস্তাব, হবু বউ মার খোঁজে খোঁজে পালে পালে স্বঘোষিত শাশুড়িরা হানা দিতে শুরু করেছিলেন

এক অ্যাডেই বাজিমাত, বউমা করতে চেয়ে ফোন, অবিবাহিত পায়েলের জুটেছিল 'বিবাহিত'র তকমা
পায়েল দে।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2021 | 12:02 AM

পায়েল দে। ছোট পর্দার পরিচিত মুখ তিনি। কখনও তিনি ‘দুর্গা’ আবার কখনও বা ‘উজ্জিয়িনী’। একই সঙ্গে পায়েল আবার ঘোরতর সংসারীও। দ্বৈপায়ন-মেরাখকে নিয়ে সুখের সংসার তাঁর। এ হেন পায়েলের কেরিয়ার শুরু কিন্তু এক বিজ্ঞাপনী অ্যাড শুট দিয়ে। সেই শুট নিছকই অ্যাড শুট নয়, শহরের বুকে হোর্ডিংয়ে পায়েলকে দেখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সে সময়ের বহু যুবক, কাতারে কাতারে আসতে শুরু করেছিল বিয়ের প্রস্তাব, হবু বউমার খোঁজে খোঁজে পালে পালে স্বঘোষিত শাশুড়িরা হানা দিতে শুরু করেছিলেন যে বস্ত্র বিপণনী সংস্থার শুট সেখানে… আর্ট ডিরেক্টর তরুণকান্তি বারিকের কলমে উঠে এল এক অজানা গল্প।

তরুণকান্তির লেখা বলছে, বেশ বহু বছর আগের কথা। জনপ্রিয় এক শাড়ির দোকানের বেনারসীর বিজ্ঞাপনের জন্য প্রয়োজন নতুন মুখ। এতদিন ধরে সেই শাড়ির দোকানের মুখ ছিলেন মৈত্রেয়ী। সফল বিজ্ঞাপন। তরুণকান্তি লিখছেন, “শকিল হল কে হবে নতুন মডেল? মৈত্রেয়ীর চোখের সেই ভাষা, সেই এক্সপ্রেশন খুঁজে পাবো কোথায়? ভয় ছিল নতুন বিজ্ঞাপন পুরনোকে যদি ছাপিয়ে নাও যায় নিদেনপক্ষে যেন সমান সমান হয়। নইলে…।”


অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে খোঁজ মিলল নতুন মুখের। হল বিজ্ঞাপনও। ওই নতুন মুখই ছিলেন পায়েল দে, শহর ছেয়ে গেল তাঁর কাজল টানা বড় চোখ আর লাল টিপে বিয়ের সাজে। বিজ্ঞাপনটি যে জনপ্রিয় হয়েছিল তা সন্দেহ নেই। কিন্তু তার চেয়েও জনপ্রিয় হয়েছিলেন পায়েল। তরুণকান্তির কথায়, “বিজ্ঞাপনটি বেরনোর পর দোকানটিতে প্রায় রোজই ফোন আসত পায়েলের ফোন নম্বর জানতে চেয়ে। কেউ ওকে বিয়ে করতে চায়, কেউ চান ছেলের বউ করতে।”

রাতারাতি পায়েল হয়ে গিয়েছিলেন যেন পাশের বাড়ির মেয়ে।পরিস্থিতি ক্রমে এতটাই হাতের বাইরে চলে যায় যে, যে দোকানের জন্য শুট হয়েছিল সেই দোকান থেকেই আর্ট ডিরেক্টর তরুণকান্তির ফোন নম্বর দেওয়া হয়। কিন্তু একদিন যা হয় তা ছাপিয়ে যায় সমস্ত কিছুকেই। নস্টালজিক লেখকের কথায়, “আমি তখন দোকানে উপস্থিত। অফিস থেকে জানানো হল, একটি ছেলে তার মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে, পায়েলের বিষয়ে কথা বলতে চায়। দেখা করলাম। ছেলেটির মায়ের অনুরোধ, দয়া করে যদি পায়েলের ফোন নম্বর দিই। সেটা সম্ভব নয় জানানোর পর বললেন, আপনিই না হয় ফোনে ধরে দিন, একটু কথা বলব শুধু। ছেলেটার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।” ‘আবদার’ মেনে নেননি তিনি। মিথ্যে বলেছিলেন। বলেছিলেন,”পায়েলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।”

আজ এত বছর পরেও সে কথা মনে করে স্মৃতিতে ডুব তাঁর। কিছুটা আত্মতৃপ্তিও যেন কাজ করছে। লিখেছেন, “আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে আমার পাওনা শুধু এটুকুই যে, সঠিক করেছিলাম মডেল নির্বাচন।” অবিবাহিত হয়েও পায়েলের সেদিন জুটেছিল বিবাহিত তকমা। আজ তিনি সত্যিই বিবাহিত। তাঁর জীবন জুড়ে দ্বৈপায়ন-মেরাখ।