‘মিলে সুর মেরা তুমহারা… তো সুর বনে হমারা’

Tv9 বাংলার সৌজন্যে যেন মিলে গেল দুই অচেনা সুরস্রষ্টার সুর। ‘ভাইরাল’ ভায়োলিন প্লেয়ারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন রিয়েল লাইফ ‘ট্যাংরা ব্লুজ়’-এর স্রষ্টা।

‘মিলে সুর মেরা তুমহারা... তো সুর বনে হমারা’
সঞ্জয়-ভগবান মালী।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 21, 2021 | 1:50 PM

আজ ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে। সারা বিশ্বজুড়ে সুরের আয়োজন হবে। চলবে সেলিব্রেশন। সুরের নেশায় মাতবে সকলে। সুরের উদযাপনের এমন এক দিনে কোনও এক অন্ধগলিতে হয়তো ভগবান মালী, যিনি আজ ‘ভাইরাল’ হয়ে উঠেছেন, তিনি একমনে বাজিয়ে যাবেন তাঁর সাধের বেহালা। হয়তো ট্যাংরার কোনও এক গলিতে সমাজের এক কোণে থাকা ‘সব না পাওয়া’ ছেলেপুলেরা আজও টিউন করবে তাঁদের বাদ্যযন্ত্রগুলো। ভেসে আসবে সুর পথচারীদের গানে। হয়তো এভাবেই চলবে তাঁদের সুরযাপন। কে বলতে পারে? তবে বেহালা বাজানো লোকটা হোক কিংবা কলকাতা ক্রিয়েটিভ ওয়েস্ট আর্ট সেন্টারের দলবল, তাঁদের জীবনে কিছু হেরে যাওয়া থাকলেও সুরের উজ্জ্বল আলোয় লেখা আছে শুধু জিতে যাওয়ার গল্প। তাঁদের গল্পগুলো কোথাও গিয়ে এক।

Tv9 বাংলার সৌজন্যে গিরিশ পার্কের রাস্তার সেই ‘ভাইরাল’ ভায়োলিন প্লেয়ার ভগবান মালীর প্রতিবেদন দেখেছেন কলকাতা ক্রিয়েটিভ ওয়েস্ট আর্ট সেন্টার-এর সঞ্জয় মণ্ডল। এই সঞ্জয়ের দলের কথা সম্প্রতি ফুটে উঠেছে স্ক্রিনেও-ট্য়াংরা ব্লুজ় ছবিতে। ভায়োলিন প্লেয়ারকে তাঁকে বাজাতে দেখে এক নতুন উদ্যোগ মাথায় এল সঞ্জয়ের। সেই ভাবনার কথা তুলে ধরলেন তিনি।

“আমরা যেমন একটা জায়গা থেকে উঠে জাতীয় স্তরে কাজ তুলে ধরতে পেরেছি, প্রচারের আলোয় আসতে পেরেছি, সমাজে একটা সম্মান পেয়েছি, ঠিক তেমনই অন্য দিকে, আমাদের আশপাশে কিছু মানুষ আছে যাঁরা প্রচারে নেই, কিন্তু নিজের শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমার পাড়াতে একজন থাকেন, তাঁর নাম হীরালাল, ঠিকঠাক চোখে দেখতেও পান না তিনি কিন্তু এখনও শুধুমাত্র আন্দাজে ব্যাঞ্জো বাজিয়ে চলেছেন,” বললেন সঞ্জয়।

হীরালালেরই মতো ‘ভায়োলিনওয়ালা’ ভগবান মালী। দারিদ্র ঢেকে রয়েছে গোটা জীবনে। তবে এখনও ভায়োলিনে তার হাত স্পর্শ করলে শিল্পের জাদু ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। সঞ্জয় আরও বলেন, “রাস্তার পাশে দেখলাম উনি (ভগবান মালী) ভায়োলিন বাজিয়ে চলেছেন। আমরা আজ এমন জায়গায় আজ উঠে এসেছি, যেখানে আরও পাঁচজন ভালমানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি। আমি চাইব ভগবান মালীকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে। ব্যাঞ্জোবাদক কিংবা ভায়োলিন প্লেয়ারের জীবন থেকে আমাদের জীবনও খুব একটা আলাদা নয়। তাঁদেরও মিউজিক জীবন আমাদেরও। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তাহলে আমাদেরও কিছু আয় হবে, আর ওঁদেরও। এবং তাঁরা সম্মানের সঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের শিল্প মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। শেষ জীবনে আরও অনেকটা সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারবেন, যে সম্মান তাঁদের প্রাপ্য ছিল। এই ভাবনা আমার এসেছে, যদি ঈশ্বর চান নিশ্চয়ই এ কাজ করতে পারব।”

মানুষের পাশে দাঁড়ালেন এক মানুষ। আর এমন এক দিনে যে দিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে সুর। সুরের কোনও ভাষা হয় না। ভালবাসারও নয়। থেকে যাক মানুষদের প্রতি সুরে-সুরেই ভালবাসার সব প্রমাণ।

আরও পড়ুন ছেলেবেলার সেই বেহালা বাজানো লোকটা….