Durga Puja 2021: মাইকে বিভিন্ন প্যান্ডেলের বিভিন্ন গান মিক্স হয়ে খিচুড়ি গান কানে আসে, মজা পাই এখনও: রাঘব চট্টোপাধ্যায়
Durga Puja 2021: আমি প্রেমিক লোক। এখনও আমার প্রেম হয়। কিন্তু কোথায় কীভাবে এক্সপ্রেস করছি না করছি, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
ছোটবেলার পুজো
ছোটবেলার পুজো খুবই ভাল কাটত। তখন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা বেশি হত। পাড়ায় হইচই হত। আমি নৈহাটি শহরে বড় হয়েছি। এখনও সেখানেই থাকি। সেখানে আমার বাড়ির চারদিকে চারটে পুজো হয়। একটাই ঘটনা হত, সেটা হল রাতেরবেলা যখন চারদিক থেকে মাইক ও সাউন্ড বাজত তখন এদিক থেকে হিন্দি গান, সামনে থেকে বাংলা গান, ডান দিক থেকে রবীন্দ্রনাথের গান, পিছন দিক থেকে লোকগীতি ভেসে এসে পুরোটা মিক্স হয়ে একটা খিচুড়ি গান ছোটবেলা থেকে মাথার মধ্যে ঢুকত। সেটা খুব মজাও লাগত শুনতে। এছাড়া আমি একটা পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতাম। চাঁদাও তুলেছি। বাড়িতে অনুমতি পেলে পিকনিকে যেতাম। ছোটবেলা থেকে যেহেতু গিটার বাজাতাম, অনেক কনসার্টে বাজাতে যেতাম। পাড়ার অনুষ্ঠান হলে কিংবা বন্ধুদের কোনও অনুষ্ঠান হলে সেখানে গিটার বাজানোর ডাক পেতাম। সেগুলো খুবই ইন্টারেস্টিং লাগত আমার।
পুজোর কোন জিনিসটা এখন মিস
ব্যক্তিগতভাবে বলতে এখন মানুষ অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ফোন নিয়ে বড্ড ব্যস্ত। আমার আর ভাল লাগে না। মানুষ আড্ডা দেয় না, গল্প করে না। সারাক্ষণ হাতের মধ্যে যন্ত্রটা নিয়ে খুটুরখুটুর করতে থাকে। আমি এখন দেখি তো, চারটে বন্ধু চায়ের দোকানে বসে আছে। কেউ কারওর সঙ্গে কথা বলে না। সবাই তাঁদের ফোন নিয়ে দেখে যায়। সেই জন্য একসঙ্গে বসার দরকারই হয় না। যে যার ফোন নিয়ে থাকতে পারে। ফোন যেমন আমাদের অনেক সুবিধে করে দিয়েছে, তেমনই কিছু অপকারও করেছে। বাচ্চারাও এখন ফোন নিয়ে ব্যস্ত। আমরা ছোটবেলায় অনেক কিছু করতাম। ছবি আঁকতাম, বাজিটাজি বানাতাম, তুবড়ি বানাতাম, আড্ডা দিতাম, বিভিন্ন দোকানে ভাল ভাল কোথায় খাবার পাওয়া যায়, সেগুলো খুঁজে খুঁজে খেতাম। এখন তো সেই জিনিসগুলো আর নেই। অনেক কমে গিয়েছে। মানুষ অধিকাংশ সময়ই ইন্টারনেট আর ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
পুজোর প্রেম
অনেক হয়েছে। কতগুলো বললে মুশকিল হয়ে যাবে, কারণ আমার মেয়েরাও বড় হচ্ছে আস্তে-আস্তে। এখন বলাটা ঠিক হবে না। আর সত্যি বলতে আমি প্রেমিক লোক। এখনও আমার প্রেম হয়। কিন্তু কোথায় কীভাবে এক্সপ্রেস করছি না করছি, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রেম তো হয়ই। পুজোর সময় বলতে আলাদাভাবে সেটা হয়নি। যখন-তখন হয়েছে। স্টেজেও তো অনেককে ভাল লেগে যায়। আমার অনেক ফ্যান আছেন, যাঁরা আমার প্রতি ইন্টারেস্টেড। এরকম হয়েছে আমারও কাউকে ভাল লেগেছে। সেগুলো হয়েই থাকে, হয়েও যাবে, তবে কতদিন হবে জানি না।
পুজোর খাওয়াদাওয়া
আমি কিন্তু নিরামিষ খাবারও বেশ পছন্দ করি। তবে মাছ আমার বেশি পছন্দ। চাইনিজ় খেতে ভালবাসি, বিরিয়ানিও ভালবাসি। মিষ্টি খুব ভালবাসি। নানা রকমের মিষ্টি থাকেই আমার পুজোর খাদ্য তালিকায়। নিরামিষের তালিকায় থাকে রাধাবল্লবী, শিঙারা, খাসতা কচুরি। তারপর বাঙালিদের নিজস্ব রান্না, যেমন মোচা, উচ্ছে চচ্চড়ি, শুক্তো আমার ভীষণ পছন্দ। এরসঙ্গে ভেটকি মাছ ভীষণ ভালবাসি। পাবদা মাছ ভালবাসি। চিকেনের নানারকমের ডিশ আমার প্রিয়। ফিসফ্রাই আমার ভীষণ ভাললাগে খেতে।
পুজোর শপিং
পুজোতে আলাদা করে শপিং কমই হয়। কখনও-সখনও নানারকমের অডিয়ো-ভিডিয়োর কাজ করতে হয় বলে, চ্যানেলের প্রচুর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকি বলে, ভাল ভাল জামাকাপড় মাঝেমাঝে কিনি। তা ছাড়া আমার স্ত্রীও কেনে, আমার মেয়েরাও আজকাল জামাকাপড় পছন্দ করে দেয়। তবে আমি বারণ করি কিছু কিনতে।
পুজোর শো
আমি তো বেশির ভাগ সময় পুজোতে বিদেশেই থাকি। আমেরিকা, ইউরোপ, বহু দেশে যাই। দেশে থাকলেও মুম্বই-দিল্লি-বেঙ্গালুরু-পুনেতে নানা ধরনের প্রোগ্রাম থাকে। করোনার কারণে সব বন্ধ আছে দু’ বছর।
এবারের পুজোর প্ল্যান
দু’দিন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় আমার সব আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে পুজো হয়। সেখানে থাকব। দু’দিন একটু বাচ্চাদের সঙ্গে বেরব। দুটো দিন আমি নৈহাটির বাড়িতেই থাকব। আমাদের তো গঙ্গার ঘাটে বিরাট বাড়ি। বাড়ির কাছেই দু-তিনটে বড়বড় পুজো হয়। সেগুলো নিয়েই আমাদের পুজো মোটামুটি কেটে যাবে।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: অষ্টমীর দিন আমাদের পুজোর প্যান্ডেল পুড়ে গিয়েছিল: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়