জোজো ছেলে দত্তক নিলেন, কিন্তু গায়িকার বর-মেয়ে কি মানতে পারছেন?

Jojo: ৫০ বছর বয়সে এসে কেন এক সন্তানকে দত্তক নিতে হল জোজোকে? সেই সন্তানকে কি মেনে নিয়েছেন জোজোর স্বামী এবং চাকুরিরতা কন্যা? জোজোর অন্দরমহলে এখন ঠিক কি চলছে? TV9 বাংলাকে সত্যি কথাটা জানিয়েছেন জোজো স্বয়ং। এমন সত্য, যা ভাবাতে বাধ্য করবে...

জোজো ছেলে দত্তক নিলেন, কিন্তু গায়িকার বর-মেয়ে কি মানতে পারছেন?
জোজো।
Follow Us:
| Updated on: May 16, 2024 | 10:23 PM

মাত্র ১৮ বছর বয়সে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন গায়িকা জোজো। স্বামী-কন্যা-শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। শ্বশুর মারা গিয়েছেন। এখন সেই সংসারে আগমন ঘটেছে ছোট্ট আদির। না, ৫০ বছর বয়সে এসে প্রেগন্যান্ট হননি জোজো। সারোগেসির মতো পন্থা অবলম্বনও করেননি তিনি। জোজো একটি মিষ্টি গোপাল ঠাকুরের মতো ছেলেকে দত্তক নিয়ে যশোধা হয়েছেন। জোজোর কোল জুড়ে এখন সেই পুত্র খেলে বেড়াচ্ছে। সে খুবই দূরন্ত এবং মিষ্টি। সারাক্ষণই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বায়নাও করছে মায়ের সঙ্গে স্টেজে উঠে গান গাইবে। ২০২১ সালে জোজো তাঁকে দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু সাজানো সংসার থাকতে, মেয়ে-স্বামী–সবাই থাকতে হঠাৎ ৫০ বছর বয়সে এসে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? তাঁর এই সিদ্ধান্ত কি মেনে নিলেন স্বামী-কন্যা?

মহিলারা চাইলেও অনেকক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পুরুষরা চান না অন্য কারও সন্তানকে নিজের করে নিতে। কিন্তু মহিলাদের মধ্যে যেহেতু প্রথম থেকেই ‘যশোধা সত্ত্বা’ থাকে, তাঁদের মায়ের মন, তাই অতি সহজেই বাচ্চাদের আপন করতে পারেন তাঁরা। কেউ বেশি, কেউ কম। জোজোর মধ্যে যশোধা সত্ত্বা তবে থেকে, যখন তাঁর বিয়েও হয়নি। তিনি তখন থেকেই মনে-প্রাণে একটি সন্তানকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। নিলেনও। কিন্তু একটু দেরিতে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জোজো নিজের মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন সেই কথা। বলেছেন, “আজ কিন্তু না, আমার মধ্যে সন্তান দত্তক নেওয়ার ইচ্ছেটা অনেকদিন আগেকার। নিজের জীবন, নিজের কেরিয়ার, নিজের সন্তান–সব সামলে এবার সেই না-পাওয়া পূরণ করলাম। ওকে আইনিভাবে নিজের করে নেওয়ার পরই সকলকে জানিয়েছি যে, আদি এখন আমার সন্তান।”

আর জোজোর পরিবার। তাঁর মেয়ে বাজো, স্বামী মেনে নিয়েছিলেন এই সিদ্ধান্তকে? তাঁর দত্তক নেওয়া পুত্রকে? এই প্রশ্ন শুনে জোজোর কণ্ঠে তখন তৃপ্তি ঝরে পড়ল। তিনি TV9 বাংলাকে বলেছিলেন, “আমি কিন্তু ভীষণ লাকি। আমার পরিবার সবসময় আমার পাশে ছিল এবং আছে। দেখুন আমার মেয়েকে আমি মানুষ করিনি। ও এখন চাকরি করে। নিজের জীবন নিয়ে ও যথেষ্ট সর্টেড। আমার মেয়ে বাজো বড় হয়েছে মাইসোরে আমার শাশুড়িমায়ের কাছে। আমার স্বামী হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ওর উত্তরবঙ্গই ঠিকানা। পড়ে রইলাম আমি। কবে আমার স্বামী বলেছেন, আমার জায়গায় যদি তিনি থাকতেন, এই ৫০ বছর বয়সে এসে এই সিদ্ধান্তটা নিতেই পারতেন না। আর আমার কন্য়া আমার সব সিদ্ধান্তকে সাপোর্ট করে।”

এক্কেবারে দুধের শিশুকে নিজের করে নিয়েছিলেন জোজো। জন্মদায়ী মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন ছেলেটা কিন্তু মায়ের কোলটাই খুঁজত। জোজোর কোলে এসে সারারাত ধরে কাঁদত। রাতে জেগে তাঁকে শান্ত করতেন জোজো। আদির মা হতে কতখানি সময় লেগেছিল জোজোর। গায়িকা বলেছেন, “আমার প্রেশার বেড়ে যেত। সারারাত ধরে কাঁদত আদি। আমি বসে থাকতাম। আধঘণ্টা অন্তর খিদে পেত ওর। সবটা নিজে হাতে করতাম। ওকে আগলানোর দায়িত্ব ছিল আমারই। তারপর ও বুঝল আমিই ওর মা…।”

জোজোর ছেলে আক্ষরিক অর্থে শ্রীকৃষ্ণের মতোই কৃষ্ণাঙ্গ। তাঁর গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষ করেছিল নিন্দুকেরা। তাদের জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার হুংকার দিয়েছিলেন জোজো। জন্ম না দিলেও যে মা হওয়া যায়, তার প্রকৃত উদাহরণ জোজো স্বয়ং। তাঁকে কুর্নিশ জানায় TV9 বাংলা।