জয়া বচ্চনের দাদুর সঙ্গে গোয়ালের একই লাইনে দাঁড়িয়ে গরুর দুধ কিনতেন তাপস পাল, একদিন…

Tapas Pal Secrets: তাপসের বাবা ছিলেন পেশায় এক নামী চিকিৎসক। কিন্তু সেই পরিচয়ে বাঁচতে চাননি তাপস। অভিনয়কে ভালবাসতেন ছোট থেকেই। থিয়েটারে হাতেখড়ি অনেক ছোট বয়সে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে-ঘুরে লেখাপড়া করেছিলেন। দিল্লিতে থাকাকালীন এক দারুণ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন 'দাদার কীর্তি'র কেদারনাথ। সেখানেই...

জয়া বচ্চনের দাদুর সঙ্গে গোয়ালের একই লাইনে দাঁড়িয়ে গরুর দুধ কিনতেন তাপস পাল, একদিন...
তাপস পাল।
Follow Us:
| Updated on: Apr 15, 2024 | 10:32 AM

‘আমি চন্দরনগরের মাল, বাড়িতে ছেলে ঢুকিয়ে দেব…’ কিছু বছর আগে এমনই এক উক্তি করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা-রাজনীতিক তাপস পাল। এবং সেই উক্তির কারণে মারাত্মক কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। বলা ভাল, এই উক্তি তাঁর ধপধপে সাদা জামায় কালো কালীর দাগ ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু জানেন কি, তাপস পালকে যাঁরা কাছ থেকে চেনেন, তাঁর বলেন, অমন সরল-সাধারণ ছেলে নাকি আর হয়ই না। এই বিতর্কিত মন্তব্যটির জন্য নাকি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আক্ষেপ করেছিলেন তাপস। তাঁর স্ত্রী নন্দিনী পালের বক্তব্য, “তাঁকে উস্কানো হয়েছিল…”। এই তাপসের বাবা ছিলেন পেশায় এক নামী চিকিৎসক। কিন্তু সেই পরিচয়ে বাঁচতে চাননি তাপস। অভিনয়কে ভালবাসতেন ছোট থেকেই। থিয়েটারে হাতেখড়ি অনেক ছোট বয়সে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে-ঘুরে লেখাপড়া করেছিলেন। দিল্লিতে থাকাকালীন এক দারুণ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন ‘দাদার কীর্তি’র কেদারনাথ (তরুণ মজুমদার পরিচালিত দাদার কীর্তি ছবিতে কেদারনাথের চরিত্রেই দেখা গিয়েছিল তাপস পালকে)।

ছাত্রজীবনের কয়েক বছর দিল্লির এক স্কুলে পড়তেন তাপস পান। সেই সময় মাসির বাড়িতে থাকতেন তিনি। সেখান থেকেই স্কুলে যাতায়াত। অভিনয়কে ভালবাসতেন। রোজ সকালে উঠে পাশের এক গোয়াল থেকে দুধ আনতে যেতেন কিশোর তাপস। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরই মিলত খাঁটি গরুর দুধ। সেই লাইনে তাঁর সঙ্গে একদিন আলাপ হয়েছিল জয়া ভাদুড়ি, থুড়ি অমিতাভ বচ্চনের স্ত্রী বিখ্যাত অভিনেত্রী এবং রাজনীতিক জয়া বচ্চনের দাদুর। তাপস পাল তাঁর পরিচয় জানতেন, কারণ তিনি মাসির বাড়ির পাড়াতেই থাকতেন। তাঁকে সেই দুধের লাইনে দেখতে পেয়ে তাপস বলেছিলেন, “এ কী দাদু আপনি? জয়াদিদি কেমন আছেন?”

দূরদর্শনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাপস বলেছিলেন সেই ঘটনার কথা। বলেছিলেন, “এর পর থেকে জয়াদিদির দাদুর সঙ্গে প্রায় রোজই আমি গরুর দুধ কেনার লাইনে দাঁড়াতাম। আমার তখন দু’চোখ ভর্তি অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন। জয়াদিদি পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে পড়তেন। তাঁর দাদুর থেকে জানতে চাইতাম সেখানে কেমন পড়াশোনা হয়, জয়াদিদির কতখানি উপকার হচ্ছে, এই সব।”

তারপর দিল্লি ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন তাপস পাল। তরুণ মজুমদারের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। টালিগঞ্জের এনটিওয়ান স্টুডিয়োতে তাঁকে নিয়মিত যাতায়াত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। অডিশন নেননি। তাপসকে দূর থেকে লক্ষ্য় করতেন গুণী পরিচালক। তারপর তাঁকে ‘দাদার কীর্তি’তে কেদারনাথের চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মোড়া ঘুরে যায় তাপসের জীবনের… আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।