মানস মুকুল পালের ‘দীনেশ গুপ্তর বায়োপিক’-এর ছবির শুটিং শুরু এপ্রিলে
মানস বলেন, “অভিজিৎ বিশ্বাসও (‘সহজ পাঠের গপ্পো’-র প্রযোজক) ছিলেন তালিকায়। তবে প্যান্ডেমিকের দরুণ সমস্যায় পড়ে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়। দু’-তিনজন প্রযোজক যোগ দিয়েছেন। দেবাশিস মণ্ডল এবং আরও কিছুজন উৎসাহ দেখিয়েছেন।”
অঞ্জন দত্ত, অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের আগেই বিনয়-বাদল-দীনেশ নিয়ে ছবির শুটিং শুরু করছেন ‘সহজ পাঠের গপ্পো’-খ্যাত পরিচালক মানস মুকুল পাল। ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং (রাইটার্স বিল্ডিং)-এ সাহেব সেজে ঢুকে কর্নেল সিম্পসনকে হত্যা করেন। একই বিষয় নিয়ে অঞ্জন, অনিকেত ও মানস মুকুল—তিন পরিচালকই ছবি পরিচালনা করবে বলে ঠিক করেছিলেন। শেষমেশ সিনেমা বানানোর দৌড়ে এগিয়ে যে পরিচালক, তিনি মানস। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এপ্রিলে শুরু হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত ‘দীনেশ গুপ্তর বায়োপিক’-এর শুটিং।
View this post on Instagram
বন্দি হওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপর নৃশংস অত্যাচার করত সিম্পসন। তাকে হত্যার পর ১৫০ জন ঘিরে ধরে তিন যুবককে। চার ঘন্টা লড়াইয়ের পর বন্দি হন তাঁরা। বাদল এবং বিনয় করেন আত্মহত্যা এবং ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই দীনেশকে দেওয়া হয় ফাঁসি। মানস বলছেন, “এই ছবির ওয়ার্কিং টাইটেল ‘দীনেশ গুপ্তের বায়োপিক’। দেখা যাক শেষমেশ কী হয়।” শোনা যাচ্ছে, কলতায় শুরু হলেও ওপার বাংলাতেও হবে ছবির শুটিং।
View this post on Instagram
মানস দৌড়ে এগিয়ে, তার অন্য়তম সম্ভাব্য় কারণ কারণ তাঁর ছবির স্ক্রিপ্ট লেখা শেষ হয়ে গিয়েছিল। কাস্টিংও ছিল প্রায় শেষের পথেই। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী (হেমচন্দ্র ঘোষ) এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। তবে সৌমিত্রবাবুর মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথের চরিত্রে কে অভিনয় করছেন, তা জানা যায়নি। লকডাউনের আগে সোদপুরে, সুকচর গির্জার সামনে ‘মক শুটিং’ (মহড়া)-ও হয়েছিল। তবে মানসের এই ছবির নাম এখনও ঠিক হয়নি। ছবির এডিটর অনির্বাণ মাইতি বললেন, “শীত এবং গ্রীষ্ম দুই মরশুমে হবে ছবির শুটিং। যদি এপ্রিলে শুটিং শুরু হয়, তাহলে তা শেষ হতে-হতে ডিসেম্বর-জানুয়ারি তো হবেই।”
View this post on Instagram
মানস তাঁর ড্রিম প্রোজেক্ট শুরু করেছেন—এ ব্যাপারে ওই একই বিষয়ে ছবি করতে আগ্রহী অন্য দুই পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অঞ্জন দত্তর ফোন বেজে যায়। অনিকেত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার স্ক্রিপ্ট লেখা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই সময়ে যে সব প্রযোজকের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করছিলাম, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিল দেব। তবে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী চরিত্রদের যা বয়স, তার সঙ্গে দেবকে মানাবে না। সে কারণে পিছিয়ে যায় ছবিটি। আমিও খুঁজছি নতুন মুখ, তাই আর কথা এগোয়নি।” মানসের ছবির শুটিং শুরু হওয়ার খবর শুনে অনিকেতের প্রতিক্রিয়া, “তবে মানস ছবি শুরু করছে তা এখন জানলাম। আমি চাই মানস নিজের মতো ছবিটা করুক। আমার ছবির গল্প একেবারে আলাদা। আমার ছবিটি বিনয়-বাদল-দীনেশের জীবন কিংবা রাইটার্স বিল্ডিং হামলার ঘটনার ঊর্দ্ধে। রাজনীতিতে সহিংস আন্দোলনের বহু দিকের কথা রয়েছে আমার স্ক্রিপ্টে।”
নিজের প্রজেক্ট সম্পর্কে মানসের উত্তর, “কিছু চেনা মুখও থাকছেন ছবিতে। তবে বেশিরভাগই একেবারে নতুন। আপাতত তাঁদের নাম উল্লেখ করতে চাইছি না। যতটুকু বলতে পারি, তা হল মিঠুনদা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় রয়েছেন। ‘মহাগুরু’ বায়োপিকে বিনয়-বাদল-দীনেশের গুরুর চরিত্রে অভিনয় করছেন।” বড় বাজেট ছবির প্রযোজকের তালিকায় ছিল অনেকের নাম তবে কোভিড কারণে পিছু হেটেছেন অনেকে। মানস বলেন, “অভিজিৎ বিশ্বাসও (‘সহজ পাঠের গপ্পো’-র প্রযোজক) ছিলেন তালিকায়। তবে প্যান্ডেমিকের দরুণ সমস্যায় পড়ে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়। দু’-তিনজন প্রযোজক যোগ দিয়েছেন। দেবাশিস মণ্ডল এবং আরও কিছুজন উৎসাহ দেখিয়েছেন।”