Usha Uthup Love Story: ‘তোমার স্ত্রীকে ভালবাসি’, ঊষার প্রথম স্বামীকে সটান বললেন প্রেমিক; তার পরের ঘটনা শিহরণ জাগাবে

Usha Uthup Love Story: তাঁর স্বামী রামোজি ও ব্যন্ডকে নিয়ে সময় মতো পৌঁছে যেতেন যথা স্থানে। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন তাঁর স্বামী রামোজিও। মাঝে মধ্যে উষার খারাপও লাগত, তিনি একা বসে উষার অনুষ্ঠান দেখতেন। তবে একটা সন্ধ্যে পাল্টে দিয়ে যায় সব সমীকরণ।

Usha Uthup Love Story: 'তোমার স্ত্রীকে ভালবাসি', ঊষার প্রথম স্বামীকে সটান বললেন প্রেমিক; তার পরের ঘটনা শিহরণ জাগাবে
Follow Us:
| Updated on: Jul 08, 2024 | 6:55 PM

উষা উত্থুপ। দক্ষিণি কন্যা হয়েও কলকাতাই তাঁর ললাটে ও হৃদয়ে। কলকাতার সঙ্গে তাঁর প্রেম বরাবরই গভীর। কলকাতার ডাক তাই তিনি ফেরাতে পারতেন না। আর সেই কলকাতাই তাঁর জীবনে এনেদিয়েছিল দ্বিতীয় বসন্ত। বিবাহিত উষার জীবনে উঁকি দিয়েছিল প্রেম। আবারও সংসার পেতেছিলেন তিনি। ভেঙেছিলেন প্রথম বিয়ে। একটা সময় কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের নাম করা এক বারে প্রায়শই থাকত তাঁর গান গাওয়ার আমন্ত্রণ। তিনি তাঁর স্বামী রামোজি ও ব্যন্ডকে নিয়ে সময় মতো পৌঁছে যেতেন যথা স্থানে। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন তাঁর স্বামী রামোজিও। মাঝে মধ্যে উষার খারাপও লাগত, তিনি একা বসে উষার অনুষ্ঠান দেখতেন। তবে একটা সন্ধ্যে পাল্টে দিয়ে যায় সব সমীকরণ।

এমনই এক বৃষ্টির সন্ধ্যা। সেই বারে ছিল উষার শো। তিনি প্রথম দেখেন জনি উত্থুপকে। একটা কোণে বসে তিনি উষার গান মন দিয়ে শুনছিলেন। অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে, উষা সেদিন মন প্রাণ দিয়ে পারফর্ম করছিলেন। কিন্তু হঠাৎই দেখেন রামোজির (তাঁর প্রথম স্বামী, সব শোয়ে উষার সঙ্গে থাকতেন) সঙ্গে কথা বলছেন এক ব্যক্তি। যাঁর চোখে এক অন্য মাদকতা। তিনি রামোজির সঙ্গে কথা বলেই চলেছেন। দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন উষা। মনে মনে ভেবেছিলেন, ‘রামোজি কাউকে তো পেলেন, যাঁর সঙ্গে তাঁর স্বামী কিছুটা সময় কাটাতে পারে’। এরপর উষাকে রামোজি বলেছিলেন, ‘পরেরদিন পার্ক স্ট্রিটের সেই বারে জনি তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছেন।’ স্বামীর জন্য বেশ খুশি হন উষা। তিনি সেদিনও শো করতে যাচ্ছিলেন। যথা সময় তৈরি হয়ে পৌঁছে যান বারে। সেখানে শো শেষ হলে তিনি দেখেন রামোজি কোথাও নেই। কিন্তু একা বসে আছেন জনি। তিনি এগিয়ে এসে উষার সঙ্গে আলাপ করে বলেন, ‘আমি রামোজিকে খুঁজে পাচ্ছি না। তবে আপনাকে (গন্তব্যে) ছেড়ে দিতে পারি।’ বৃষ্টির কলকাতা বরাবরই উষার খুব পছন্দের। গাড়িতে উঠে প্রকৃতি উপভোগ করলেও তিনি মোটেও বলেননি একটিও কথা। ১০ মিনিটে পৌঁছে যান হোটেলে।

হোটেল পৌঁছেই বিপত্তি। দরজায় টোকা দিলে বেড়িয়ে আসেন রামো। উষার পাশে জনিকে দেখে সেদিন তিনি মোটেও খুশি হননি। বলে বসেন– ‘অনেক হয়েছে মিস্টার জনি, এবার আপনি যেতে পারেন।’ উষা সেদিন বুঝতে পারেননি তাঁর স্বামীর অস্বস্তি। বুঝতে পারেননি, কেন এভাবে রেগে গিয়ে তিনি মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলেন।

সেদিন সারা রাত অস্বস্তিতে ছিলেন তাঁর স্বামী। প্রশ্ন করেও কোনও উত্তর পাচ্ছিলেন না উষা। বুঝতে পারছিলেন কোনও একটা সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হচ্ছিল না। বহুবার অনুরোধ করার পর মুখ খোলেন তাঁর রামোজি। বলেন, ‘জানো আজ রেস্তোরাঁতে জনি আমায় কী বলেছে? আমি জানি না উষা কী ভাবছে, তবে আমি আপনার স্ত্রীকে ভালবেসে ফেলেছি। তখন রাগে কাঁপছেন রামোজি।’ উষা শান্ত গলায় বললেন, ‘আচ্ছা উনি তোমাকে একথা বলেছেন? আমায় তো কিছু বলেননি।’ তাতেও শান্ত হননি রামোজি। তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘কিন্তু জনি তো এটা আমায় বলেছে। তুমি বলো, তোমার কি কোনও অনুভূতি রয়েছে?’ উষা সমস্ত ভয়কে সরিয়ে বলেন, ‘হম’। এরপর সেই রাত ভয়ানক হয়ে ওঠে। ঘরের সমস্ত কিছু ভাঙতে থাকেন রামোজি। উষা ভয়ে কাঁদতে থাকেন, কাঁপতে থাকেন। একটা সময় কখন ঘুমিয়ে পড়েন, তিনি নিজেও জানেন না।

পাঁচ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবেই এগোচ্ছিল। উষার মনে যাই থাক না কেন, সমাজ কী বলবে, পরিবার কী বলবে এই ভয়ে তিনি সবটাই মেনে নিচ্ছিলেন। যদিও তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে বলেছেন, রামোজি তাঁর গান তাঁর মিউজিককে সব সময় উৎসাহ দিয়েছেন। তবে সেদিনের সেই রাত তাঁদের মধ্যে বিস্তর দূরত্ব তৈরি করে দেয়। তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না, কীভাবে কথা শুরু করবেন। পরের দিন তিনি অনেক কিছু ভাবতে থাকেন। রামোজি কি সত্যি সব কথা তাঁর পরিবারের সকলকে বলে দিয়েছিলেন? কে কী ভাববেন? সবটাই মনের ভিতর চলতে থাকে। তবে উষা একটা সময় ভাবেন, যে যাই ভাবুক না কেন, যা হবে তা ভালর জন্যই হবে। এরপর হঠাৎ তিনি দেখেন যে, রামোজি ও জনির মধ্যে দূরত্ব মিটছে। যদিও অশান্তি বাড়তে থাকে উষার মনে। তিনি ভাবেন, আদপে কী সম্ভব এই বিয়েটাকে টিকিয়ে রাখা?

সাল, ১৯৬৯ আবারও কলকাতার সেই বার থেকে ডাক পান উষা। যদিও সেখানে যেতে চাননি তাঁর স্বামী। তিনি একাই আসেন। সেখানেই প্রতিটা সন্ধ্যায় আবার দেখা হতে থাকে তাঁদের। সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। একটা সময় উষা বুঝতে পারেন, এভাবে নয়, জনি সত্যিই উষার থেকে ভালবাসা পেতে চান। আর তারপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন জনির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার।