আমরা এই সময়ে এসে উল্টো পথে হাঁটছি: রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

বৃহস্পতিবার একটি মামলায় বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ-এর তরফে বিচারপতি পুস্প গনেদিওয়ালা বলেছেন, “কোনও নাবালিকার হাত ধরা ও প্যান্ট খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন পকসো আইনের আওতায় যৌন নিগ্রহ হিসাবে গ্রাহ্য হয় না।” এ প্রসঙ্গে TV9 বাংলার জন্য় কলম ধরলেন আন্তর্জাতিক উন্নয়নকর্মী, অভিনেত্রী-গায়িকা, সর্বোপরি মা রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

আমরা এই সময়ে এসে উল্টো পথে হাঁটছি: রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
মিথিলা। অলংকরণ: অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2021 | 5:27 PM

আমি কিন্তু খুব ছোট থেকে আমার সন্তানকে শিখিয়েছি ‘গুড টাচ’ কী, ‘ব্যাড টাচ’ কী। ওকে বলেছি, অপরিচিত কারও কাছে যাওয়া যাবে না অথবা অপরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলা যাবে না। অপরিচিত মানুষ দেখলে কিংবা কেউ কিছু যদি জানতে চায়, তাহলে অবশ্যই আগে এসে সে যেন মাকে বলে, সেটা শিখিয়েছি। আমার সন্তান বা যে কোনও শিশুর শারীরিক কিংবা মানসিক সীমারেখাকে যাতে সম্মান করা হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। কোনও মানুষ যদি শিশুর শারীরিক ও মানসিক সীমারেখাকে লঘ্নন করে, সেটা যেন শিশু বুঝতে পারে এবং এসে খোলাখুলিভাবে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারে।

যৌন নিগ্রহের সংজ্ঞা রাষ্ট্রসংঘের নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমি একজন আন্তর্জাতিক উন্নয়নকর্মী এবং আমি শিশু-বিকাশ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করি। সেই জায়গা থেকে আমি মনে করি এই ধরনের একটি ঘটনা শিশু অধিকার ও শিশু সুরক্ষার পরিপন্থী। আমরা এই সময়ে এসে উল্টো পথে হাঁটছি। এই রকম উদাহরণ শুধুমাত্র ভারত কেন, পৃথিবীর কোনও জায়গায়ই কাম্য নয়।

চেষ্টা করি যাতে সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে। তবে খুব ছোট থেকেই কিছু জিনিস নিয়ে খোলাখুলি আমি আমার সন্তানের সঙ্গে কথা বলেছি। কারণ আমি মনে করি, সন্তানের সঙ্গে কিছু বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলা জরুরি।

GFX

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে সন্তানকে নিয়ে ভাবনা থাকাটাই স্বাভাবিক। তারপরও মা হিসেবে সবসময় চেষ্টা করে যাই, যেন আমার সন্তানকে একজন আত্মনির্ভরশীল এবং আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে বড় করে তুলতে পারি। তাকে যেন একজন ভাল মানসিকতার, ভাল মনের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারি। সে জন্য তাকে যে ধরনের সাপোর্ট দেওয়া প্রয়োজন, সবই দিই। সবসময় চেষ্টা করি আমার সন্তানকে এমন জায়গা দিতে, যেখানে সে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে যাতে তার ভূমিকা থাকে, সেই চেষ্টাগুলো করি। যতটা সম্ভব ইতিবাচক অনুশাসনের মধ্য়ে রাখার চেষ্টা করি।

আরও পড়ুন, মিথিলা এবার ‘রাজনীতিবিদ’, কিন্তু কোথায়?

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আস্থা এবং সুরক্ষার বন্ধন রাখার চেষ্টা করি, কারণ সেটা খুব জরুরি। সে যেন নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে, সে জন্য কিছু জিনিস খুব ছোট বয়স থেকে মনে হয়েছে আলোচনা করে রাখা জরুরি। নিজের অনুভূতি যেন প্রকাশ করতে পারে। সে যত ছোটই হোক, যেন মনে করে বাবা-মা তার কাছে একটা সুরক্ষার জায়গা, আস্থার জায়গা। সেইটুকু আমি তৈরি করার চেষ্টা করেছি। আমি যেহেতু শিশুদের নিয়ে কাজ করি, এই উপদেশটাই সব বাবা-মায়েদের দিয়ে থাকি।