EXCLUSIVE Ambarish Bhattacharya: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিকে আমি ‘সুনীল’ হতে চাইব: অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য

Ambarish Bhattacharya-Bengali Actor: সূক্ষ্ম অভিনেতাদের তালিকায় তাঁর নাম। ভীষণই চুজ়ি একজন শিল্পী। TV9 বাংলার কাছে একান্তভাবে খুললেন তাঁর মনের ঝাঁপি।

EXCLUSIVE Ambarish Bhattacharya: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিকে আমি 'সুনীল' হতে চাইব: অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য
অম্বরিশের ইচ্ছাপ্রকাশ।
Follow Us:
| Updated on: Feb 24, 2022 | 12:13 PM

লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে ছোটকাকা ‘পটকা’র চরিত্রে অভিনয় করেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য। সেই অম্বরীশ ভট্টাচার্য, যিনি একসময় ‘রাজা-গজা’র গজা হয়ে প্রথম ধারাবাহিকেই সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে চিরকালই ‘চুজ়ি’ অম্বরীশ। ফলে যে-যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সবক’টাই মনে রাখার মতো। ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে পটকার মেয়ে সাঝির বিয়ে হচ্ছে পটকার না-পসন্দ পাত্রের সঙ্গে। পাত্রের পরিবারও না-পসন্দ পটকার। বেশ কয়েকদিন সিরিয়াল থেকেও বেপাত্তা ছিলেন অভিনেতা। কী এমন ঘটেছিল যে ‘খড়কুটো’ থেকে দিন কয়েক উধাও হয়ে গিয়েছিলেন অম্বরীশ? TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন সেই কথা।

পটকার কি শরীর খারাপ হয়েছিল? তাঁর কি মন খারাপ ছিল? কী হয়েছিল, জানিয়েছেন খোদ ‘পটকা’। দার্জিলিংয়ে গিয়েছিলেন অম্বরীশ। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের পরবর্তী ধারাবাহিক ‘গুড্ডি’তে অভিনয় করছেন ‘খড়কুটো’র পটকা। ‘গুড্ডি’র প্রেক্ষাপট পাহাড়। সেখানেও ‘ছোটকাকা’র চরিত্রেই অম্বরীশ। TV9 বাংলাকে তিনি বলেছেন, “লীনাদির ‘গুড্ডি’তেও আমি হিরোর ছোটকাকা।” তা হলে কি ক্রমেই টলিউডের ‘ছোটকাকা’ হয়ে উঠছেন অম্বরীশ? রসিকতা করে অভিনেতার উত্তর, “একটা সময় দেওর ছিলাম। এখন ছোটকাকা হয়েছি। একটা বয়সে বাবা হব। জ্যাঠা হব। তারপর দাদু হব। এটাই নিয়ম। ইন্ডাস্ট্রির এবং জীবনেরও।”

‘গুড্ডি’ ধারাবাহিকে যতটুকু গল্পের শুটিং হয়েছে, সেখানে রয়েছে উত্তরবঙ্গের প্রেক্ষাপট। পাহাড়ি গ্রাম, পাহাড়ি পরিবেশ – সবকিছুই যেন চরিত্র হয়ে উঠেছে। অম্বরীশ জানিয়েছেন, এখন কিছুটা শুটিং হলেও পরেও যেতে হতে পারে চিত্রনাট্যের স্বার্থে। অম্বরীশের কথায়, “লীনাদি আমার কাছে বিস্ময়ের মতো। মহিলা কমিশনের কাজ করেন বলে সারা বাংলা ঘুরে বেড়ান। অনেক জায়গায় তাঁকে যেতে হয়। তার মধ্যেও কীভাবে যে এতগুলো সিরিয়ালের গল্প লেখেন, জানি না। মুম্বইয়ের প্রোডাকশনও সামলান। সবটাই একা হাতে করেন। কেউ সাহায্য করার নেই।”

অনেকেই ভেবেছিলেন ‘খড়কুটো’তে না থাকার কারণ হয়তো অম্বরীশের অসুস্থতা। ধন্দ কাটিয়ে দিয়ে অভিনেতা বলেছেন, “আমি এক্কেবারে ঠিক আছি। আমার এখনও পর্যন্ত একবারও কোভিড হয়নি। আমি সুস্থ আছি। গত পরশুই দার্জিলিং থেকে শুটিং করে ফিরেছি।”

অম্বরীশকে যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে চেনে কিংবা মন দিয়ে তাঁর অভিনয় দেখেছেন, তাঁরা জানেন, তিনি আসলে দারুণ রোম্যান্টিক একজন মানুষ। কিন্তু কোনওদিনও তাঁকে সেভাবে কেউই রোম্যান্টিক চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেননি, অথবা সুযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে অম্বরীশ কিন্তু বেশ আশাবাদী। তিনি মনে করেন, “হবে হয়তো কখনও, কোনও একদিন। যদি কোনও পরিচালকের মনে হয় আমাকে এরকম একটা চরিত্র দেবেন, নিশ্চয়ই জানাবেন। আমিও করতে চাই এই ধরনের চরিত্র।”

ক্রমাগত একই ধরনের দেওর-কাকার চরিত্রে অভিনয় করে কী ক্লান্ত অম্বরীশ? নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন অভিনেতা। বলেছেন, “কত ভাল অভিনেতা কাজ পাচ্ছেন না বলুন তো। এই ধরনের চরিত্রে বারবার কাস্ট হতে আমার আপত্তি একেবারেই নেই। আমি যে কাজ করতে পারছি, এটাই অনেক বড় কথা। আমি অনেক ভাল অভিনেতাকে চিনি যাঁদের হাতে কোনও কাজ নেই। সে দিক থেকে আমি লাকি।”

নিজেকে ভাগ্যবান যেমন মনে করেন, তেমনই ‘চুজ়ি’ অম্বরীশ। তাঁকে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক ছাড়া অন্য কারও ধারাবাহিকে দেখা যায় না। সে ব্যাপারে ছুতমার্গ আছে অম্বরীশের। বলছেন, “লীনাদির মতো কতজন লিখতে পারেন? আমি খুবই চুজ়ি এ ব্যাপারে। ছবিতে কাজ করার ক্ষেত্রে সব পরিচালকের ছবিতেও কাজ করি না। আমার প্রতি যাঁরা জাস্টিস করেন, তাঁদের সঙ্গেই কাজ করেছি বরাবর। মেগার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। আমার কাছে বহু সিরিয়ালের অফার আসে। কিন্তু আমি জানি লীনাদির মতো কেউই আমার চরিত্র আঁকবেন না। পটকা ছোট একটা চরিত্র। কিন্তু দেখুন, সেই ছোট্ট চরিত্রটাও জনপ্রিয় হয়েছে। লীনাদি ছাড়া কেউ আমাকে মাইলেজ দেবেন না।”

অম্বরীশের সঙ্গে বাংলার লেখক ও কবিদের সম্পর্ক নিবিড়। বিখ্যাত কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন অম্বরীশের বাবা অবনী ভট্টাচার্যর প্রাণের বন্ধু। নিত্য যাতায়ত ছিল বাড়িতে। অবনী ভট্টাচার্যর নামেই শক্তি রচনা করেছিলেন সেই বিখ্যাত কবিতা – দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া অবনী বাড়ি আছো?

শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বন্ধুত্বও বহুল প্রচারিত। ছোটবেলা থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্য়ায়কেও কাছ থেকে দেখেছেন অম্বরীশ। তাই অভিনেতা তাঁর মনের ইচ্ছা একান্তভাবে জানিয়েছেন TV9 বাংলাকে। বলেছেন, “কখনও যদি কারও বায়োপিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাই, সেটা যেন হয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়… সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।”

কথা বলার সময় অভিনেতার কণ্ঠ বেয়ে প্রকাশ পাচ্ছিল শিশুসুলভ উচ্ছ্বাস। বলছিলেন, “ওঁর সঙ্গে আমার অনেক মিল আছে। ওঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও চিনতাম। ওঁর ম্যানারিজ়ম সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। বায়োপিক হলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্রেই অভিনয় করব… সুনীলের মধ্য বয়সের সময়টায়। যে সময়টায় তিনি ‘সেই সময়’ লিখছেন। সে সময় সবচেয়ে রঙিন জীবন ছিল সুনীলের। ‘অর্ধেক জীবন’ পড়লে সেটা জানা যায়। সেই জীবনের সময়কে ধরে যদি একটা বায়োপিক তৈরি হয়, আমি তাতে অভিনয় করতে চাইব। ভালই করব বলে আমার মনে হয়।”

গ্র্যাফিক্স: অভীক দেবনাথ

আরও পড়ুন: Exclusive-Sabitri Chattopadhyay at 85: উত্তমদা যখন কোনও দুর্বল মুহূর্তে আমাকে জোর করতেন… আমি চুপ করে থাকতাম…: সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়

আরও পড়ুন: Aparajita Adhyay: জন্মদিনে সামান্থা রুথ প্রভুর ‘ও আন্তাভা’য় দুলে উঠলেন ‘লক্ষ্মী কাকিমা’… দেখুন কীভাবে

আরও পড়ুন: Amitabh Bachchan: ‘বিজয়’ নামে বিজয়ী অমিতাভ, ২০টির ও বেশি ছবিতে অভিনয় ওই নামেই