Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বাড়িতেই চলছে শুটিং, চিঠি পাঠাল ফেডারেশন; পাল্টা জবাব প্রযোজকদের

ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার কয়েকজন প্রযোজককে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বাড়িতেই চলছে শুটিং, চিঠি পাঠাল ফেডারেশন; পাল্টা জবাব প্রযোজকদের
-প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Updated on: May 28, 2021 | 7:54 PM

রাজ্যে ফের বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের মেয়াদ। আরও ১৫ দিন কার্যত লকডাউন। বৃহস্পতিবার তেমনটাই সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধিনিষেধ মানতে হবে আরও ১৫দিন। এই পরিস্থিতিতে আগামী আরও দু-সপ্তাহ বন্ধ সিনেমা, সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজের সমস্ত কাজ। বেশ কিছু ধারাবাহিকের ব্যাঙ্কিং ছিল, তাই এপিসোড টেলিকাস্ট হয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু সিরিয়ালের শুটিং হচ্ছে বাড়ি থেকেই। গত বছরের সেই এক চিত্র ফিরে এসেছে আবারও।

গতবারের মতো এবারও ‘দিন আনি দিন খাই’ জুনিয়র টেকনিশিয়ানরা বাদ পড়েছেন। বাড়িতে শুটিং হওয়ায় আর্টিস্টরাই মেকআপ করছেন, চুল বাঁধছেন, পোশাকের ডিপার্টেন্ট দেখছেন। লাইট, ক্যামেরা (পড়ুন মোবাইল ক্যামেরা) – সবই একা হাতে সামলাচ্ছেন আর্টিস্টরাই। নিজ নিজ বাড়িতে বসে তাঁদের নির্দেশ দিচ্ছেন পরিচালকরা। ফলে হাতপা গুঁটিয়ে বসে আছেন জুনিয়র টেকনিশিয়ানরা। তাঁদের রোজগার এখন সম্পূর্ণ বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগের সুর শোনা গেল জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের কণ্ঠে।

আরও পড়ুন: লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধিতে ধারাবাহিকের শুটিং হবে বাড়ি থেকেই? কী জানাচ্ছেন পরিচালক-প্রযোজকরা

মেকআপ আর্টিস্ট সুপ্রিয় সুর TV9 বাংলাকে বলেন, “এই পরিস্থিতিতে কাকে দোষ দেব ঠিক বুঝতে পারছি না। আমরা তো বিনোদন জগতের সঙ্গে যুক্ত। মানুষকে বিনোদন দেওয়াই আমাদের কাজ। ফলত, কাজ চালিয়ে যেতেই হবে। আমাদের বাদ দিয়ে বিষয়টা হচ্ছে। এটা খুব ভাল বিষয় নয়। এখন তো ভ্যাক্সিনও এসে গিয়েছে। ফলত খুব অল্প লোক নিয়েও কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। ৩ ঘণ্টার জন্য বাজারও খোলা হচ্ছে। সেখানে যা ঘটছে, প্রশানিক স্তরের লোকজন পুরোটাই দেখতে পাচ্ছেন।”

ট্রলির কাজ সামলান উত্তম মণ্ডল। তিনি বলেন, “আমরা এখন পুরো বসে আছি। কাজ করতে না পারলে সমস্যায় পড়ে যাব।” অন্য এক ট্রলিম্যান রাজকুমার দাস বলেন, “যেটা হচ্ছে সেটা ঠিক না। ইন্ডাস্ট্রিতে মাথারা আছেন। তাঁরা নিশ্চয়ই কোনও না কোনও ব্যবস্থা নেবেন। সেই ভিত্তিতেই আমরা চলব।” লাইট ডিপার্টমেন্টের খোকন কুমার দাসের কাছে বিষয়টি সম্পূর্ণ অজানা। তিনি বলেন, “আমি তো জানিই না বাড়িতে আর্টিস্টরা নিজেরা নিজেরা শুটিং করে নিচ্ছেন।”

বিষয়টি নিয়ে Tv9 বাংলা কথা বলে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, “বৃহস্পতিবার আমরা কয়েকজন প্রযোজককে চিঠি পাঠিয়েছি। সেই তালিকায় আছেন সুশান্ত দাস, স্নেহাশিস চক্রবর্তীর মতো প্রযোজকরাও। চিঠিতে জানতে চেয়েছি বাড়ি থেকে শুটিং তাঁরা কেন করছেন এবং কোনও আলোচনা ছাড়া কোন ভিত্তিতে সেটা করছেন। এই চিঠির উত্তর পেলে তবেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”

শুটিং চলছে।

ফেডারেশন চিঠি প্রসঙ্গে TV9 বাংলা কথা বলে প্রযোজক সুশান্ত দাসের সঙ্গে। তাঁর প্রযোজিত ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’ শুট ফ্রম হোম শুরু করে। সুশান্ত আগেই TV9 বাংলাকে বলেন, গতবার লকডাউনে পুরনো এপিসোড টেলিকাস্ট করার ফলে প্রযোজক ও চ্যানেল কর্তৃপক্ষের অনেকের অনেক টাকা ক্ষতি হয়। তাই শুট ফ্রম হোমের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফেডারেশনে চিঠি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চিঠিটা এখনও আমার হাতে আসেনি। জানি না আমার ফোনের গন্ডগোল কিনা। আমার সঙ্গে এই বিষয়ে স্বরূপদার কথাও হয়েছে। এখন মোটামুটি সব প্রযোজকই বাড়িতে থেকে শুটিং করছেন। যে টেকনিশিয়ানরা বাড়িতে বসে আছেন, তাঁদের কীভাবে সাহায্য করা যায়, সেই কথাবার্তাও হয়তো চলছে। শুনছি স্নেহাশিসদা চিঠির উত্তর দিয়েছেন।”

ফেডারেশন থেকে নাকি কড়া মেইল করা হয়েছে কয়েকজন প্রযোজককে। তেমনই দাবি করেছেন প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। চিঠিতে লেখা লুকিয়ে চুরিয়ে শুটিং করছেন প্রযোজকরা। চিঠির ভাষার বিরুদ্ধে উত্তরে দিয়েছেন স্নেহাশিস। Tv9 বাংলাকে তিনি বলেছেন, “আমি আমার চিঠিতে সাফ লিখেছি, ফেডারেশনের চিঠির ভাষা আমার পছন্দ হয়নি। যে ভাষায় আমাকে চিঠিতে লিখেছে, সেটার প্রতিবাদ করেছি। ব্যাপারটা এমনভাবে দাঁড় করানো হচ্ছে, যেন প্রাইভেটে শুটিং করে সকলকে বঞ্চিত করি আমরা। এদিকে একজন টেকনিশিয়ান একটা পোশাক দিতে এসেছিল বলে তাঁকে সাসপেন্ড করেছে ফেডারেশন। এদিকে আর্টিস্টরা তাঁদের ঘরে বসে মোবাইলে শুটিং করছেন। সেটা কতখানি কুত্‍সিত হতে পারে বুঝতে পারছেন। কত খারাপ অডিয়ো হতে পারে। কোনওভাবেই টেলিকাস্ট যোগ্য নয়। সেটাও চ্যানেল মেনে নিয়েছে। কারণ তাঁদের ব্যবসা চালাতে হবে। নইলে হাজার হাজার পরিবার ভেসে যাবে। আমি মূলত চিঠির ভাষার প্রতিবাদ করেছি। কারণ, আমরা যাঁরা ১৬-১৭ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে সততার সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা এটা আশা করি না।”

অন্যদিকে TV9 বাংলার পক্ষ থেকে ফোন করা হলে লীনা গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমার কাছে ফেডারেশনের কোনও চিঠি এসে পৌঁছয়নি। ম্যাজিক মোমেন্টসের কোনও শুট বাড়ি থেকে এখনও পর্যন্ত করা হয়নি। কিন্তু প্রতিটা চ্যানেলের সঙ্গে প্রযোজকদের কিছু কমিটমেন্ট থাকে। তাই এই পরিস্থিতিতে যদি সারাবিশ্বে ওয়ার্ক ফ্রম হোম হতে পারে, তবে শুট ফ্রম হোম কেন নয়?”