Suicide Attempt: ফের টলিউড অভিনেত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা… কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ

Actress Suicide Attempt: আত্মহত্যার চেষ্টা করেও এক পরিচিত ও পুলিশের তৎপরতায় বেঁচে গেলেন সেই অভিনেত্রী।

Suicide Attempt: ফের টলিউড অভিনেত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা... কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2022 | 12:14 PM

কলকাতা: তখন মাঝরাত। হঠাৎই এক অভিনেত্রীর একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুক্রবার মাঝরাতে আতঙ্ক ছড়ায় টালিগঞ্জের টেলিপাড়ায়। ইংরেজিতে লেখা ওই পোস্টের বাংলা তরজমা করলে যা দাঁড়ায়, তা হল: “বেঁচে থাকার জন্য অনেক সংগ্রাম করেছি। আমার পরিবারই সব কিছুর জন্য দায়ী। এখন আমার শান্তি চাই। চির বিদায়…” (“I did a lot of struggles to survive.. My family is the only responsible for everything… Now I want peace… Good bye”)। তারও আগে একটি পোস্ট করেছিলেন বছরের ওই তরুণী অভিনেত্রী। হাতে-লেখা ওই নোট, যা তিনি পোস্ট করেছিলেন, সেটা অবশ্য আর দেখা যাচ্ছে না ফেসবুকে। ফেসবুকের ইংরেজি পোস্ট দেখে এরপর ৩৬ বছরের ওই অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠরা যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁর মোবাইল ফোন সুইচড অফ পাওয়া যায়। এরপর পূর্ব যাদবপুর থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান অভিনেত্রীর এক পরিচিত। পুলিশ নয়াবাদ এলাকায় ওই অভিনেত্রীর বাড়িতে পৌঁছে তাঁর অচৈতন্য দেহ উদ্ধার করে। শনিবার সকালে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই তরুণী। ওই অভিনেত্রী ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ৩৬ বছর বয়সী ওই অভিনেত্রী বর্তমানে নয়াবাদ সংলগ্ন এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি কালনায়। নয়াবাদের একটি কমপ্লেক্সে বাড়ি ভাড়া করে একাই থাকতেন। পাশেই দিদির বাড়ি। ওই অভিনেত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, কেন আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন তিনি? মে মাসে একের পর এক অভিনেত্রী-মডেলের আত্মহত্যার ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়ায় টলিউডে। ১৫ মে গড়ফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ছোটপর্দার অভিনেত্রী ও মডেল পল্লবী দে’র ঝুলন্ত দেহ। ২৫ মে নাগেরবাজারের বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর গত ২৭ মে পাটুলি থেকে উদ্ধার হয় মঞ্জুষা নিয়োগী নামে আরও এক মডেলের ঝুলন্ত দেহ। এরপরই ২৮ মে কসবার বেদিয়াডাঙা সেকেন্ড লেন থেকে উদ্ধার হয় সরস্বতী দাসের দেহ। শুক্রবার রাতে ওই অভিনেত্রীর ফেসবুক পোস্ট দেখেও স্বাভাবিকভাবেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছিল, কোনও ‘চরম’ ঘটনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন না তো তিনি? ঘটনাচক্রে পরিচিত এবং পুলিশের তৎপরতায় ওই অভিনেত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থালে পৌঁছে অনেক ডাকাডাকির পরও কোনও সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে হয় বেহুঁশ অভিনেত্রীকে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রচুর পরিমাণে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন ওই অভিনেত্রী।

তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, গত ২২শে জুন নিজের জন্মদিনে কালনায় পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই অভিনেত্রী। সন্ধেবেলা পার্টির পর বাবার কাছে নতুন একটি ফ্যাশন বুটিক খোলার জন্য লক্ষাধিক টাকা চেয়েছিলেন তিনি। পরদিন সকালে বুটিক সংক্রান্ত কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে ভাইয়ের সঙ্গে বচসা হয় তাঁর। হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়ে অভিনেত্রী ও তাঁর ভাই। পরদিন, ২৩ জুন বিকেলে একটি গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় ফিরে আসেন ওই অভিনেত্রী। পুলিশের দাবি, পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, অভিনেত্রী ‘মুডি’ এবং ‘শর্ট টেম্পারর্ড’। জন্মদিনের দিন কালনার বাড়িতে অশান্তির হওয়ায় অভিনেত্রীর মা তাঁর সঙ্গে কলকাতায় আসতে চেয়েছিলেন। মাকে আসতে বারণ করেছিলেন অভিনেত্রী। শুক্রবার, ২৪ জুন নরেন্দ্রপুরের একটি বাগান বাড়িতে মিউজিক ভিডিয়ো শুট ছিল ছিল ওই অভিনেত্রীর। শুটিং সেটে সকালে পৌঁছে দুপুরের পর কাউকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। এরপরই তিনি নিজের মোবাইল বন্ধ করে দেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁর পরিচিতরা। এই ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর, রাতে ফেসবুকে তাঁর পোস্ট দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ভোররাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুক পোস্টে ওই অভিনেত্রী তাঁর দায়ী করেছেন পরিবারকে। পুলিশ এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে ঠিক কী কারণে জীবন শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।