Bharat Kaul: সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে আত্মঘাতী অভিনেত্রী পল্লবীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল ভরত কলের
Pallavi Dey: ইন্ডাস্ট্রিতে পরপর আত্মহত্যা। কী বললেন সিনিয়র অভিনেতা ভরত কল?
ভরত কল
আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অধিকাংশ ছেলেমেয়েই কলকাতার নয়। পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জায়গা থেকে আসে। বাড়ি থেকে দূরে থাকার ফলে ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে ঢোকার প্রবণতা তৈরি হয়। কোথাও না-কোথাও নিজের বাবা-মাকে পায় না তারা। ফলে সেফটি জ়োন থেকে বেরিয়ে যায়। এই কথাটা কেন বলছি? তার কারণ, পরিবার কিন্তু শক অ্যাবসর্ভার হিসেবে কাজ করতে শুরু করে একটা সময়ে। যাঁরা সব কিছু শুষে নিয়ে বলেন, ‘সব ঠিক হয়ে যাব…’। এইটা যখনই থাকে না, মুশকিল সেখানেই শুরু হয়। যেমন ধরুন, পল্লবীর (আত্মঘাতী বাঙালি সিরিয়াল অভিনেত্রী) মা হাওড়ায় থাকেন। পল্লবী ওর প্রেমিকাকের সঙ্গে লিভ ইন করত। লিভ ইন কিন্তু খুবই পাশ্চাত্যের বিষয়। ছোটবেলায় আমেরিকায় শিশু যেভাবে বড় হয়, আমাদের এখানে তো সেভাবে হয় না। আমরা কিন্তু অনেকেই বাবা-মায়ের উপর ভীষণই নির্ভরশীল। তাঁদের ছায়া সরে গেলে সেই জায়গাটা কোনও বন্ধু পূরণ করতে পারে না।
তাই আমি বাবা-মায়েদের উদ্দেশ্য করে একটাই কথা বলব, সন্তানকে যে ভাবেই হোক আগলে রাখুন। সেই সঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল গ্রুমিং। সেই গ্রুমিংয়ের অংশ হল সন্তানকে মানসিকভাবে শক্ত করে তোলা।
ইন্ডাস্ট্রি নতুন ও অল্প বয়সি ছেলেমেয়েদের বেশি আয় নিয়েও কথা উঠেছে। আমি বলব, পল্লবীর আয় কিন্তু সেরকম আহামরি কিছুই ছিল না। সাধারণ অর্থই উপার্জন করত সে। মুম্বইয়ে যদি কোনও অভিনেতা শুরুতে ১০ হাজার টাকা পান, ৬ মাস পর সেই অর্থ ৫০ হাজার টাকাও হতে পারে। কিন্তু সেই পরিস্থিতি তো বাংলার নয়। আমি জানি, জুলাই মাস থেকে আজ পর্যন্ত পল্লবী ঠিক কত টাকা উপার্জন করেছিল। হয়তো মাথা গরম মানুষ ছিল পল্লবী। রাগের মাথায় কিছু একটা করে ফেলেছে। সেটা তাই বলতে পারব না। কিন্তু বাকিদের আমি সেই ভাবে চিনি না।
পল্লবী খুব ভাল অভিনেত্রী ছিল। পল্লবী, মিশমি, নবনীতা, অনামিকা—ওদের অনেকেরই বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছি। ওদের অনেকেরই কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। আমিও বাবা হিসেবে এখন যাই করি আমার মেয়ের কথা ভেবেই করি। শুটিংয়ে যাওয়ার সময় মেয়ের কথাই মনে হয় আমার।
পল্লবীর বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। লড়াই করছেন তাঁরা। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চান। ১২ মে আমার মেয়ের জন্মদিনে এসেছিল পল্লবী। ১৩ মে আমাকে ফোন করেছিল। সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে আমার সঙ্গে ফোনে কথা হয় ওঁর। জানতে চেয়েছিল, এর পর ও কী করবে। কাজ খুঁজছিল। তখনও একবারও মনে হয়নি ও আত্মহত্যা করতে পারে।