Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

১৮ মাস পর ‘হাউজফুল’ সিনেমা হল; পরিস্থিতি পালটাচ্ছে বড় পর্দার; আশার আলো দেখছেন নির্মাতা ও হল মালিকরা

Cinema Halls: হলে মুক্তি পেয়েছে 'বেল বটম'-এর মতো বলিউডি ছবি। ২৭ অগস্ট শুক্রবার হলেই মুক্তি পাবে 'চেহরে'। আরও অনেক ছবি মুক্তির তালিকায় রয়েছে। বাংলা ছবি 'মুখোশ' ও 'বিনিসুতোয়' মুক্তি পেয়েছে। খুশির খবর, দর্শক হলমুখী হয়েছেন। হলে এসে ছবি দেখছেন তাঁরা। ৫০ শতাংশ দর্শকাসন হলেও হল পূর্ণ। এই নিয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বললেন হল মালিক ও ছবি নির্মাতারা।

১৮ মাস পর 'হাউজফুল' সিনেমা হল; পরিস্থিতি পালটাচ্ছে বড় পর্দার; আশার আলো দেখছেন নির্মাতা ও হল মালিকরা
Follow Us:
| Updated on: Aug 24, 2021 | 11:41 AM

করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। করোনা সংক্রমণ রোধ করার জন্যই গোটা বিশ্বে লকডাউন ঘোষণা হয়। বন্ধ হয় কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, সিনেমা হল… সবকিছুই। অন্য সব ক্ষেত্রের মতো সিনেমা জগতেও ঘনিয়ে আসে করোনার কালো মেঘ। বন্ধ হয় শুটিং, সিনেমা হল। কিন্তু বিনোদন? সেটা কি বন্ধ রাখা গিয়েছে? ঘরবন্দি মানুষ খুঁজেছে সময় কাটানোর নানা বিকল্প। বারবার উঁকি দিয়েছে নেটমাধ্যমে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম মাথাচাড়া দিয়েছে এই সময়। মানুষ ওটিটিতেই খুঁজে নিয়েছে বিনোদনের রসদ। অনেকে মনে করেন, সেই কারণেও হলবিমুখ হয়ে উঠেছেন অধিকাংশ দর্শক। তাতে বিপদ বেড়েছে সিনেমা হলের, সিনেমা-ব্যবসার।

করোনা বিধি মেনে হলে দর্শক

এমনিতেই মাল্টিপ্লেক্সের লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছিল সিঙ্গল স্ক্রিন। করোনা বাড়িয়েছে আরও বিড়ম্বনা। প্রথম ঢেউয়ের লকডাউন শেষে হল খুলল ৫০ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে। একটি করে সিট ছেড়ে বসার ব্যবস্থা। একই পরিবারের সদস্যরা সিনেমা দেখবেন, তা-ও পাশের সিট ছেড়ে! বিষয়টি নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অভিনেতা থেকে পরিচালক – অনেকেই সমর্থন করতে পারেননি। দর্শকেরও পাত্তা নেই। এ দিকে, বড় রিলিজও নেই। বাংলা ছবি কয়েকটি মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভের খাতায় অঙ্ক মেলেনি। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার আগে যে ছবি হলে মুক্তি পেয়েছিল, সেগুলি ফেরানো হয়। হিন্দি ছবির ক্ষেত্রেও একই বিষয় লক্ষ্য করা যায়। বড় রিলিজ নেই। এ দিকে, একের পর এক ছবি ও সিরিজ মুক্তি পায় ওটিটিতে। মানুষ তখনও ওটিটিতেই বুঁদ।

তারপর ১০০ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে ছবি প্রদর্শনের অনুমতি পাওয়া যায়। তাতেও খুব যে দর্শক এলেন, তা কিন্তু নয়। ‘টেনেট’-এর মতো হলিউড ছবিও দর্শক দেখল কম। ঠাণ্ডা ঘরে সিনেমা দেখার ব্যাপারে মানুষের মনে ভয় যায়নি তখনও। অন্যতম কারণ, ভ্যাকসিন আসেনি বাজারে। তবুও ধীরে-ধীরে দর্শক ফিরছিলেন। কিছুটা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ফের সবটা ওলটপালট করে দিল। ‘ব্যাক টু স্কোয়্যার ওয়ান’ – ফের সব আগের মতো। সব বন্ধ!

‘মুখোশ’

সেই পরিস্থিতিও আমরা সামলে উঠেছি। ভ্যাসকিন এসেছে। আমাদের অনেকেরই দুটি ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই মনে অনেকখানি বল সঞ্চয় করেছেন মানুষ। দ্বিতীয় লকডাউনের পর সিনেমা হলও খুলেছে। ৫০ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে হলেও, হলে বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা – ১৮ মাস পর ফের শোনা যাচ্ছে ‘হাউজফুল’ শব্দটি।

হলে মুক্তি পেয়েছে ‘বেল বটম’-এর মতো বলিউডি ছবি। ২৭ অগস্ট শুক্রবার হলেই মুক্তি পাবে ‘চেহরে’। আরও অনেক ছবি মুক্তির তালিকায় রয়েছে। বাংলা ছবি ‘মুখোশ’ ও ‘বিনিসুতোয়’ মুক্তি পেয়েছে। খুশির খবর, দর্শক হলমুখী হয়েছেন। হলে এসে ছবি দেখছেন তাঁরা। ৫০ শতাংশ দর্শকাসন হলেও হল পূর্ণ। এই নিয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বললেন হল মালিক ও ছবি নির্মাতারা।

অতনু ঘোষ; ‘বিনিসুতোয়’ ছবির একটি দৃশ্যে ঋত্বিক চক্রবর্তী ও জয়া এহসান

জাতীয় পুরস্কার জয়ী পরিচালক অতনু ঘোষের ছবি ‘বিনিসুতোয়’ মুক্তি পেয়েছে গত সপ্তাহে। মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গল স্ক্রিনে নয়, কেবল নন্দনে মুক্তি পেয়েছে ছবি। রবিবার রাখির দিন দুপুর তিনটের সময় হাউজফুল হয় শো। অতনু সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, “সুসংবাদ। ‘বিনিসুতোয়’ নন্দনে হাউসফুল। আজ আমি, ঋত্বিক চক্রবর্তী, দেবজ্যোতি মিশ্র নন্দনে থাকব বলে পোস্ট দিয়েছিলাম। যাঁরা শো শেষ হওয়ার পর আমাদের খোঁজ করেছেন, তাঁদের কাছে মাফ চাইছি। তিনজনেই যথাসময়ে পৌঁছই। কিন্তু নন্দনের গেটে জনৈক মুখার্জিবাবুর নেতৃত্বে সিকিউরিটির দল ভিতরে ঢুকে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে নানা নিয়মবিধির প্রসঙ্গ তুলে বাধা দেন। আমরা বেরিয়ে আসতে বাধ্য হই।”

TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় অতনু ঘোষের সঙ্গে। তিনি বলেন, “রবিবারের ছুটিতে দুপুর ৩টের সময় মানুষ এসেছিলেন ছবি দেখতে। শনি ও রবিবারও ৮০-৯০ শতাংশ হল ভর্তি ছিল। নন্দনেই ছবিটি প্রায় ১৫০০ মানুষ দেখে ফেলেছেন। এটা নির্দ্বিধায় আশার আলো দেখাচ্ছে আমাদের। আমার কিন্তু বরাবরই মনে হয়, বড়পর্দার আকর্ষণকে অস্বীকার করা যায় না। তাই এই মুহূর্তে এই চিত্র দেখে অত্যন্ত ভাল লাগছে। ছবির বিষয়ের নতুনত্ব নিয়ে বাহবা পেয়েছি।” হলে দর্শক ছিলেন না। তাই প্রথম সপ্তাহ নন্দনের প্রেক্ষাগৃহেই ছবি মুক্তি করালেন নির্মাতারা। দেখতে চেয়েছিলেন হলে দর্শক আদতেও আসেন কি না। কিন্তু ২-৩দিনের এই ঘটনা হাসি ফুটিয়েছে তাঁদের মুখে। এবার মাল্টিপ্লেক্সে ও সিঙ্গল স্ক্রিনেও ছবি প্রদর্শনের কথা ভাবছেন তাঁরা।

‘বেল বটম’ ছবিতে অক্ষয় কুমার

প্রথম লকডাউনের পর আনলক ফেজ পাঁচে খোলে সিনেমা হল। সে সময় হল মালিকদের হয়ে লড়াই করেছিলেন ইম্পার প্রেসিডেন্ট পিয়া সেনগুপ্ত। দর্শকের হলে আসার বিষয়ে পিয়ার একমাত্র ভরসা ছবির বিষয়। তিনি মনে করেন, ভাল বিষয় পেলেই হলমুখী হবেন দর্শক। TV9 বাংলাকে তিনি সাফ বলেন, “ভাল বিষয়ের ছবি হলে মানুষ নিশ্চয়ই হলে আসবেন, যতই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসুক না কেন। সাম্প্রতিক উদাহরণ ‘বিনিসুতোয়’, ‘মুখোশ’, ‘বেল বটম’-এর মতো ছবি। তার উপর বড় পর্দায় ছবি দেখার মজাই আলাদা। তবে আমি একটা কথা এখানে বলতে চাই, অনেকের তো ভ্যাকসিনের দু’টো ডোজই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলত, ভয়টা অনেকটাই চলে গিয়েছে।”

দক্ষিণ কলকাতার নবীনা সিনেমা হলে চলছে ‘বেল বটম’ ও ‘মুখোশ’। সেখানেও চোখে পড়ছে দর্শকের ভিড়। অনেকে আগে থেকেই টিকিট কেটে নিয়ে গিয়েছেন। হলের কর্মী ও মালিকের মনে এতদিনের জমে থাকা বিষণ্ণতা কেটেছে। হল মালিক নবীন চোখানি TV9 বাংলাকে বলেছেন, “এখন ভ্যাকসিন এসে গিয়েছে। করোনার কেস কম। তার উপর ছবির বিষয়ও ভাল। আমরা এতদিন কষ্ট করে হলেও হল মেইনটেইন করেছিলাম। দর্শকের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। সব দেখে, ছবির বিষয় দেখে দর্শক আসছেন। আমার একটাই কথা মনে হয় এই মুহূর্তে ১০০ শতাংশ দর্শকাসন না হলেও চলবে। প্রেক্ষাগৃহে ভাল ছবি মুক্তি পাক, এটাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।”

নবীনা সিনেমা হল

অন্য দিকে, মেনকা সিনেমা হলের মালিক প্রণব রায়ের বক্তব্য, “১০০ শতাংশ দর্শকাসন না হলে প্রেক্ষাগৃহের সুদিন ফিরবে না। এখনও বহু দর্শক একটি সিট ছেড়ে বসতে হবে শুনে টিকিট না কেটেই চলে যাচ্ছেন।” ‘বেল বটম’ রিলিজ হওয়ার আগে যদিও অক্ষয় কুমার বলেছিলেন, “হলে গিয়ে সিনেমা দেখুন। হলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকুন, নিজেদের দিকে নয়!”

আরও পড়ুনআফগান ক্রিকেটারের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আমার: আরশি খান

আরও পড়ুনজয়ললিতার বেশে আসছেন কঙ্গনা, বড় পর্দায় ‘থালাইভি’ মুক্তির দিন প্রকাশ্যে