Republic Day: ‘বাচ্চাগুলো বড্ড খারাপ আছে’, প্রজাতন্ত্র দিবসে সেলেব অভিভাবকদের একটাই কথা

স্বাধীনতা দিবস, শিক্ষক দিবস, শিশু দিবস, সরস্বতী পুজো... যে যে দিনগুলোয় বাচ্চারা স্কুলে আনন্দ করে, সেই সবই বন্ধ দুটো বছর ধরে। কম সময় নয়।

Republic Day: 'বাচ্চাগুলো বড্ড খারাপ আছে', প্রজাতন্ত্র দিবসে সেলেব অভিভাবকদের একটাই কথা
(বাঁ দিকে) মেয়ে ঐশীর সঙ্গে শ্রীলেখা মিত্র; (ডান দিকে) পরিবারের সঙ্গে বিশ্বনাথ বসু।
Follow Us:
| Updated on: Jan 26, 2022 | 3:36 PM

আজ প্রজাতন্ত্র দিবস। প্রায় প্রত্যেক স্কুলেই আজকের দিনে নানাবিধ অনুষ্ঠান পালিত হয়। পতাকা উত্তোলনে অংশ নেন শিক্ষক-পড়ুয়ারা। কুচকাওয়াজ, নাচ, গান… স্কুল জীবনের স্বর্ণালী স্মৃতি এই দিনগুলি। করোনার কারণে গত দু’বছর সবকিছু বন্ধ। স্বাধীনতা দিবস, শিক্ষক দিবস, শিশু দিবস, সরস্বতী পুজো… যে যে দিনগুলোয় বাচ্চারা স্কুলে আনন্দ করে, সেই সবই বন্ধ দুটো বছর ধরে। কম সময় নয়। TV9 বাংলা যোগাযোগ করে তারকা বাবা-মায়েদের সঙ্গে। কথা বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গেও। সকলের মুখে একই কথা… বাচ্চাগুলো বড্ড খারাপ আছে!

শ্রীলেখা মিত্র (অভিভাবক ও অভিনেত্রী)

আমার মেয়ে মাইয়া (ঐশী) এবার আইসিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ওর এবার দশম শ্রেণি। গত দু’বছর স্কুলে যেতে পারেনি। ও মর্ডার্ন হাই স্কুলে পড়ে। ওদের স্কুলে অনেক অনুষ্ঠান হয়। আর মাইয়া নাচে, গানে অংশগ্রহণ করে। ও ভীষণ স্কুলকে মিস করছে। ভীষণ। মন খারাপ হয় ওর। আমি অভিভাবক হিসেবে দেখি সবটাই। ভাল লাগে না। ১১-১২ ক্লাসও মর্ডার্ন হাইতেই পড়বে। কিন্তু আমার খারাপ লাগে এটা দেখেই ছোটবেলাটা একেবারে নষ্ট হয়ে গেল ওর এবং ওর মতো বাচ্চাদের। আজ যেমন প্রজাতন্ত্র দিবস। কত মজা করতে পারত স্কুল থাকলে। সব মিস! আমাদের মতো ছোটবেলাটা ওদের হল না। এদিকে স্কুল বাদে সবই খোলা।

কন্যা ঐশীর সঙ্গে শ্রীলেখা।

সুপ্রিয় পাঁজা, প্রধান শিক্ষক, দ্যা পার্ক ইন্টারন্যাশনাল

আমাদের দুটো ব়্যালি বেরত। একটি স্বাধীনতা দিবসে। অন্যটি ২৬ জানুয়ারি। গোটা এলাকা আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতাম। বিশাল ব়্যালি হত। যেদিন থেকে হেড মাস্টার হয়েছি, সেদিন থেকেই ক্রমাগত পালন করছি। কোনওদিন থামেনি। এলাকার মানুষরাও সেই ব়্যালির জন্য অপেক্ষায় থাকতেন। ক্লাবের ছেলেরা খুশি হয়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতে লজেন্স-টফি দিতেন। এটুকুই তো জীবনের আনন্দ। স্কুলের স্মৃতি। বিগত দু’ বছর সেসব কিছুই হচ্ছে না। ফলে বাচ্চাগুলোর মনে কষ্ট। ওদের নিয়েই আমাদের জীবন। ওদের হাসি মুখটাই আমাদের প্রাপ্তি। ফলে আমরা শিক্ষকরাও আনন্দ হারিয়েছি।

বিশ্বনাথ বসু (অভিভাবক ও অভিনেতা)

আমার দুটি ছানা। একজন ক্লাস ফাইভে, একজন ক্লাস ওয়ানে। দু’জনেই দোলনা স্কুলে পড়ে। দু’জনেই দু’বছর বাড়িতে অনলাইন ক্লাস করছে। প্রত্যেকেরই মুক্তির জায়গা থাকে। বৃদ্ধ লোকের মুক্তির জায়গা মন্দির। শিক্ষকের মুক্তির জায়গা তাঁর স্কুল। অভিনেতার মুক্তির জায়গা মঞ্চ কিংবা ক্যামেরা। তেমনই সন্তানদেরও মুক্তির জায়গা বিদ্যালয়। আমরা মেলামেশা করি, বাচ্চারাও পাড়ার মধ্যে থাকে। সবই আছে। কিন্তু ওই যে বললাম, মুক্তির জায়গাটাই বন্ধ। ফলে ওরা পরাধীন। সেই জায়গা থেকে আমিও চাই এবার স্কুলটা খুলুক।

দুই পুত্র ও স্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বনাথ বসু।

চন্দন মাইতি, প্রধান শিক্ষক, কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল

আমাদের খুব খারাপ লাগছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের মাথায় এসে করোনার আবহের কারণে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আনতে পারছি না। গত ২৩ জানুয়ারি, নেতাজির জন্মদিনে ছাত্রছাত্রীদের অনুপস্থিতিতেই পতাকা তুলতে হয়েছে। একইভাবে দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসে পড়ুয়াদের বাদ দিয়েই এই কাজ করতে হচ্ছে। এটা বিরল ঘটনা। কোভিডবিধি মেনে যদি কাজ করা যেত তা হলে দেশপ্রেমের শিক্ষা তাঁদের দেওয়া যেত। এমন একটা ব্যবস্থার মধ্যে আমাদের যেতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। মেলায়, মন্দিরে, এমনকী রেস্তরাঁ, সিনেমাহলেও মানুষ যাচ্ছেন… দেশপ্রেমের দিবসগুলোয় যদি পড়ুয়াদের স্কুলে আনা যেত আমরা অনেকটাই সমৃদ্ধ হতে পারতাম।

আরও পড়ুন: Allu Arjun-Pushpa: সর্বভারতীয় মহাতারকার আসনে আল্লু অর্জুন, ‘পুষ্পা’-এ ‘রাইজ়’ অভিনেতার