Kamaleshwar Mukherjee: তাঁর ‘গ্রেফতারি’তে মুখ না খুললেও, কারও বিচার করবেন না কমলেশ্বর

Police detained CPIM leaders: অষ্টমীর দিন পুস্তককাণ্ডে 'গ্রেফতারি'র পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেছেন পরিচালক।

Kamaleshwar Mukherjee: তাঁর 'গ্রেফতারি'তে মুখ না খুললেও, কারও বিচার করবেন না কমলেশ্বর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 05, 2022 | 1:42 PM

অষ্টমীর দিন পুস্তককাণ্ডে ‘গ্রেফতারি’র পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে কমলেশ্বর লিখেছেন, “প্রথমেই জানাই আমি ভালো আছি। তার চেয়েও বড় কথা শক্ত আছি। এবং বহাল তবিয়তে লড়াইয়ে আছি। দ্বিতীয়ত, একা আমি গ্রেফতার হইনি। ছবি-নাটক করে আমার হয়তো একটু নামডাক হয়েছে। তাই অনেকেই আমার কুশল জানতে চেয়েছেন।”

অষ্টমীর দিন রাসবিহারীতে ভারতীয় মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত বইয়ের স্টলে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলেন কমলেম্বর ও আরও অনেকেই। অভিযোগ ওঠে, সপ্তমীর দিন সন্ধ্যায় বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া হয়। স্টলের বিক্রেতাদেরও মারধর করা হয়। অষ্টমীর দিন যে মুহূর্তে কমলেশ্বররা সেখানে প্রতিবাদ করতে যান, তাঁদের পুলিশের গাড়িতে তুলে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সেদিনই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় থানা থেকে। ফেসবুক পোস্টে কমলেশ্বর লিখেছেন, “আমি ছাড়াও বিনাদোষে আটক করা হয়েছিল আরও সাতজনকে। কল্লোলদা, রানাদা, গৌতমদা, মানসবাবু , বাবুলালবাবু, রাজেন্দ্র প্রাসাদ ও শুভদীপ – আমাদের কমরেড -সহযোদ্ধা। তাঁরাও ভাল আছেন। এটা কোনও ব্যক্তিতান্ত্রিক লড়াই নয় – লড়াইটা সমষ্টিগত। মনে রাখবেন, গত এগারো বছরে, এ রাজ্যে বিরোধী দলের শাহিদের সংখ্যা ৩৪১, শাসকদলের অত্যাচারে ঘরছাড়া প্রায় ১৮,০০০ মানুষ আর মিথ্যে মামলায় ফেঁসে আছেন ২০,০০০-এর বেশি লোক। তাঁরা আসলে আক্রান্ত হয়েছেন আমার থেকে অনেক বেশি।”

কমলেশ্বরের গ্রেফতারিতে অনেকেই সরব হয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে পরিচালক লিখেছেন, “আমাদের পাশে অনেক প্রথিতযশা গুণীজন দাঁড়িয়েছেন এবং এই গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করেছেন। আবির, অনীকদা, টোনিদা (অনিরুদ্ধ), সৃজিত, রীনাদি (অপর্ণা সেন), জয়জিৎ, সুদীপ্তা, শ্রীলেখা, কৌশিকদা (গাঙ্গুলী), বাদশা, ঋত্বিক, অনিন্দ্য, মন্দাক্রান্তা, পদ্মনাভ, কৌশিক (সেন), ঋদ্ধি, দেবুদা (দেবজ্যোতি মিশ্র), বিভাষবাবু, দেবেশ, রোজা, অনন্যা (সেনগুপ্ত), ফুয়াদ হালিম, নৌশাদ সিদ্দিকী এবং আরও অনেকে সোচ্চার হয়েছেন। অনেকে হয়তো প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। কিন্তু তাঁরাও ফোন করে বা হোয়াটসঅ্যাপ করে খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং আমাদের লড়াইকে সমর্থন করেছেন। অরুণাচল দত্ত চৌধুরী একটা চমৎকার কবিতাও লিখেছেন। মূলধারার ও সামাজিক জনমাধ্যম যেভাবে এগিয়ে এসে সহযোগিতা করলেন তাও অভূতপূর্ব। এঁদের কাছে আমি ও আমরা একান্তই কৃতজ্ঞ।”

অভিনেতা দেবের সঙ্গে ছবি তৈরি করেছেন কমলেশ্বর। একটি নয় একাধিক। ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘ককপিট’, ‘পাসওয়ার্ড’-এর মতো ছবি কমলেশ্বরের পরিচালনাতেই অভিনয় করেছেন দেব। সেই প্রসঙ্গে কমলেশ্বর তাঁর দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন, “অনেকেই জানতে চেয়েছেন বা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই ভেবে যে, অভিনেতা দেব কিছু বললেন না কেন? দেব এবং রুক্মিণী আমার খুবই বন্ধু। ওঁরাও ঘটনার অনতিবিলম্বে আমার কুশল জানতে চেয়ে একবার নয় একাধিকবার ফোন করেছিলেন।”

এদিকে এই ধরনের ঘটনায় যাঁরা অনেকেই অনেক সময় মুখ খোলেন, তাঁরা কমলেশ্বরের ‘গ্রেফতারি’তে মুখ না খুললেও, তাঁদের বিচার করবেন না, সে কথা ফেসবুক পোস্টেই স্পষ্ট করেছেন পরিচালক। তিনি লিখেছেন, “এরপরও বলি – আরও অনেকে (যাঁরা অন্যত্র দেখা হলে হয়তো আন্তরিকতা প্রদর্শন করেন) তাঁরা আজ কোনও কথা বলতে চাননি। কিন্তু তাঁদের উপর আমার বা আমাদের কোনও ক্ষোভ নেই। সময় মানুষকে গড়ে এবং ভাঙে। একদিন তাঁরা নিশ্চয়ই আমাদের লড়াইয়ে সামিল হবেন – এই আশা রাখি। সিনেমা ব্যবসায় যুক্ত সকলেরই অনিরাপত্তাবোধ থাকে। হারানোর অনেক কিছু থাকে। বিশেষ-বিশেষ সময়ে কেউ সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠেন। আবার কেউ পারেন না। তার মানেই তিনি ভিন্নমত প্রকাশ করেন বা তিনি শত্রু – তা কিন্তু নয়। মনের দরজা খুলে রাখাই ভাল। কখন কে কড়া নাড়ে। অহেতুক judgemental না হয়ে inclusive হওয়ার চেষ্টা করা যাক। সকলকে বিজয়ার আগাম শুভেচ্ছা।”

এরপর TV9 বাংলার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলে কমলেশ্বর বলেন, “আক্রমণ করেছিল তৃণমূলের লোকজন। আমরা তো কিছু করিনি। ফলে আমাদের গ্রেফতার করার তো কোনও গ্রাউন্ড নেই। আমাদের পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এই কারণে, আমরা কেন ওখানে দাঁড়িয়ে আছি, জমায়েত হয়েছে, সেই জন্য।”