Exclusive Rudranil Ghosh: যে সব পুরুষ বউদের লুকিয়ে, ‘ব্যাচেলারহুড’ উদযাপন করতে চায়, তাদের নিয়ে রুদ্রনীলের আড্ডা

Rudranil Ghosh: আমি নিজেকে সিনেদুনিয়ার একজন কর্মী হিসেবেই দেখি। আমাদের যাঁরা দর্শক, তাঁদেরই ভরসায় ও আশীর্বাদে বেড়ে ওঠা বা বেঁচে থাকা।

Exclusive Rudranil Ghosh: যে সব পুরুষ বউদের লুকিয়ে, 'ব্যাচেলারহুড' উদযাপন করতে চায়, তাদের নিয়ে রুদ্রনীলের আড্ডা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 02, 2022 | 3:43 PM

জয়িতা চন্দ্র

তিনি প্যারোডি ম্যান—নানাবিধ রাজনৈতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে একের পর এক প্যারোডি আপলোড করে রাজ্যের শাসক দলকে সমালোচনায় বিদ্ধ করা তাঁর একপ্রকার মজ্জাগত। এই রুদ্রনীল ঘোষ শুধু অভিনেতা নন, তিনি চিত্রনাট্যকারও। ‘বিবাহ অভিযান’ সিরিজ়ের পরবর্তী ছবির চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতাও তিনি (প্রথম ‘বিবাহ অভিযান’-এরও চিত্রনাট্যকারও ছিলেন এই ‘ঘোষবাবু’)। এবারের গল্প লেখার সময়ই তাঁর মনে হচ্ছিল, মূলধারার ছবির কখনও মৃত্যু ঘটবে না। যতদিন ধরে মানুষের ভাললাগা, স্বপ্ন বেঁচে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত মূলধারার ছবির গুরুত্ব থাকবে বলেই বিশ্বাস রুদ্রনীলের। ‘ঘোষবাবু’র মতে, দক্ষিণের বাণিজ্য়িক ছবিগুলো যেমন সারা ভারতে (প্যান-ইন্ডিয়া) ব্যবসা করছে। পাশাপাশি সিরিয়াস ছবিও হচ্ছে দক্ষিণে। TV9 বাংলার সঙ্গে ‘বিবাহ অভিযান ২’ নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় ছবির চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা রুদ্রনীল। 

গল্পের পটভূমিতে স্বামী-স্ত্রীর চেনা বচসা কি এবারও থাকছে?

‘বিবাহ অভিযান’-এর গল্পের মূলই হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েন। অর্থাৎ বিয়ের পর একে-অপরকে যে কীভাবে মানাবে, এই নিয়ে যে স্বামীদের এক অভিযান চলে… একটু ব্যাচেলার জীবন কাটাব, কিন্তু বউদেরও খুশি রেখে হতে হবে সেসব। সো-কল্ড বউয়েরা স্বামীদের এই ব্যাচেলার লাইফের বিরুদ্ধে। কোথায় কার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে, ক’টায় বাড়ি ফিরছে (বিয়ের পর একটু দায়িত্ববোধ চলে আসে), খোঁজ রাখাটা চলতে থাকে। যেহেতু পুরুষেরা একটু নিজের মতো করে আড্ডা-গল্প করতে চায়, ফলে এই যে বউদের লুকিয়ে, সংসার বাঁচিয়ে, আমার যে ব্যাচেলারহুড অনুভূতি একটু-একটু রয়ে গিয়েছে—এটা বাঁচিয়ে রাখার যে অভিযান, সেটাই বিবাহ অভিযান।

এবার গল্পে প্লটে নতুন কী?

প্রথম সাফল্য পাওয়ার পর আমরা অনেকদিন ধরেই ভাবছি যে, এটা করব। সেই মতো পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে কোভিডের জন্য থামতে হয়। তবে এই থামার একটা অবদান রয়েছে। বেশকিছু ঘটনাকে আমরা গল্পে ঢোকাতে পেরেছি, যেগুলো বাস্তবে, সমাজে স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। তাঁদের মধ্যে নতুন-নতুন করে সমস্যাগুলো, নানা আবদার-ইচ্ছে বেড়ে উঠেছে… সমাজ তো পাল্টায়, সঙ্গে সম্পর্কের ধরনও পাল্টায়। সেটাই একটু ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবারের গল্পে। এবার গল্পে বিদেশ এসেছে। তবে কমার্শিয়াল ছবি মানেই বিদেশ, এমনটা নয় মোটেই। ছবি দেখলেই বোঝা যাবে, বাঙালি কখন বিদেশ যায় এবং কী-কী কারণে বিদেশ যায়, সেটাকে ঘিরেই এই সংযোজন। আর এই গল্পে এমন একটা কারণ রয়েছে, সেটার সঙ্গে সবাই রিলেট করতে পারবে। ভীষণ মজাও পাবেন।

কাস্টে এবার নতুন মুখ সৌরভ…

আগের ছবিতে যে কাস্টিং ছিল, তার সঙ্গে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র গল্পে আনা হয়েছে। যেমন সৌরভ দাস এবারের ‘বিবাহ অভিযান’-টিমে যুক্ত হয়েছেন। এটা ভীষণ ইন্টেরেস্টিং একটা চরিত্র। এবার পরিচালনায় রয়েছেন শমীক হালদার, এটা তাঁর প্রথম পরিচালনা (শমীক হালহার জনপ্রিয় সিনেমাটোগ্রাফার)। ফলে ছবিতে যে বেশ ভাল-ভাল ফ্রেম দর্শকেরা পাবেন, সেটাও আমাদের কাছে বাড়তি পাওয়া।

গণশার মতো এবার কি গল্পের তুরুপের তাস সৌরভ?

এই রে, এটা বলে দেব? হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলে তো মুশকিল। তাহলে সিনেমাহলে যাওয়ার যে মজা রয়েছে, সেগুলোই তো হারিয়ে যাবে। তার থেকে বরং দর্শক ছবিটা দেখুক এবং নিজেরা এসেই আবিষ্কার করুক। তবে হ্যাঁ, আগের থেকে এটায় আরও অনেক উপকরণ যোগ হয়েছে।

‘বিবাহ অভিযান’-এর গল্প লেখার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কোন বিষয়টা মাথায় রাখেন?

দেখুন, আমাদের কাজটাই হচ্ছে যে, এই নিত্য অশান্তি, ঝামেলা, কাজের চাপ, সংসারের চাপ, তার মাঝখানে একটু ভাল থাকার উপাদান খুঁজে নেওয়া… যে কোনও জায়গা থেকেই। ফলে সেই ক্ষেত্রেই ‘বিবাহ অভিযান’ গোটা পরিবারের মানুষকে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করবে। আট থেকে আশি, এই চাপের বাজারে সে যেন একটু মন হালকা করে হাসতে পারে, ভাল থাকতে পারে। সেই চেষ্টাতেই বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে গল্প। আমি লেখক হিসেবে এইটুকু বলতে পারি যে, একটাও কোনও দৃশ্য এই সিনেমায় নেই, যেটা দেখে দর্শকের হাসতে-হাসতে পেটে ব্যাথা হবে না।

এর বাইরে নতুন কোনও গল্প লেখার কাজ কি চলছে? 

এই প্ল্যানিং নিয়ে আর কিছুদিন পরেই বসব আমরা। বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রয়েছে। কী হচ্ছে জানেন তো, আমি নিজেকে সিনেদুনিয়ার একজন কর্মী হিসেবেই দেখি। আমাদের যাঁরা দর্শক, তাঁদেরই ভরসায় ও আশীর্বাদে বেড়ে ওঠা বা বেঁচে থাকা। ফলে আমরা যে-যে, যেটা-যেটা জানি, সেটাকে নিজের জীবিকা হিসেবে বাঁচিয়ে রেখে দেওয়া, যাতে সবাই মিলে এক সঙ্গে বেঁচে থাঁকতে পারি এবং নিজের প্রিয় কাজটা করে যাওয়ার সুযোগ পাই। সেই সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনোরঞ্জনটাকেও অটুট রাখতে পারি। এইটুকুই আমাদের দায়িত্ব। তবে একটা বিষয়, যা আজকের যুগে দাঁড়িয়ে ভীষণ গুরুতপূর্ণ, ‘আমি’ শব্দটা সিনেমার ক্ষেত্রে ক্রমেই ‘আমরা’য় বদলে যাচ্ছে। দশজন মিলে একটা জিনিসকে তৈরি করতে হচ্ছে। যেহেতু দর্শকের চাহিদা বাড়ছে, বিভিন্ন ধরনের দর্শকের পাতে তাঁদের ভাল লাগার জিনিস তুলে দেওয়ার জন্য আমাদের এক্সচেঞ্জটা করতে হচ্ছে অনেকের সঙ্গেই। ফলে টিম হসেবে একটা কিছু তৈরি করার চেষ্টা করছি। আর আমি নয়, আমরা, তাই বেশ কিছু ভাল বিষয়কে নিয়ে নিয়ত আলোচনা করেই চলেছি।