Koushani Mukherjee: ‘আসলে মুকুল রায় কত বড় রাজনীতিবিদ, সেই ধারণাই ছিল না’

মুকুল রায়ের বিপরীতে প্রায় কয়েক হাজার ভোটে পরাজয় হয় কৌশানীর। মে মাসে ফল ঘোষণার পর এই সাত মাস লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন তিনি। কেন? মন খারাপ হয়েছিল? ভোটের রেজাল্ট পেয়ে প্রথম কী মনে হয়েছিল?

Koushani Mukherjee: 'আসলে মুকুল রায় কত বড় রাজনীতিবিদ, সেই ধারণাই ছিল না'
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2021 | 6:50 PM
উৎসা হাজরা: ২৪ জানুয়ারি, ২০২১। শিরোনাম একটাই। ঘাসফুলে নাম লেখালেন অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। সঙ্গী হবু শাশুড়ি মা পিয়া সেনগুপ্ত। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় ১০ মাস। নির্বাচনের ফলাফলও অজানা নয়। মুকুল রায়ের বিপরীতে প্রায় কয়েক হাজার ভোটে পরাজয় হয় কৌশানীর। মে মাসে ফল ঘোষণার পর এই সাত মাস লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন তিনি। কেন? মন খারাপ হয়েছিল? ভোটের রেজাল্ট পেয়ে প্রথম কী মনে হয়েছিল? দলে পদ না পাওয়ায় আক্ষেপ হয়? TV9 বাংলার মুখোমুখি কৌশানী মুখোপাধ্যায়।

২০২১ কি কৌশানীকে অনেকটা পরিণত করে দিল?

হ্যাঁ, ব্যক্তিগতভাবে তা অনেকটাই বলতে পারেন। ২০২১ যখন শুরু হয়, তখন একটা বড় লড়াইয়ের অংশ হয়েছি এই বয়সে। সেই লড়াই এখনও বাংলার মানুষ ভোলেননি। আর কিছুদিন আগেই আমার জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষকে হারিয়েছি। অবশ্যই এখন অনেকটাই পরিণত।

জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির বদল ঘটল?

হ্যাঁ, লকডাউন গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি। কখনও-কখনও অর্থনেতিক চাপও এসেছে। তখন মনে হত এটাই আমার সবথেকে বড় সমস্যা। নির্বাচনে হেরে যাওয়া মনে হয়েছে জীবনের অনেক বড় ধাক্কা। কিন্তু বছরের শেষে আমার সঙ্গে যা ঘটল, এর থেকে বড় ক্ষতি মনে হয় আমার জীবনে আর কিছু হতে পারতো না। জীবনকে দেখার ভঙ্গিমাই বদলে গিয়েছে।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন, মন খারাপ থেকে?

আমি পোড় খাওয়া কোনও রাজনীতিবিদ নই। ৬ বছরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে যেরকম পরিচিতি তৈরি করেছি তার ভিত্তিতেই লড়াই করেছি। করোনা পরিস্থিতিতেও মানুষদের কাছে টেনে নিয়েছি। স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে। এত কিছুর পর হেরে গেলে তো দুঃখ লাগবেই। ডিপ্রেশন বলব না, অনেক ভারী শব্দ। আজ পর্যন্ত নিজেকে সেই পরিস্থিতিতে যেতে দিইনি। হ্যাঁ, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম, সত্যি। সেই সময় দাঁড়িয়ে ওখানকার বিধায়কও যাননি। আমি গিয়েছিলাম। কমিউনিটি কিচেন চালিয়েছিলাম। মানুষের পাশে দাঁড়াব বলে কথা দিয়েছিলাম, সেই কথা রাখারই চেষ্টা করে গিয়েছি।

প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে TV9 বাংলার পক্ষ থেকে কৌশানীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ তৃণমূলে যোগ দিয়ে আপনি বলেছিলেন, “এই দলটাকে আমি আদর্শ মনে করি। দিদির সৈনিক হয়ে দাঁড়াক আরও অনেকে।” নিজেকে ‘দিদির সৈনিক’ হিসেবে দেখে কী-কী কাজ করতে চান?

উত্তরে কৌশানী বলেছিলেন, “আমি কী-কী কাজ করতে চাই, সেটা পুরোটাই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের উপর। আমি কী পাব, কতটা জায়গা পাব—সবটাই ভবিষ্যতের উপর নির্ভর করছে। মেয়েরা যাতে যথাযথ সম্মান পায়, বাচ্চারা যেন সমাজে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে… বিশেষত নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা-যা করার, আমি করতে চাই।”

অভিনেত্রী না নেত্রী?

অভিনেত্রী কৌশানী চুলবুলি, বাবলি। নেত্রী কৌশানী অনেকটা বেশি ম্য়াচিওর। আর এখন তো মা অনেকটা বেশি পরিণত করে দিয়ে চলে গিয়েছেন। একদমই আলাদা আমাকে দেখবে।

দলে এখন গুরুত্বপূর্ণ পদে সায়নী-সায়ন্তিকা। খারাপ লেগেছে?

হ্যাঁ, অবশ্যই। খুব খারাপ লেগেছে। আমার কাছের মানুষদেরও বলেছি। কেন দল এটা করল! কিন্তু দিদি দলের সুপ্রিমো। সব সময় আমার পাশে থেকেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন। তাই তাঁর সিদ্ধান্তর উপর আমার ভরসা আছে।

প্রসঙ্গত, আগের সাক্ষাৎকারে রাজনীতিতে তাঁর আদর্শ কে জানতে চাওয়া হলে অভিনেত্রী উত্তর দেনঃ “দিদি ছাড়া আর কারও কথা আমি বলতেই পারব না। প্রথম ছবির রেশ ধরেই বলি ‘পারব না আমি ছাড়তে তোমাকে দিদি’। মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে এই একজন মহিলাই এভাবে গোটা রাজ্য পরিচালনা করছেন।”

মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে?

না, ওঁর সঙ্গে কথা হয়নি। তবে শুনেছি উনি বলেছেন আমি খুব ভাল মেয়ে। অনেক প্রশংসা করেছেন। আসলে মুকুল রায় কত বড় রাজনীতিবিদ, সেই ধারণাই ছিল না। আমি শুধু আমার কাজ করে গিয়েছি।

বনি এখন জীবনের বড় পিলার
প্রথমে আমার বাবা, তারপর বনি। সব করছি। মজা, আড্ডা। কিন্তু তবু সবটাই যেন ফাঁকা…