Rahul Banerjee: ১২ ঘণ্টা পর মৃত্যু, চরিত্রের যন্ত্রণা বুঝতে টানা ১৫ দিন চুপ ছিলেন রাহুল
Untold Story: 'ফোনে ওর সঙ্গে কথা বলতেই হত। বাকিটা যেটুকু না বললেই নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে একেবারে সরিয়ে নিয়েছিলাম।'
শেষ ভোর, শেষ সকাল, শেষ বিকেল, শেষ রাত, পলকে পলকে জীবনের শেষ মুহূর্ত কাটিয়ে মৃত্যুপথযাত্রী…। কখনও ক্ষমা, কখনও কান্না, কখনও আবার আক্ষেপ, চরিত্রের পরতে-পরতে জড়িয়ে থাকা এমনই যন্ত্রণাকে ছুঁতে কঠিন পরিশ্রম করেছিলেন অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাঁসির সাজা শুনতে হয়েছিল চরিত্রকে, শেষ ১২ ঘণ্টা সেই ব্যক্তির জীবন যন্ত্রণার ছবিটাই তুলে ধরেছিলেন অভিনেতা। কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন রাহুল! প্রথম যে উত্তর ঠোঁটে উঠে আসে, তা হল টানা ১৫ দিন মুখে কুলুপ। না, কেবল চুপ থাকাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও নিজেকে গুঁটিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
টিভি ৯-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘এই চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করতে বেশ কিছুটা সময় পেয়েছিলাম। আর হাতে সেই সময় তেমন কোনও কাজ ছিলও না। এটা একটা ছোট টিম নিয়ে, অতন্ত কম বাজেটে বানানো একটা স্টুডেন্ট ফিল্ম বলা যেতে পারে। সেটার জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটা অনেক বেশি সহজ হয়েছিল। আমার চরিত্রটা করতে গিয়ে একটা অদ্ভুত বিষয় মাথায় আসে। আমার যে চরিত্রটা সে এমন এক অপরাধ করেছে, তাকে আর বাচিয়ে রাখা যায় না। মানে ভারতের সরকারের আর কিছুই করার ছিল না তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ছাড়া। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমি ওর দুঃখটা বুঝতে পারছিলাম, যন্ত্রণা ছুঁতে পারছিলাম। কিন্তু এটাও ঠিক, যে একটা মানুষ যদি কেবলমাত্র তাকে বিয়ে করতে দেওয়া হচ্ছে না তার প্রেমিকার সঙ্গে, সেই রাগে ৭ জনকে খুন করতে পারে, তবে তা ভয়ঙ্কর। তারপরও যদি তাকে বাচিয়ে রাখা যায়, ভবিষ্যতে সে আরও অনেক অপরাধ করতে পারে। সেই অবস্থা থেকেও চরিত্রটা আমায় ভাবাচ্ছিল’।
সেই কারণেই কী নিজেকে তৈরি করতে এতটা কঠিন হতে হয়েছিল! চরিত্রকে বুঝতে ও আত্মস্থ করতেই কী টানা ১৫ দিন মুখ বন্ধ! রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, না, তিনি একেবারে কথা না বলে ছিলেন, এটা ভুল। কারণ সেই তালিকাতে কখনই ছেলে সহজকে ফেলা যায় না। ‘ফোনে ওর সঙ্গে কথা বলতেই হত। বাকিটা যেটুকু না বললেই নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে একেবারে সরিয়ে নিয়েছিলাম।’
১০ জুন মুক্তি পেয়েছে ছবি মৃত্যুপথযাত্রী। পর্দায় সেভাবে সারা ফেলতে পারেনি, এই নিয়ে মুখ খুলে অভিনেতা জানান, ‘অতন্ত ভালবেসে পরিশ্রম করে এই ছবিটা বানিয়েছি। এটা একটা পরীক্ষামুলক ছবি। আমি বা পরিচালক কেউই আশা করিনি যে ছবিটা বিশাল জনপ্রিয় হবে। কিন্তু যেটুকু আশা করে ছিলাম যে দর্শক দেখবে অন্তত, সেটা দেখলে ভাললাগত আমাদের। ঠিক আছে, প্রতিটা ছবির নির্দিষ্ট একটা আয়ু থাকে। কিছু ছবি পর্দায় ভাল চলে না, পরবর্তীতে ওটিটি-তে ভাল চলে, সেটাও হতে পারে।’
নিজেকে বারে বারে ভেঙে গড়েছেন রাহুল। নানা ধাঁচের চরিত্রেই তিনি অনায়াসে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন নিজেকে। তবে তাঁর কাছে পছন্দের চরিত্রের রঙ ঠিক কেমন! রাহুলের কথায়- ‘আমার কাছে অভিনয় করতে পারার সুযোগটাই অনেক, সে যেকোনও ধরনের চরিত্রের ক্ষেত্রেই হোক। সেটা ছোট এমনটা (মৃত্যুপথযাত্রী) ছবিও হতে পারে, আবার বিগ বাজেট বিগ ফ্রেমও হতে পারে, যেখানে আমি একটি অংশে অভিনয় করলাম। দুটোই আমার ভাললাগার। কোনও কিছুতেই কোনও আপত্তি নেই।’