Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আজকে কেন এত কথা বলা হচ্ছে?’, ‘বিস্মৃত’ নায়ক লোকেশ ঘোষ

Lokesh Ghosh: ৭০০টি সিঙ্গল স্ক্রিনের মধ্যে ৬৬০টিতে যে দিন থেকে তালা পড়া শুরু হল এবং তাঁর গুরু পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, স্বপন সাহারা একে-একে চলে গেলেন, ঠিক তবে থেকেই লোকেশও হারিয়ে গেলেন। এখন কী করছেন লোকেশ? তাঁকে কেন দেখা যায় না হালফিলের বাংলা ছবিতে? কেন তাঁকে ডাকে না বড় প্রযোজনা সংস্থা? লোকেশ ঘোষের সঙ্গেই কথা বলে জানল TV9 বাংলা।

'প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আজকে কেন এত কথা বলা হচ্ছে?', 'বিস্মৃত' নায়ক লোকেশ ঘোষ
লোকেশ ঘোষ।
Follow Us:
| Updated on: Jan 26, 2024 | 11:26 AM

বাংলার বাণিজ্যিক ছবির পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী তাঁকে প্রথম ব্রেক দিয়েছিলেন। ‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে। সেই প্রথম নায়ক হিসেবে রুপোলি পর্দায় আগমন অভিনেতা লোকেশ ঘোষের। দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস থেকে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার সেন্ট জ়েভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক হন লোকেশ। একটু কম্পিউটার নিয়ে লেখাপড়া করেই স্ট্রাগল করতে শুরু করলেন টলিপাড়ায়। বাণিজ্যিক ছবি ছাড়া আর কোনও ধরনের ছবিতে দেখা যায়নি তাঁকে। গ্রামের দর্শকের উন্মাদনা, তাঁদের ভালবাসা পাওয়ার নেশা তৈরি হয়েছিল লোকেশের। কিন্তু বাংলায় ৭০০টি সিঙ্গল স্ক্রিনের মধ্যে ৬৬০টিতে যে দিন থেকে তালা পড়া শুরু হল এবং তাঁর গুরু পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, স্বপন সাহারা একে-একে চলে গেলেন, ঠিক তবে থেকেই লোকেশও হারিয়ে গেলেন। এখন কী করছেন লোকেশ? তাঁকে কেন দেখা যায় না হালফিলের বাংলা ছবিতে? কেন তাঁকে ডাকে না বড় প্রযোজনা সংস্থা? লোকেশ ঘোষের সঙ্গেই কথা বলে জানল TV9 বাংলা।

প্রশ্ন: আপনাকে আর বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতে দেখা যায় না কেন?

লোকেশ: আসলে আমি কিছুদিন হল বিরতি নিয়েছি। কিছুদিন আগেই ‘দাদাভাই’ নামের একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে আমার। পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর সহকারী দিগ্বিজয় চৌধুরীর তৈরি সেই ছবি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমার নিজের প্রযোজনায় ছবির শুটিং শুরু হবে।

প্রশ্ন: বাংলায় বাণিজ্যিক ছবির ঢেউটা খানিক খাটো হয়েছে বলে মনে হয় কি আপনার…?

লোকেশ: কোনও ঢেউ ওঠেনি। সব ঢেউ শেষ। বাংলা ছবির ঢেউ শেষ। বাংলা ছবিতে এখন কেবলই ভাটা। এবার বলুন, কী বলবেন…

প্রশ্ন: আপনি তো একসময় অঞ্জন চৌধুরীর প্রিয় নায়কদের একজন ছিলেন…

লোকেশ: হ্যাঁ, আলবাত ছিলাম। এখনও আমাকে গ্রামে গেলে লোকে অঞ্জন চৌধুরীর ছবির সংলাপই বলতে বলে। সেই সমস্ত সংলাপ বলে অনেকেই অনেক বড় হয়েছেন। কিন্তু সেটা স্বীকার করতে চান না। আমি করি… যতটুকু করে খাচ্ছি, ততটুকু ওই লোকটার জন্যই।

প্রশ্ন: আপনি বললেন বাংলা ছবির ঢেউ শেষ। অনেকেই তাই হয়তো বাংলা ছবির পাশে এসে দাঁড়াতে বলেন, আপনি বলবেন একই কথা?

লোকেশ: (খানিক থেমে) হয়তো বলব। জানি না। এমন কথা আমাদের বলতে হয়নি আগে। ভাল ছবি হলে দর্শক এমনিতেই এসে দেখবেন। কিন্তু সেটা তৈরি হচ্ছে না বুঝলেন…

প্রশ্ন: আপনারই সময়কার নায়কদের নিয়ে এখনও কাজ করছে ইন্ডাস্ট্রি। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী… আপনাকে কেন কোনও বড় ব্যানার থেকে ডাকা হয় না?

লোকেশ: আমাকে কেউ যোগাযোগ করেন না। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সৃজিত মুখোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালক। এসভিএফ, সুরিন্দরের মতো ব্যানার থেকে আমাকে ডাকে না। আমি গ্রামবাংলায় চলা ছবিতে কাজ করতে বেশি পছন্দ করি। যাঁরা এই মুহূর্তে বাংলা ছবির ধ্বজা ধরে আছেন, তাঁদের কোনও ছবি উলুবেড়িয়া পার করে চলে কি না, জিজ্ঞেস করুন তো? আমার গুরু অঞ্জন চৌধুরীর ছবি কলকাতাতেও চলত, আবার উলুবেড়িয়া, বাগনান, মেচেদা, কালনা, কাটোয়া, বর্ধমান… সর্বত্রই রমরমিয়ে চলত। আসলে আমাকে হয়তো এই নামজাদারা কেউ অভিনতাই মনে করেন না। তাই নিচ্ছেন না।

প্রশ্ন: আপনারও তো ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘দোসর’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করতে ইচ্ছা করতে পারে…

লোকেশ: পারে হয়তো। অপর্ণা সেনের ছবিতে কাজ করার খুব ইচ্ছা আমার। তিনি কিন্তু আমাকে ডেকেওছিলেন। কিন্তু সেই কাজটা আর হল না। ঋতুদার (ঋতুপর্ণ ঘোষ) সঙ্গে একটা ছবিতে কাজ করতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে হল না, তিনি মারা গেলেন। এ ছাড়া কৌশিক, সৃজিতরা ডাকেন না। হয়তো আমাকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখেন না তাঁরা। হয়তো আমার নামও জানেন না। ওদের মতো অত শিক্ষিতও নই আমি। তবে হ্যাঁ, স্বপন সাহা, অঞ্জন চৌধুরীরা বেঁচে থাকলে আমি তাঁদের হয়ে কাজ করতাম। তাঁরাও ডাকতেন আমাকে।

প্রশ্ন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের উপর যে হঠাৎ-হঠাৎ অভিযোগের আঙুল তোলা হয়, তিনি স্বজনপোষণ করেন… আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

লোকেশ: খুব ভাল সম্পর্ক আমার সঙ্গে প্রসেনজিতের। আপনি আমাকে একটা কথা বলুন, আমি যদি এক নম্বর জায়গায় থাকি, আমি তো আমার জায়গাটাকে ধরে রাখব। আমি তো কষ্ট করে সেই এক নম্বর জায়গাটায় পৌঁছেছি। তাই সেখানে থাকার জন্য যা-যা করণীয়, তাই-তাই আমি করব। আমার আর একটা কথাও বলার আছে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আজকে কেন এত কথা বলা হচ্ছে, যখন তিনি বাণিজ্যিক ছবি করছেন না…? কেন, তখন ভয় ছিল মনে? যদি কাঠি করে দেন…