চাপের মুখে গীতা দে-কে সরিয়ে সুপ্রিয়াকে কাস্ট, ‘নীতা’র চরিত্র নিয়ে কোন সমস্যায় পড়েন ঋত্বিক ঘটক?
দর্শকদের ভালবাসা সম্মানের পরও তাঁর জীবনের বড় আক্ষেপ, ঋত্বিক ঘটকের 'মেঘে ঢাকা তারা ' নীতার চরিত্র তাঁর করা হল না। কেন হল না? সেই নিয়ে তিনি শেষ জীবনে মুখ খুলছিলেন একটি সাক্ষাৎকারে। কী বলে ছিলেন গীতা দে?

অভিনেত্রী গীতা দে, তাঁর অসামান্য অভিনয়ের জন্য বাংলা সিনেমার দর্শকের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। শিশু শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করে প্রায় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন। তবে তাঁর জীবনের আক্ষেপ, সুপ্রিয়া দেবীর জন্য ‘নীতা’র চরিত্র হাতছাড়া হয় তাঁর। ১৯৪৪ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেছিলেন। শিশু অভিনেত্রী হিসাবে প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর চলচ্চিত্র ছিল ‘আহুতি’ (১৯৪১)। তিনি ২০০ থেকেও বেশি বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র এবং ২০০০ বেশি মঞ্চ নাট্যে অভিনয় করেছিলেন। তিনি সত্যজিৎ রায় , ঋত্বিক ঘটক ছাড়াও বহু পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেন। ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘সুবর্ণরেখা’, ‘কোমল গান্ধার’, কতো আজানারে, তিন কন্যার মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন; যার মধ্যে ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিদ্যা বালান এবং সঞ্জয় দত্ত অভিনীত ‘পরিণীতা’ উল্লেখযোগ্য। গীতা দে দীর্ঘদিন যাবৎ অল ইন্ডিয়া রেডিও প্রচারিত শ্রুতি নাটক অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় ড. এপিজে আবদুল কালামের কাছ থেকে তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি সম্মান অর্জন করেছেন।
দর্শকদের ভালবাসা সম্মানের পরও তাঁর জীবনের বড় আক্ষেপ, ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা ‘ নীতার চরিত্র তাঁর করা হল না। কেন হল না? সেই নিয়ে তিনি শেষ জীবনে মুখ খুলছিলেন একটি সাক্ষাৎকারে। কী বলে ছিলেন গীতা দে? তাঁর কথায়, “‘মেঘে ঢাকা তারা ‘ ছবিতে পাঠ করার প্রস্তাব এল, নীতার চরিত্রে। যদিও আমার কপালে নীতার চরিত্র করা হল না। কারণ সেই সময় ডিস্ট্রিবিউশন করছিল ‘জনতা’ ডিস্ট্রিবিউশন। ডিস্ট্রিবিউটারের নাম মহেন্দ্র বাবু, তাঁদের কারণেই পাঠটা হাতছাড়া হল। ঋত্বিক দার মুখেই শোনা, সুপ্রিয়াকে নিতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। এরপর আমাকে বললেন, মা-এর চরিত্র করতে পারবো কি না? আমার তখন মাত্র ২৮ বছর বয়স, আমি বললাম পারবো, শিখলাম বাঙাল ভাষা। তবে নীতার চরিত্র হাতছাড়া হল।”





