Dengue in children: পেঁপে পাতার রস, কিউই খাইয়ে আপনি বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে পারবেন না, শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার

megha

megha |

Updated on: Oct 15, 2022 | 4:47 PM

Dengue Outbreak in West Bengal: প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি বাচ্চারাও আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গিতে। এমনকী এক বছরের শিশুরাও ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে ভর্তি রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে।

Dengue in children: পেঁপে পাতার রস, কিউই খাইয়ে আপনি বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে পারবেন না, শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার

পুজোর আগে থেকেই রাজ্যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গি। পুজো মিটতে এবার মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়ে গেল। চলতি সপ্তাহে নতুন করে রাজ্যে ৫৮৮০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এ বছর জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ৭৭৩। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি বাচ্চারাও আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গিতে। এমনকী এক বছরের শিশুরাও ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে ভর্তি রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে। উপসর্গ প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই। বাচ্চাদের মধ্যেও জ্বর দেখা দিচ্ছে। জ্বরের সঙ্গে রয়েছে গা-হাত-পায়ে তীব্র ব্যথা। এই অবস্থায় কী পদক্ষেপ করবেন মা-বাবারা, কীভাবে খেয়াল রাখবেন সন্তানের? TV9 বাংলার মাধ্যমে পরামর্শ দিলেন শহরের বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার

বাচ্চাদের মধ্যে ডেঙ্গির উপসর্গগুলো কী-কী?

জ্বর। জ্বরের সঙ্গে গা-হাত-পায়ে তীব্র ব্যথা। এছাড়াও বাচ্চাদের মধ্যে পেটে ব্যথা, ইউরিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এছাড়াও বাচ্চা ঝিমিয়ে যেতে পারে। গায়ে চাকা-চাকা ব্লিডিং স্পট অর্থাৎ ব়্যাশ বেরোতে পারে। দাঁত কিংবা নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। অনেক সময় ডেঙ্গির কারণে রোগী ভুলভাল কথা বলতে পারে। যেহেতু বাচ্চারা অনেক সময় ঠিকভাবে তাদের শারীরিক অবস্থার কথা প্রকাশ করতে পারে না, তাই মা-বাবাকেই এই উপসর্গগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সময়ে-সময়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। যদি সন্তানের শরীরে সামান্যতমও অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। ডেঙ্গির সমস্যা জ্বর ছাড়ার সময় এবং জ্বর কমে যাওয়ার পর বেশি তৈরি হয়। জ্বর কমে যাওয়ার ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা খুব সঙ্কটজনক অবস্থা। বাচ্চার যদি প্রস্রাব ঠিকঠাক হতে থাকে এবং বাচ্চা যদি খেলাধুলো করে অর্থাৎ অ্যাক্টিভ থাকে, নেতিয়ে না-পড়ে তাহলে তুলনামূলকভাবে চিন্তা কম। কিন্তু জ্বর কমে যাওয়ার পরও যদি বাচ্চা ক্লান্ত থাকে, সে যদি শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে, তাহলে সতর্ক হওয়া জরুরি।

ব্লাড প্যারামিটার পরীক্ষা করার সময় হিমোগ্লোবিন, পিসিভি (Packed Cell Volume) এবং প্লেটলেট যাচাই করা হয়। এর সঙ্গে ইউরিনের আউটপুট। হিমোগ্লোবিন ও পিসিভি-এর মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং প্লেটলেটের মাত্রা কমে যাওয়া ডেঙ্গির আক্রান্তের জন্য ভাল নয়। এমনকী চিকিৎসা চলাকালীন যদি দেখা যায় রোগীর হিমোগ্লোবিন হঠাৎ করে কমতে শুরু করেছে, তখন বুঝতে হবে রোগীর ইন্টার্নাল ব্লিডিং (শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনও অংশে রক্তপাত) হচ্ছে। এগুলোর ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হয় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।

জ্বর আসার কত দিনের মধ্যে ডেঙ্গি পরীক্ষা করা জরুরি?

জ্বর আসার প্রথম দিনই এনএস-১ পরীক্ষা করা উচিত। এতে চিকিৎসায় দেরি হয় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রথম দিন এনএস-১ পরীক্ষায় ডেঙ্গির রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। জ্বরের চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিনে আবার ডেঙ্গি পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এই কারণে জ্বর আসার চার দিনের মাথায় ডেঙ্গি আইজিএম পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইজিজি পরীক্ষা করাও প্রয়োজন পড়ে। দ্বিতীয়বার ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে আইজিজি পরীক্ষা ভীষণ জরুরি।

বাড়িতে ডেঙ্গি রোগীর কীভাবে যত্ন নিতে হবে?

ডেঙ্গির একটাই চিকিৎসা: জল। প্রচুর পরিমাণে জল পান করাতে হবে। যাতে সঠিকভাবে বাচ্চার প্রস্রাব হয় (ইউরিন পাস) হয়, সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আর বাচ্চা যেন যথাযথ বিশ্রাম নেয়, সেই দিকেও নজর দিতে হবে। যেহেতু জ্বর ছাড়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টা খুব ক্রিটিকাল, তাই উপরোক্ত উপসর্গগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পেঁপে পাতার রস, কিউই—এই ধরনের ঘরোয়া টোটকা ডেঙ্গির চিকিৎসায় কতটা কার্যকর?

পেঁপে পাতার রস, কিউই ডেঙ্গির চিকিৎসায় এই ধরনের ঘরোয়া টোটকার বিজ্ঞানসম্মত কোনও যুক্তি নেই। মানুষ পেঁপে পাতার রস, কিউইয়ের সাহায্য নেয় প্লেটলেট বাড়ানোর জন্য। কিন্তু এখানে বুঝতে হবে যে, প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়িয়ে ডেঙ্গির বিপদ কাটানো যায় না। প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়লেই ডেঙ্গি থেকে সুস্থ হওয়া যায় না। কারণ ডেঙ্গিতে শুধু প্লেটলেটের সংখ্যা কমে না, পাশাপাশি প্লেটলেটের কার্যকারিতার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয় এবং শিরা থেকে জল বেরোতে শুরু করে। এছাড়াও ডেঙ্গিতে লিভারের এনজাইম ও প্যানক্রিয়াসের এনজাইমের উপর প্রভাব পড়ে। এসব ক্ষেত্রে পেঁপে পাতার রস, কিউই খাইয়ে আপনি বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে পারবেন না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সেই অনুযায়ী বাচ্চার যত্ন নিন। এখানেও আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা জরুরি। জ্বর কমছে না বলে বেশিরভাগ বাবা-মা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের সাহায্য নেন। ডেঙ্গির ক্ষেত্রে এই ধরনের ওষুধ নৈব নৈব চ। এতে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীর আরও ক্ষতি হতে পারে।

Latest News Updates

Related Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla