Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mental Health Of Kids: মাত্রাতিরিক্ত ‘স্ক্রিন টাইম’ ভয়ঙ্কর! কীভাবে ইলেকট্রনিক ডিভাইস মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে বাচ্চাদের, জানুন

দীর্ঘসময় ভিস্যুয়াল ডিভাইসের পর্দার সামনে কাটালে তা নানা পথে বাচ্চার সার্বিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। শিশু থেকে শুরু করে বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীর মনে মারাত্মক কুপ্রভাব ফেলে মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম। দেখা যাক সেগুলি কী কী—

Mental Health Of Kids: মাত্রাতিরিক্ত 'স্ক্রিন টাইম' ভয়ঙ্কর! কীভাবে ইলেকট্রনিক ডিভাইস মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে বাচ্চাদের, জানুন
ছবি সৌজন্যে হেল্থলাইন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 10, 2022 | 8:37 AM

একজন ব্যক্তি সারাদিনে মোবাইল, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ট্যাবলেটের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় ব্যয় করেন। এইভাবে বিভিন্ন ‘চাক্ষুষ করার যন্ত্র’-এর দিকে দৃষ্টিপাত করে আমরা যতখানি সময় ব্যয় করি, সেই সময়ের যোগফলকে বলে ‘স্ক্রিন টাইম’। কখনও খেয়াল করেছেন ঠিক কতখানি সময় আমরা শুধু এমন ‘ভিস্যুয়াল ডিভাইস’-এর পর্দার দিকে তাকিয়েই খরচ করি? অথচ জানলে অবাক হবেন, ঠিক যেমন বেশি খেলে মানুষ স্থূল হতে থাকেন, পড়েন নানা রোগভোগে, তেমনই ‘স্ক্রিন টাইম’-এরও একটা সঠিক মাত্রা রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের দফারফা করে ছাড়ে। সমস্যা হল, অনলাইন ক্লাস, টিউশন এবং বিনোদনজনিত কারণে বাচ্চারা অনেকটা সময় কাটিয়ে দিচ্ছে কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেটের স্ক্রিনের সামনে।

স্ক্রিন টাইমও দুই ধরনের হয়— স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাস্থ্যকর। কীভাবে ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে এই বিষয়গুলি। স্কুলের হোমওয়ার্ক করা, বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কৃৎকৌশল শেখা, বন্ধু ও আত্মীয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলা স্বাস্থ্যকর অভ্যেসের মধ্যেই পড়ে। তবে হিংসাত্মক ভিডিও দেখা বা গেম খেলা, বয়সের অনুপাতে অনুপযুক্ত ওয়েবসাইটে ঢুঁ দেওয়া কিন্তু অস্বাস্থ্যকর স্ক্রিন টাইমের অন্তর্গত। ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস-এর গাইডলাইন অনুসারে, ২ বছরের কমবয়সি বাচ্চাকে কোনওভাবেই মোবাইল, টেলিভিশন, ট্যাবলেট বা অন্য ধরনের ভিস্যুয়াল ডিভাইসের পর্দার সামনে আনা চলবে না। ২ থেকে ৫ বছর বয়সি বাচ্চাদের ১ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম দেওয়া যাবে না। ৫ বছর বয়সের অধিক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইম দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে হবে। সেইসঙ্গে স্কুলে যাওয়া, খেলাধূলা, শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার, সৃজনশীল কাজ করতে উৎসাহ জুগিয়ে যেতে হবে। পরিবারের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এভাবেই একটি বাচ্চার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটার সম্ভাবনা বাড়ে।

মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম ভয়ঙ্কর

দীর্ঘসময় ভিস্যুয়াল ডিভাইসের পর্দার সামনে কাটালে তা নানা পথে বাচ্চার সার্বিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। শিশু থেকে শুরু করে বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীর মনে মারাত্মক কুপ্রভাব ফেলে মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম। দেখা যাক সেগুলি কী কী—

• বাচ্চার মুখে বুলি ফুটতে দেরি হয়। • বাচ্চার মধ্যে দেখা যায় অস্থিরতা, আগ্রাসী ও হিংসাত্মক মনোভাব। ধৈর্য কমে যায়। আবার, হারিয়ে যাওয়ার ভয়, পরিত্যক্ত হওয়ার ভয়ও কাজ করে শিশুমনে। • সাইবার বুলিং-এরও শিকার হয় কিছু কিছু বাচ্চা। • পর্নোগ্রাফি দেখার অভ্যেসের কারণে বিপরীত লিঙ্গ সম্পর্কে তৈরি হয় ভ্রান্ত ধারণা। • ইন্টারনেটে ভুল সাইটে ঢোকার কারণে নিজেকে যন্ত্রণা দেওয়া, ড্রাগ-এ আসক্ত হওয়া, অকারণ উদ্বেগে ভোগা এবং অবসাদেও আক্রান্ত হয় বহু বাচ্চা। • মানসিক স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতিসাধন ছাড়াও শারীরিক স্বাস্থ্যেও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। বাচ্চার স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে তার শরীরচর্চায় অনীহা ও সেই কারণে স্থূলত্বের সমস্যায় ভোগা, ঘুমের ঘাটতি, চোখে চাপ পড়া, ঘাড়-পিঠ-কবজিতে ব্যথা হওয়ার উপসর্গও দেখা যায়। সবচাইতে বড় কথা বাচ্চা অসামাজিক পড়ে পড়ে। অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় সমস্যা হয়। পড়াশোনাতে পড়ে খারাপ প্রভাব। রেজাল্ট খারাপ হতে থাকে। • বাচ্চার সার্বিক বিকাশের জন্য সামাজিক মেলামেশা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। মজার ব্যাপার হল, ফেসবুক, হোয়্যাটস অ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউবের মতো ভার্চুয়াল সামাজিক মাধ্যমগুলি তৈরি হয়েছিল বন্ধু সংখ্যা বৃদ্ধি ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আরও বেশি অন্তরঙ্গতা তৈরির উদ্দেশ্যে। আধুনিক সময়ে পাবজি, ক্ল্যাশ অ্যান্ড ক্লানস-এর মতো ভিডিও গেমগুলিও একাধিক কমবয়সিদের মধ্যে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছে। কারণ ভিডিও গেমগুলি খেলার সময় দরকার হয় টিম-এর। টিম প্লেয়ারদের মধ্যে প্রতিমুহূর্তে কথোপকথনের মাধ্যমে পৌঁছতে হয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। এই যদি হয় সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিক, তাহলে অন্যদিকটির প্রভাব কিন্তু যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া ব্যক্তিটি সচ্চরিত্র নাকি দুশ্চরিত্র তা বোঝা সম্ভব নয়। অসৎ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপের প্রভাবে বাচ্চার ব্যবহারে দেখা যেতে পারে ভয়ঙ্কর নেতিবাচক পরিবর্তন। • বাচ্চা শিখতে পারে ‘সেক্সটিং’ বা যৌন ইঙ্গিতবাহী বার্তা প্রদান। এমনকী সাইবারবুলিং বা সামাজিক মাধ্যমে কলের সামনে কোনও ব্যক্তি বা বাচ্চাকে অপদস্থ করার প্রক্রিয়া এখন খুবই পরিচিত সমস্যা। এই ধরনের ঘটনা মনের উপর মারাত্মক কুপ্রভাব ফেলে। বাচ্চা ভুগতে শুরু করে ভয়ঙ্কর উদ্বেগে। • সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি বা স্টেটাস পোস্ট করার পরে সেখানে কতগুলি ‘লাইক’ অথবা ‘কমেন্ট’ পড়ল তার ভিত্তিতে বাচ্চা নিজের মূল্য বা গুরুত্ব বিচার করতে শুরু করে। • প্রাপ্তবয়স্কদের সাইটে ঢোকা, সেখানে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য (ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, বাড়ির ঠিকানা, বেড়াতে যাওয়ার তথ্য) ও ছবি শেয়ার করার মতো ঘটনা ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনতে পারে। করণীয় কী? • বাচ্চা কোন সাইটে ঢুকতে পারে আর কোন সাইটে ঢুকতে পারে না সেই সম্পর্কে তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। • অনলাইন ম্যানার্স শেখানো খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্ট ও পিন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা যে অনলাইনে দেওয়া যায় না সেই সম্পর্কে বাচ্চাকে জানাতে হবে ধৈর্য ধরে। • সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা অন্যের কোনও ছবি বা লেখা চুরি করা অন্যায় তা তাকে জানাতে হবে। • সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে একা একা কখনওই দেখা করা উচিত নয় তা তাকে বোঝাতে হবে। • ডিজিটাল হাইজিন খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নির্দিষ্ট স্ক্রিন টাইম বজায় রাখার সঙ্গে দেহ ভঙ্গিমা বজায় রেখে ভিস্যুয়াল ডিভাইস ব্যবহার জরুরি। এছাড়া কিছ সময় অন্তর স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়ার অভ্যেসও শেখাতে হবে। এর ফলে চোখে চাপ পড়বে কম। • অভিভাবকরা অতি অবশ্যই বাচ্চা স্ক্রিনে কী দেখছে আর দেখছে না তার দিকে নজর রাখুন। বিশেষ করে ইন্টারনেট-এর কোন কোন সাইটে বাচ্চা ঢুকছে তা পর্যবেক্ষণ করুন নিয়মিত। • প্রত্যেক বাচ্চার কাছে তার বাবা-মা হল প্রথম রোল মডেল। তাই নিজেরাও স্ক্রিন টাইম কমান। বাচ্চার সামনে বই পড়া অভ্যেস করুন। সৃজনশীল কাজ করুন। আপনাকে দেখেই বাচ্চা শিখবে।

মনে রাখবেন

বাচ্চাকে সবসময় বকে কাজ হয় না। বরং তাকে বোঝাতে হবে যে বাবা-মা তাকে খুবই ভালোবাসে এবং যে কোনও সময় তাকে সাহায্য করার জন্য তারা তৈরি।

আরও পড়ুন: Thyroid Health: কম বয়সিদের মধ্যে বাড়ছে থাইরয়েডের অসুখ! নিয়ন্ত্রণের জন্য চাই এই ৫ ‘সুপারফুড’