Premature Greying Hair: কম বয়সেই পেকে যাচ্ছে চুল? কী করলে সমস্যা আটকাবে,জানাচ্ছেন ডার্মাটলেজিস্টরা

প্রতিদিন অন্তত ৩৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে এক্সারসাইজ করা দরকার। শরীরচর্চায় আমাদের শরীরের নানা কার্যকলাপ সঠিকভাবে পরিচালিত হয়। ফলে চুলও দ্রুত পাকে না। শরীর থাকে ফিট ও তারুণ্যে পূর্ণ।

Premature Greying Hair: কম বয়সেই পেকে যাচ্ছে চুল? কী করলে সমস্যা আটকাবে,জানাচ্ছেন ডার্মাটলেজিস্টরা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 11, 2022 | 7:36 AM

মাথায় একঢাল কালো চুল সকলেরই অহঙ্কারের বিষয়। হঠাৎ সেই কালো চুল সাদা হতে শুরু করলে ছোট হার্ট অ্যাটাক হওয়াও আশ্চর্য নয়। কারণ সাদা চুল বার্ধক্যের ইঙ্গিত দেয়। এমনিতে বয়সবৃদ্ধির সঙ্গে সকলেরই মাথার চুল পাকতে শুরু করে। তবে সময়ের অনেক আগে, অর্থাৎ কম বয়সেই চুল পাকতে শুরু করলে তা চিন্তার বিষয়। আমাদের হেয়ার ফলিকলে থাকে বিশেষ রঞ্জক পদার্থ যার নাম মেলানিন। আমাদের চুলের রঙের পিছনে দায়ী থাকে মেলানিন। মেলানিনের আধিক্যের কারণেই চুল কালো দেখায়। মেলানিন নামে রঞ্জক পদার্থটি থাকে মেলানোসাইট কোষে। বয়স বাড়ার সঙ্গে হেয়ার ফলিকলের সংখ্যা কমতে থাকে। মেলানোসাইট মেলানিন তৈরি বন্ধ করে দেয়। ফলে চুল ধূসর হতে শুরু করে।

এমনকী অল্পবয়সে চুল পাকার প্রথম কারণও কিন্তু হেয়ার ফলিকলে মেলানিনের মাত্রা হ্রাস পাওয়া। অবশ্য বংশে অকালে চুল পাকার সমস্যা থাকলে, শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে, ধূমপানের অভ্যেস থাকলেও কম বয়সে চুল পাকতে পারে। ডার্মাটোলজিস্টরা জানাচ্ছেন, ভারতীয়দের মধ্যে ২৫ বয়সের আগেই চুল পাকতে শুর করলে তাকে প্রিম্যাচিওর গ্রেয়িং বা অকালে চুল পাকার সমস্যা বলা যেতে পারে। সুতরাং ২৫ বছরের আগেই মাথার চুল সাদা হতে শুরু করলে তা প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেমন ধরনের ব্যবস্থা? রইল টিপস—

ঘাটতি মেটান

ডার্মাটোলজিস্টরা জানাচ্ছেন, আয়রন, ভিটামিন বি১২, ক্যালশিয়াম, কপার এবং ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে সময়ের আগেই হানা দিতে পারে পাকা চুলের সমস্যা। ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা তাই ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের উপর জোর দিচ্ছেন। একইসঙ্গে পর্যাপ্তমাত্রায় জলপানও করা দরকার বলে তাঁরা মত প্রকাশ করছেন। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, খুব ভালো হয় কপার বা তামার পাত্রে জল রেখে খেতে পারলে।

এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভিটামিন বি১২ এবং ডি৩-এর ঘাটতির সঙ্গে চুল পাকার সম্পর্ক রয়েছে। ওই একই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সঠিক মাত্রায় ভিটামিনগুলি গ্রহণ করতে পারলে চুল পাকার সমস্যাও দূরে চলে যায়। সুতরাং অল্পবয়সেই চুল সাদা হতে শুরু করলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ভিটামিন ও খনিজের সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে। সেইসঙ্গে দরকার প্রতিদিন নিয়ম মেনে পাতে শাকসব্জির মাত্রা বাড়ানো ও একটি করে মরশুমি ফল খাওয়া।

মানসিক চাপ

মারাত্মক মানসিক চাপ আমাদের শরীরে বাড়িয়ে তোলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। শরীরে তৈরি হয় বেশিমাত্রায় ফ্রি র্যাশডিকেলস বা ক্ষতিকর পদার্থ। এই ধরনের ফ্রি র্যাটডিকেলস মেলানোসাইট কোষের ক্ষতি করে। এই কারণেও হতে পারে চুল পাকার সমস্যা। এমনকী চুল পাতলা হওয়ার সমস্যাও দেখা যেতে পারে।

ধূমপান

ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপের মতোই ধূমপানও শরীরে ফ্রি র্যামডিকেলস-এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। বেড়ে যায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। ফলে চুলে পাক ধরার মতো সমস্যাও প্রকট হয়। একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ধূমপান করেন না এমন ব্যক্তির তুলনায় ধূমপায়ীর ‘প্রিম্যাচিওর গ্রেয়িং’-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে দ্বিগুণ।

অতিবেগুনি রশ্মি

সূর্যের রশ্মিতে থাকে আলট্রাভায়োলেট রে বা অতিবেগুনি রশ্মি। তাই দীর্ঘসময় রোদে কাটাতে হলে তা ত্বকের পক্ষে হানিকারক হয়ে ওঠে। একইরকমভাবে রোদ ক্ষতি করে মাথার চুলেরও। পরিবর্তন হতে থাকে চুলের রঙের। তাই দিনের বেলা বাড়ির বাইরে বেরনোর সময় মাথায় বেঁধে নিন স্কার্ফ কিংবা ক্যাপ। ব্যবহার করুন ছাতা।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জরুরি

ডায়েটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ খাদ্যগুলি যোগ করলে তা আখেরে চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। কারণ শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র্যাংডিকেলসকে ধ্বংস করার ক্ষমতা ধরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে চুল পাকার সমস্যাও রোধ করতে পারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ত্বক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন রোজকার ডায়েটে শাকসব্জি ও ফল রাখলেই সেখান থেকেই আমাদের প্রতিদিনের চাহিদা অনুসারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এছাড়া খুব ভালো হয় মাথা ধোয়ার সময় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ইযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারলে।

থাইরয়েড টেস্ট

অকালে চুল সাদা হওয়ার পিছনে দায়ী থাকতে পারে থাইরয়েডের সমস্যা। বিশেষ করে বহু মহিলাই হাইপোথাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন ও সময়ে রোগ ধরা পড়ে না। ফলে চুল পাকতে শুরু করে। সবরকম যত্ন নেওয়ার পরেও চুল পাকার সমস্যা না কমলে অবশ্যই একজন ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ এবং এন্ডোক্রিনোলজিস্টের পরামর্শ নিন।

ডায়েট ও এক্সারসাইজ

অতিরিক্ত ভাজাভুজি, পোড়া মাংস, টিনজাত খাদ্য, কোল্ডড্রিংকস, প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য খাওয়া বন্ধ করুন। জোর দিন সনাতন খাদ্য অর্থাৎ শাকসব্জি, ডাল, ভাত ও রুটি খাওয়ার উপর। খান একটি করে ফল। এছাড়া পর্যাপ্ত মাত্রায় প্রোটিনের জোগান বজায় রাখতে প্রতিদিন পাতে রাখুন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সয়াবিন। চুলের স্বাস্থ্যের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি উপাদান।

প্রতিদিন অন্তত ৩৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে এক্সারসাইজ করা দরকার। শরীরচর্চায় আমাদের শরীরের নানা কার্যকলাপ সঠিকভাবে পরিচালিত হয়। ফলে চুলও দ্রুত পাকে না। শরীর থাকে ফিট ও তারুণ্যে পূর্ণ।

আরও পড়ুন: Super Soft Skin: নরম তুলতুলে ত্বক পাবেন এবার বাড়িতেই! ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে বানাবেন মালাই ফেসপ্যাক, জানুন