Toothache: দাঁতে ব্যথা থেকে ব্রেন টিউমার! অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এক মা, তারপর…

Brain Tumour: ব্যথা কয়েক মিনিট অবধি স্থায়ী হয়ে পারে। এমনকী হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে ব্যথা। ছ’মাস চিকিৎসার পরেও যখন ব্যথা দূর হল না, চিকিৎসক তাঁকে নিউরোলজি বিভাগে রেফার করেন।

Toothache: দাঁতে ব্যথা থেকে ব্রেন টিউমার! অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এক মা, তারপর...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 18, 2022 | 9:02 AM

‘আমি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য পরিকল্পনা করছিলাম’— জানিয়েছেন তিনি। তখন সবে তাঁর ব্রেন টিউমার ধরা পড়েছিল। তাঁর বংশেও ছিল ব্রেন টিউমার ও তা থেকে মৃত্যুর ইতিহাস। সাহসী ওই মহিলার নাম এমা ওয়েবস্টার। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে। দন্তরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে ছুটে যেতে হয় এমাকে। তাঁর দাঁতে তখন অসহ্য ব্যথা। আসলে ২৯ বর্ষীয় এমা অপেক্ষা করছিলেন রুট ক্যানেল সার্জারির জন্য। তবে হঠাৎই তীব্র ব্যথা শুরু হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। এমাকে পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকের মনে হয়, আসলে রোগী নিউরালজিয়ায় আক্রান্ত। নিউরালজিয়া একধরনের স্নায়ুসংক্রান্ত সমস্যা। এক্ষেত্রে রোগী মুখের একদিকে বা উভয়দিকে মারাত্মক ব্যথা অনুভব করেন। ব্যথা কয়েক মিনিট অবধি স্থায়ী হয়ে পারে। এমনকী হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে ব্যথা। ছ’মাস চিকিৎসার পরেও যখন ব্যথা দূর হল না, চিকিৎসক তাঁকে নিউরোলজি বিভাগে রেফার করেন।

গ্লাসগোর ক্যুইন এলিজাবেথ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে হাজির হন এমা। ইতিমধ্যে উপসর্গগুলি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। এমার মুখে দেখা দিয়েছে অসাড়তা, ভোগ করতে হচ্ছে অসহ্য ব্যথা। দৃষ্টিও হয়ে পড়েছে ঘোলাটে।

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এমআরআই স্ক্যান করাতেই বজ্রাহত হন এমা। দেখা যায় তার ডান চোখের পিছনের দিকে বৃদ্ধি পেয়েছে একটি টিউমার। এমা জানান, আমি সামলে নিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ওই দিন কাজেও যোগ দিই। তবে যত সময় গড়ায় আমি ভেঙে পড়তে থাকি। বার বার মনে হচ্ছিল আমিই কেন? কোন দোষে এমন শাস্তি পাচ্ছি আমি?’

এমার বারংবার তার ছেলে আলফির কথা মনে হচ্ছিল। আলফির বয়স মাত্র ৭। ‘খবরটা পাওয়া মাত্র মনে হচ্ছিল আলফির কী হবে। ও কী করে মা ছাড়া বড় হবে?’— জানিয়েছেন এমা।

তিনি বলেন, ‘আমি অন্তেষ্ট্যির পরিকল্পনা করার জন্য তৈরি ছিলাম। আমার পরিবারের অনেকেরই ব্রেন টিউমার হওয়ার ইতিহাস আছে। আমার দিদাও মাত্র ৫৫ বছর বয়সে ব্রেন টিউমারের কারণে মারা যান। আমার বাবা-মা আমার জন্য অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন।’

২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটি অপারেশনের মাধ্যমে এমার বিনাইন টিউমারটির ৭০ শতাংশ বের করে আনা হয়। এরপর তিনি তাঁর বাগদত্ত ৩১ বর্ষীয় কিয়েরান ম্যাকগ্রুক ও আলফির সঙ্গে মা বাবার কাছে যান।

পরবর্তী ৮ মাসে এমাকে তীব্র মাথা যন্ত্রণা এবং শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়। এরপর শুরু হয় ওষুধ যা কিছুটা হলেও তাঁর যন্ত্রণাদায়ক উপসর্গ লাঘব করতে কাজে আসে।

তারপর থেকে প্রতি বছরই টিউমারের অবস্থার জন্য ফলোআপে হাসপাতালে আসতে হয় এমাকে। ইতিমধ্যে ২০২২ সালের অক্টোবরে এমা আরও একটি সন্তানের মা হতে চলেছেন। তিনি জানান, ‘আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমাকে আর দীর্ঘসময় হাসপাতালে কাটাতে হবে না। আমরা নতুন বাড়ি কিনেছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে বিয়েও করতে চলেছি। আর ৮ সপ্তাহের মধ্যে আমি আমার দ্বিতীয় সন্তানের মা হতে চলেছি। ২০১৯ সালে দাঁড়িয়ে একথাগুলো আমার পক্ষে কল্পনা করাও অসম্ভব ছিল। গত তিনবছর ধরে আমার পরিবার ও বন্ধুরা আমার পাশে না থাকলে এই দিনটা দেখা আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল।’

এমার লড়াইয়ে সকলে খুশি। এমাকে কুর্নিশ হার না মেনে এমন লড়াই করার জন্য, আশা ধরে রাখার জন্য। এমার লড়াই অনেককে পথ দেখাবে।