‘শীর্ষনেতাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনে বিরক্ত’, অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ ৩ এনএলএফটি জঙ্গির
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ওই তিনজন এনএলএফটিতে যোগদান করে এবং মায়ানমার ও বাংলাদেশে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
আগরতলা: আবারও সাফল্য ত্রিপুরা পুলিশের। রাজ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন “ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রান্ট অব ত্রিপুরা”-র তিন সদস্য বৃহস্পতিবার অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করে পুলিশের কাছে। রাজ্য পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল একটি বিবৃতি জারি করে এই কথা জানান।
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য়ে চলছে এনএলএফটি জঙ্গিদের উপদ্রব। চলতি বছরেই কয়েক মাস আগে ত্রিপুরা পুলিশের সহায়তায় আত্মসমর্পণ করে দুই শীর্ষ নেতা। তার কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই আরও তিন সদস্য আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণকারীদের নাম রূপাদান দেববর্মা, অমুষ ত্রিপুরা ও দিলীপ দেববর্মা। তাঁরা সকলেই এনএলএফটি নেতা বিশ্ব মোহন দেববর্মার অধীনে মূলত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি থেকে টাকা আদায়ের কাজ করত।
আত্মসমর্পণের সময় তাঁরা পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলি জমা দেয়। একইসঙ্গে টাকা আদায়ের জন্য সংগঠনের কিছু নোটিসও পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ওই তিনজন এনএলএফটিতে যোগদান করে এবং মায়ানমার ও বাংলাদেশে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। মূলত টাকা আদায়ের কাজ করা ওই তিন সদস্য শীর্ষ নেতাদের খারাপ ব্যবহার এবং তোলাবাজির টাকায় বাংলাদেশ ও মায়ানমারে বিলাসবহুল জীবনযাপনে বিরক্ত হয়েই আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছে, সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিলও দুই সদস্য ত্রিপুরা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। একের পর এক সদস্যের আত্মসমর্পণে ধীরে ধীরে এক সময় অতি সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনের ক্ষমতা কমছে বলেই দাবি ত্রিপুরা পুলিশের। একইসঙ্গে আর্থিতক সঙ্কটও দেখা গিয়েছে জঙ্গি্ সংগঠনে, এমনটাই ধারণা শীর্ষ আধিকারিকদের।
১৯৯৭ সালে এনএলএফটি সংগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মোট ৩১৭টি বিদ্রোহের সৃষ্টি হয়েছে এই সংগঠনের কারণে, যেখানে ২৮ জন নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মী ও ৬২ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান।