Covid Death: করোনায় মৃত্যু হলে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র

Covid Death Compensation: ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। করোনা সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন বুধবার শীর্ষ আদালতে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Covid Death: করোনায় মৃত্যু হলে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
করোনা মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করল কেন্দ্রীয় সরকার
Follow Us:
| Updated on: Sep 22, 2021 | 11:43 PM

নয়া দিল্লি: করোনা আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, এবং আগামী সময় যাদের মৃত্যু হবে, তাঁদের পরিবারবর্গকে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে সেই ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। করোনা সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন বুধবার শীর্ষ আদালতে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এতদিনে যত মৃত্যু হয়েছে, সবার পরিবারকে সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এবং আগামী দিনে যে মৃত্যু হবে, তাঁদের পরিবারও ক্ষতিপূরণের ৫০ হাজার টাকা পাবে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে সেই টাকা দেওয়া হবে স্বজনহারাদের পরিবারবর্গকে। আদালতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। জেলা প্রশাসনের মাধ্য়মে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ভারতে করোনা প্রবেশ করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪.৪৫ লক্ষ মানুষের মানুষের মৃত্য়ু হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য় অনুযায়ী, এদের পরিবারকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তার পুরো টাকাটাই দিতে হবে রাজ্য সরকারকে নিজের তহবিল থেকে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যে হলফনামা শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানেই উল্লেখ করা হয়, “পরবর্তী কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।”

কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি গাইডলাইন তৈরি করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। করোনায় মৃতদের পরিবারকে কত অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয় তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এই নিয়ে সবিস্তারে একটি হলফনামা তলব করা হয় কেন্দ্রের কাছে। সেই হলফনামাতেই লেখা হয়েছে, যারা করোনার ত্রাণ কার্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের মৃ্ত্যুর ক্ষেত্রেও এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য়মন্ত্রকের গাইডলাইন অনুযায়ী ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড ১৯-এর উল্লেখ থাকতে হবে।

কী ভাবে পাওয়া যাবে সেই ক্ষতিপূরণ? কেন্দ্র নিজের হলফনামায় জানিয়েছে, ক্ষতিপূরণের আবেদন করার জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। সেই ফর্মে যে যে নথি চাওয়া হবে, তা জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরে। নথিপত্র খতিয়ে দেখার দায়িত্ব থাকছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের। কেন্দ্র জানিয়েছে, আধার কার্ড সংযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩০ দিনের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণের টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এই বিষয়ে যে যে অভিযোগ উঠবে তা সামালাতে হবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে।

হাইকোর্টের জানানো কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকারের কী প্রতিক্রিয়া? জানতে যোগাযোগ করা হয় তৃণমূলের রাজ্য়সভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের সঙ্গে। যদিও পেশায় আইনজীবী সুখেন্দুবাবু বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তা শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন হওয়ার কারণে।

আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election: ‘আপনার একটা ভোট না পেলে ক্ষতি হয়ে যাবে আমার’, স্নায়ুর চাপে ভুগছেন মমতা?

উল্লেখ্য, কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় কেন্দ্রের কাছে তাদের পরিকল্পনা কী, এবং কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব, তার বিস্তারিত জানতে চেয়ে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে একটি হলফনামা তলব করে আদালত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই জানিয়ে দেওয়া হল, কোভিড স্বজনহারা পরিবারগুলি ঠিক কী পরিমাণ আর্থিক সাহায্য পেতে চলেছে।

কোষাগার খসবে কার? কেন্দ্রের, নাকি রাজ্যের? 

সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র এই তথ্য জানানোর পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ক্ষতিপূরণের টাকা তাহলে কার কোষাগার থেকে যাবে? কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকাই রাজ্য ক্ষতিগ্রস্তদের দেবে? নাকি পুরো ধাক্কাটাই রাজ্যের উপর দিয়ে যাবে? জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অর্থ কোথা থেকে আসে? ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী, যে কোনও আপতকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য রাজ্যের কাছে একটা তহবিল মজুত থাকে। যার ৭৫ শতাংশ অর্থ বছরে দুই কিস্তিতে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকিটা দিতে হয় রাজ্যকে। বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন রাজ্য় অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য অবশ্য ৯০ শতাংশ অর্থই দেয় কেন্দ্র। এই তালিকায় রয়েছে উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্য। এর পাশাপাশি সিকিম, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, এবং জম্মু-কাশ্মীরও রয়েছে সেই তালিকায়।

কী ধরনের বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে এই তহবিল ব্য়বহার করা যায়? সাইক্লোন, খরা, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, সুনামি, ধস, পতঙ্গ হানা ইত্যাদি রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে এই তহবিলের অর্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেহেতু গত ১০০ বছরে কোনও অতিমারি আসেনি, তাই এই আইনে তেমন কোনও নীতিও সংযুক্ত করা হয়নি। তবে করোনা কালের পর সম্ভবত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি এই তালিকায় মহামারী দ্বারা তৈরি হওয়া বিপর্যয়ও অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থা খোদ একটা বিপর্যয়’, খড়দহ-কাণ্ডে রাজ্যকে তুলোধোনা শুভেন্দুর