Suvendu Adhikari: ‘বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থা খোদ একটা বিপর্যয়’, খড়দহ-কাণ্ডে রাজ্যকে তুলোধোনা শুভেন্দুর
Suvendu Adhikari tweet on Kharda Case: "পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিজেই একটি বিপর্যয়। দুর্ভাগ্যবশত খড়দহের একটি জলমগ্ন সরকারি আবাসন কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ৩ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আমলাতান্ত্রিক লালফিতেই আটকে গিয়েছিল ২ কোটি টাকার পাম্পিং প্রকল্প? ভুল অগ্রাধিকারের দৃষ্টান্ত।''
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা নিজেই একটি বিপর্যয়। খড়দহ জলমগ্ন আবাসনে একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে রাজ্য সরকারকে চাঁচাছোলা আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। বুধবার বিকালে নিজের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তৃণমূল (TMC) সরকারকে খোঁচা, ‘ভুল অগ্রাধিকারের আরও একটি দৃষ্টান্ত।’
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন ছিল খড়দহের বিস্তীর্ণ এলাকা। পাতলিয়ায় সরকারি আবাসনে নিজের স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে থাকতেন বছর চল্লিশের রাজা দাস। কিছুদিন ধরেই বৃষ্টির জেরে আবাসনের ভেতরেও জল জমেছে। জমা জলেই মঙ্গলবার ঘরের মধ্য়েই বাড়ির কোনও কাজে বিদ্যুত্ সংযোগ করতে গিয়েছিলেন রাজা। সেইসময়ে তিনি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে গিয়ে স্ত্রী পৌলমীও বিদ্যুত্স্পৃষ্ট ( Electrocution) হন। মা-বাবাকে বাঁচাতে আসেন বছর এগারোর শুভ। সেসময় খাটের ওপর বসেছিল তার ছোট ভাই। কিন্তু, মা-বাবাকে বাঁচাকে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয় সেই নাবালকও। পরিবারের একমাত্র সদস্য হিসাবে বেঁচে যায় চার বছরের নাবালক। এই ঘটনায় তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্যে। চলছে রাজনৈতিক দোষারোপও। এই প্রেক্ষিতে সরকারকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও।
টুইটারে তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিজেই একটি বিপর্যয়। দুর্ভাগ্যবশত খড়দহের একটি জলমগ্ন সরকারি আবাসন কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ৩ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আমলাতান্ত্রিক লালফিতেই আটকে গিয়েছিল ২ কোটি টাকার পাম্পিং প্রকল্প? ভুল অগ্রাধিকারের দৃষ্টান্ত।”
WB Disaster Management is a disaster in itself. Unfortunately 3 members of a family died due to electrocution in a waterlogged government housing complex in Khardah.Rs. 2 crore pumping project has been stuck due to bureaucratic red tape? Illustration of misplaced priorities.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) September 22, 2021
উল্লেখ্য, খড়দহের পাতলিয়ায় ওই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার পর টনক নড়েছে প্রশাসনের। বুধবার জমা জল নিষ্কাশনে সেচ দফতর থেকে ৬টি পাম্প ও দমকল ২টি পাম্প আনা হয়। বুধবার সকাল থেকেই চলছে জল নিষ্কাশনের কাজ। যদিও ফের বৃষ্টি হলে এলাকা জলমগ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা। তড়িঘড়ি ২ কোটির পাম্পিং প্রোজেক্টে অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে দুর্ঘটনা হলেই টনক নড়ে প্রশাসনের? কেন আগে থেকে এরকম পদক্ষেপ করা হল না?
এদিকে এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বৃষ্টি বাড়লেই গোটা এলাকা এভাবেই জল থইথই করে। জল ঢুকে যায় বাড়িতেও। বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রাজনৈতিক নেতাদের কেবল দেখা যায় নির্বাচনের সময়ে। পরে তাঁদের আর পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা বলছেন, “ভোট এলে বাড়ির দুয়ারে দুয়ারে এসে হাতজোড় করে যান নেতারা। ভোট গেল তো সব গেল! তখন আর আমাদের সমস্যার কথা শোনার সময় নেই। এভাবে যে কতদিন চলবে জানি না।”
আর জল জমার কারণ হিসাবে জল নিষ্কাশনে আসা কর্তব্যরত দমকলের অফিসার জানিয়েছেন, খড়দহ-পাতলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা নীচু জায়গা। ভৌগোলিকভাবে এলাকা কড়াইয়ের মতো। ফলে জল জমে। সেই জল পাম্পিং করে তোলা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। অন্যদিকে, খড়দহে এখন কোনও বিধায়ক নেই। এলাকাটি পঞ্চায়েত বা পৌরসভার আয়ত্ত্বাধীনও নয়। ফলে, কাজ করতে সমস্যা।
আরও পড়ুন: Unknown Fever: উত্তরবঙ্গে ফের অজানা জ্বরে বলি ৩ মাসের শিশুকন্যা