Birth in Bengal jails: ৪ বছরে বাংলার জেলে জন্মেছে ৬২ শিশু! বাংলাদেশে ফেরত ১১ ‘মা’কে

Birth in Bengal jails: রাজ্যের সংশোধনমূলক পরিষেবা দফতর থেকে তথ্য নিয়ে, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের অ্যামিকাস কিউরি, আইনজীবী গৌরব আগরওয়াল। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত চার বছরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারগুলিতে সব মিলিয়ে বাষট্টি জন শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারাগারে আসার আগেই গর্ভবতী ছিলেন সংশ্লিষ্ট মহিলা বন্দীরা।

Birth in Bengal jails: ৪ বছরে বাংলার জেলে জন্মেছে ৬২ শিশু! বাংলাদেশে ফেরত ১১ 'মা'কে
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 18, 2024 | 9:39 PM

নয়া দিল্লি: আগেই খবর পাওয়া গিয়েছিল, বাংলার জেলগুলিতে মহিলা বন্দিরা কারাগারের ভিতরেই অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। কারাগারে পুরুষদের প্রবেশ নিশিদ্ধের আর্জি জানিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন জেল সংক্রান্ত এক মামলার অ্যামিকাস কিউরি, অর্থাৎ, আদালত বন্ধু, তাপস ভঞ্জ। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেছিলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর’। এবার এই ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বিষয় সম্পর্কে আরও কিছু খুঁটিনাটি তথ্য সামনে এলে। রাজ্যের সংশোধনমূলক পরিষেবা দফতরের তথ্য অনুসারে, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের অ্যামিকাস কিউরি, আইনজীবী গৌরব আগরওয়াল। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত চার বছরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারগুলিতে সব মিলিয়ে বাষট্টি জন শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারাগারে আসার আগেই গর্ভবতী ছিলেন সংশ্লিষ্ট মহিলা বন্দীরা।

আইনজীবী গৌরব আগরওয়াল জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সংশোধনমূলক পরিষেবার অ্যাডিশনাল ডিজি ইন্সপেক্টর জেনারেলের কাছ থেকে তিনি এই সকল তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহিলা বন্দীরা প্যারোলে বাইরে থাকার সময় গর্ভবতী হয়েছেন। যে ৬২ জন মহিলা প্রসব কারাগারে সন্তান প্রসব করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ১১ জন ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁদেরকে সন্তান-সহ বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারাগারে পাঠানোর সময়, যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়, সেই সময় ছয় মহিলা বন্দি জানিয়েছিলেন, তাঁরা গর্ভাবতী। ২০ জনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় জানা গিয়েছিল, তাঁরা গর্ভবতী। ৩২ জন ধরাই পড়েছিলেন গর্ভাবতী অবস্থায়। আর চারজনের ক্ষেত্রে, তাঁরা প্যারোলে ছুটি কাটিয়ে কারাগারে ফিরে আসার পর দেখা গিয়েছিল, তাঁরা গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন।

রিপোর্ট অনুসারে, গত চার বছরে সবথেকে বেশি শিশু জন্মেছে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। এখানে ২০ জন শিশুর জন্ম হয়েছে। এরপর আছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। সেখানে জন্ম নিয়েছে ৬ জন শিশু। এছাড়া, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার ও কৃষ্ণনগর জেলা সংশোধনাগারে পাঁচ জন করে, মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে চারজন, বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার ও বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে তিনজন, বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার, কোচবিহার জেলা সংশোধনাগার, বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগার এবং রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার থেকে দুজন করে এবং হুগলি জেলা সংশোধনাগার, সিউড়ি জেলা সংশোধনাগার, শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগার ও ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারে ১ জন করে শিশুর জন্ম হয়েছে।

রিপোর্টে, শুধু বাংলার নয়, গোটা দেশের মহিলা কারাগার এবং ব্যারাকগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, মহিলাদের কারাগারগুলিতে চিকিৎসা সুবিধা কেমন রয়েছে, তাও পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। বন্দি থাকাকালীন তাঁদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুপারিশ করা হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বাংলার কারাগারগুলির ‘অমানবিক অবস্থা’র বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চের সামনে এক রিট পিটিশনে এই বিষয়টির উত্থাপন করেছিলেন আইনজীবী তাপস ভঞ্জ। পরে, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলা তাদের আওতায় নিয়ে আসে এবং এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গোটা ভারতের কারাগারগুলিতেই মহিলা বন্দিদের অবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।