ক্লাস ফাইভ থেকে সিপিএম, এসএফআই করা ২১ বছরের আর্যাই দেশের সর্ব কনিষ্ঠ মেয়র
অতিসম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১০০টি আসনের মধ্যে ৫১টি আসনেই জয় পেয়েছে বামফ্রন্ট।
তিরুঅনন্তপুরম: আর্যা রাজেন্দ্রন (Arya Rajendran)। ভারতীয় রাজনীতির এক নতুন নক্ষত্র। ২৫ বছর বয়সে হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রী হয়ে দেশকে চমকে দিয়েছিলেন ‘বিস্ময় বালিকা’ সুষমা স্বরাজ। আর্যা সেই রেকর্ড ভাঙতে চলেছেন। দেশের সর্ব কনিষ্ঠ জনপ্রতিনিধি হিসেবে কোনও পুরসভার মেয়ের হচ্ছেন একুশের আর্যা, সারা ভারতে এই দৃষ্টান্ত আর নেই। শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তের কোনও ব্যাপক পরিবর্তন না হলে তিরুঅনন্তপুরমের মেয়র হতে চলেছেন বিএসসি ম্যাথস-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। জেলা স্তরে ইতিমধ্যেই আর্যার নামে সর্বসম্মতি দিয়েছে সিপিএম (CPIM)। এবার অপেক্ষা স্রেফ সরকারি ঘোষণার। সম্ভবত শনিবারই তিরুঅনন্তপুরমের মেয়র হিসেবে আর্যার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
অতিসম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন (Thiruvananthapuram City Corporation) নির্বাচনে ১০০টি আসনের মধ্যে ৫১টি আসনেই জয় পেয়েছে বামফ্রন্ট। এলডিএফ-এর সিদ্ধান্ত, এবার এই কর্পোরেশনের কাণ্ডারি হবেন একুশের আর্যা।
সিপিএম পরিবারের মেয়ে
আর্যা রাজেন্দ্রন ‘সিপিএম পরিবার’-এর মেয়ে। বাবা রাজেন্দ্রন পেশায় ইলেক্ট্রিসিয়ান। মা শ্রীলতা এলআইসি এজেন্ট। আর্যার দাদা অরবিন্দ অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার। এখন কর্মসূত্রে মধ্য প্রাচ্যে রয়েছেন। তিনিও সিপিএম-এর সদস্য। পার্টি কার্ড হোল্ডার।
ক্লাস ফাইভ থেকে সিপিএম
একুশ বছরের আর্যা ক্লাস ফাইভ থেকেই সিপিএম। কেরলে দলের শাখা সংগঠন ‘বালাসঙ্ঘম’-এ তিনি ছিলেন সক্রিয় কর্মী। সংগঠনের জেলা প্রেসিডেন্ট এবং রাজ্য সভানেত্রীর পদেও ছিলেন আর্যা। পার্টি অন্ত প্রাণ এই মেয়েকে পরবর্তীতে এসএফআই-এ (SFI) নিয়ে আসে সিপিএম। ছাত্র সংগঠন করতে করতেই বিশের নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করে এলডিএফ। আর্যা জেতেন। আর শুধু জেতাই নয়, আর্যার দেশের সর্ব কনিষ্ঠ মেয়র হওয়ার বিরল নজির গড়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
আর্যার আদর্শ শৈলজা
দলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এই তরুণ তুর্কি বলেন, “আমার আদর্শ কেকে শৈলজা (কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী)। করোনা অতিমারীতে তিনি যেভাবে কাজ করেছেন, তা সত্যিই অকল্পনীয়।” শুধু দলের নেত্রীই নন, আর্যাকে অনুপ্রাণিত করেছেন বর্ষীয়ান কবি তথা প্রয়াত সমাজকর্মী সুগতাকুমারী। প্রগতিশীল আর্যা দলীয় অনুসাশন এবং শৃঙ্খলাকে সর্বাধিকার দেন। তবে মায়ের সঙ্গে মন্দির, চার্চে যেতেও তাঁর কোনও দ্বিধা নেই। আর্যা মনে করেন, ঈশ্বর তাঁর কাছে একটি ‘পজিটিভ এনার্জি’। তিনি বলেন, “এই শক্তি আমার পক্ষে শুভ। আমি অন্তত তাই বিশ্বাস করি। আমি সর্বদাই কুসংস্কার বিরোধী এবং আগামীতেও তাই থাকব।”
‘ধারাবাহিক থাকবে উন্নয়ন’
বিরাট দায়িত্বের পর লেখাপড়া কীভাবে চালাবেন? আর্যার উত্তর, “আমার শিক্ষিকারা এবং বন্ধুরা সব সময়ই আমাকে সাহায্য করেছেন। আমি নিশ্চিত ভাবেই আমার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বার করব।” তিরবনন্তপুরমের মেয়র পদে বসার আগে মনে মনে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন এই এসএফআই নেত্রী। প্রত্যয়ী আর্যা বলছেন, “অতীতে অনেক কাজ হয়েছে, আগামীতে সেই ধারাবাহিকতা রেখেই আরও উন্নয়নমূলক কাজ হবে।”