কোভ্যাক্সিনের ফর্মুলা অন্য সংস্থাকে দিতে রাজি ভারত বায়োটেক, শীঘ্রই মিটতে পারে টিকার আকাল

নীতি আয়োগ সদস্য ভিকে পাল এ দিন জানিয়েছেন, অন্যান্যা সংস্থার দ্বারাও এই ভ্যাকসিন তৈরি করার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ভারত বায়োটেক।

কোভ্যাক্সিনের ফর্মুলা অন্য সংস্থাকে দিতে রাজি ভারত বায়োটেক, শীঘ্রই মিটতে পারে টিকার আকাল
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 14, 2021 | 12:22 AM

নয়া দিল্লি: ভ্যাকসিন উৎপাদনে গতি আনতে এ বার ‘আত্মনির্ভরতা’ ত্যাগ করতে হচ্ছে ভারত বায়োটেককে। দিনের পর দিন যেভাবে টিকার চাহিদা বাড়ছে, এবং যেভাবে প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির উপর চাপ আসা শুরু করেছে, তাতে একার হাতে আর এই বিপুল চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কোভ্যাক্সিন নির্মাতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে সরে আসতে হচ্ছে। নীতি আয়োগ সদস্য ভিকে পাল এ দিন জানিয়েছেন, অন্যান্যা সংস্থার দ্বারাও এই ভ্যাকসিন তৈরি করার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ভারত বায়োটেক।

তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, “অনেকেই বলছেন যে অন্যান্য সংস্থাকেও কোভ্যাক্সিন তৈরির বরাত দেওয়া উচিত। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা এই নিয়ে ভারত বায়োটেকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তারা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।” তবে সব সংস্থার পক্ষে যে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা পরিকাঠামোগত দিক থেকে সম্ভব হবে না, সেটাও তিনি আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছেন। নীতি আয়োগের সদস্যের কথায়, “একটি জীবন্ত ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয় এবং এটিকে তৃতীয় স্তরের বায়ো সুরক্ষা বলয়ে তৈরি করতে হয়। সব প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে এই প্রযুক্তি নেই। তবে যাদের কাছে তা রয়েছে তাদের আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। যারা যারা এই টিকা তৈরি করতে চান তাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলে এই কাজ করা উচিত। টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার সবরকম সাহায্য করবে।”

দেশে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বৃদ্ধি করতে এই সিদ্ধান্ত যে কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিরাট পদক্ষেপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মনে রাখতে হবে, এমন একটি সময় কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন আন্তর্জাতিক সংবাদ মহলে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় সুর সপ্তমে চড়েছে এবং বিজেপি বিরোধী নেতারা মিলে প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিও দিয়েছেন। যেখানে ভ্যাকসিন তৈরির পদ্ধতিতে সংস্কার আনার দাবি জানানো হয়েছিল। আজকেই আবার কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে, ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগে ভারত কমপক্ষে ২০০ কোটি ডোজ় করোনা টিকা তৈরি হয়ে যাবে।

এর ফলে কি মিটতে পারে ভ্যাকসিনের আকাল?

বর্তমানে যে গতিতে টিকাকরণ চলছে তা যে খানিকটা বৃদ্ধি পাবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে রাতারাতি পরিস্থিতি বদলে যাবে, এমন আশা করাও ন্যায্য হবে না। কেননা ভ্যাকসিন তৈরি ফর্মুলা হস্তান্তর করতে এবং তা তৈরি হয়ে বাজারে আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। ফলে এখনই পরিস্থিতি বদল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আনুমানিক জুলাই মাসের শেষে বা অগস্ট মাসে ভ্যাকসিন উৎপাদন গতি পেতে পারে।

এর অন্যতম কারণ, বুধবারই কোভ্যাক্সিন নির্মাতা ভারত বায়োটেক এবং কোভিশিল্ড নির্মাতা সেরাম ইনস্টিটিউট কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের আগামী কয়েক মাসের টিকা তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। সেখানেই প্রকাশ পেয়েছে, অগস্ট মাসের মধ্যে প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে ১০ কোটি ডোজ় কোভিশিল্ড তৈরি হবে। ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, এই একই সময়ে তারা প্রায় সাড়ে ৭ কোটি কোভ্যাক্সিন তৈরি করবে।