J.P Nadda: ‘এখন রাজনীতি নয়, মানবিকতা দেখানোর সময়’, দুর্যোগ-বিধ্বস্ত হিমাচল পরিদর্শন করে সাহায্যের আশ্বাস নাড্ডার
Himachal Pradesh: সিমলার এসপি সঞ্জীব কুমার গান্ধী বলেন, "মৃত ৭৮ জনের মধ্যে রবিবার রাতেই ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে কেবল সিমলায় শিব মন্দির ধসে গিয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ফাগলিতে ৫ জনের এবং কৃষ্ণনগরে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।"
সিমলা: মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশ। রবিবার দুর্যোগ-বিধ্বস্ত এই রাজ্য পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নাড্ডা (J.P Nadda)। দুর্যোগ-বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করে, দুর্গত পরিবারগুলির সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। এখন ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে মানবিকতা দেখানোর সময়’ এবং কেন্দ্রীয় সরকার হিমাচল প্রদেশকে (Himachal Pradesh) সবরকম সহযোগিতার করবে বলে আশ্বাস দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে দুর্যোগ-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম নরেশ এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব বিন্দাল।
হিমাচল প্রদেশকে পুনরায় সুন্দর করে গড়ে তুলতে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানান জে.পি নাড্ডা। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “এটা রাজনীতি করার সময় নয়, এখন মানবিকতা দেখানোর সময়। হিমাচল প্রদেশের মানুষের জন্য কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। আমি মুখ্যমন্ত্রী সুখুকে নিশ্চিত করছি যে, রাজ্য সরকারকে সবরকম সাহায্য করবে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী। হিমাচল প্রদেশের মানুষকে সাহায্য করতে আমরা কোনও খামতি রাখব না।”
গত ১০ অগস্ট সিরমাউর জেলার পাওনটা সাহিব এলাকায় হড়পা বানে একটি পরিবারের ৫ সদস্য ভেসে গিয়েছেন। এদিন সেই অসহায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তারপর তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে নাড্ডা বলেন, “এই ধ্বংসলীলা দেখে এবং এত মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমি ব্যথিত। ঘরছাড়া সকলের পুনর্বাসনের জন্য সবরকম সাহায্য করা হবে বলে আমি নিশ্চিত করছি।” হিমাচল প্রদেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বিগ্ন বলেও জানান জে.পি নাড্ডা। তিনি বলেন, “ত্রাণ, পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের ব্যাপারে প্রশাসন সবরকম সাহায্য করবে। ঘরছাড়াদের পুনর্বাসন দিতে কেন্দ্র সবরকম সাহায্য করবে।”
দুর্যোগ-বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশের পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য করেছে বলেও জানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সুখু বৈঠক করেছেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন ত্রাণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপর দু-দিনের মধ্যে ১৮৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশ সরকারকে মোট ৬২২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) ২০টি দল উদ্ধারকাজে রয়েছে। NDRF, ২ ITBP কোম্পানি, বায়ুসেনার ৩টি বিমান যৌথভাবে ১ হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে।”
গত ১৪ অগস্ট সিমলার কৃষ্ণনগরে ভূমিধসে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে প্রসিদ্ধ শিব মন্দির। এদিন সেই বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন নাড্ডা ও অনুরাগ ঠাকুর। গত রবিবার থেকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হিমাচলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮। সিমলার এসপি সঞ্জীব কুমার গান্ধী বলেন, “মৃত ৭৮ জনের মধ্যে রবিবার রাতেই ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে কেবল সিমলায় শিব মন্দির ধসে গিয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ফাগলিতে ৫ জনের এবং কৃষ্ণনগরে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।”
রাজ্য আপৎকালীন কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৪ জুন, বর্ষার মরশুম শুরু হওয়ার পর থেকে হিমাচল প্রদেশে বৃষ্টিজনিত কারণে এবং বৃষ্টির জেরে পথ দুর্ঘটনায় মোট ৩৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৮ জন এখনও নিখোঁজ। আর কেবল বৃষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ২২১ জনের।