AAP in Delhi : আরও অস্বস্তিতে আপ, এবার বাস ক্রয় ‘দুর্নীতিতে’ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
AAP in Delhi : দিল্লিতে ১ হাজারটি লো-ফ্লোর বাস কেনা নিয়ে তদন্ত এবার সিবিআই-র কাছে পাঠাল গভর্নর জেনারেল সাক্সেনা। ফলে দিল্লিতে আপ ও সাক্সেনার মধ্যে দ্বৈরথ বাড়ল কিছুটা।
নয়া দিল্লি : দিল্লির আবগারি নীতির পর এবার সিবিআই-র রাডারে দিল্লির সরকারের সিএনজি বাস ক্রয়। এদিন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা এই বাস ক্রয়ের ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে গভর্নর জেনারেল ও অরবিন্দ কেজরীবালের মধ্যেকার সংঘর্ষ আরও কিছুটা বাড়ল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও দিল্লি সরকার অভিযোগ করেছে, এই তদন্তের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য় রয়েছে। উল্টে আপ লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে তোপ দেগে বলেছে, প্রথমে লেফটেন্য়ান্ট গভর্নর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সমস্ত দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুক।
দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে সিবিআই-র অভিযান শুরু হওয়ার আগে থেকেই দিল্লির সরকারের লো-ফ্লোর ১ হাজারটি বাস কেনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছিল। এবার সেই তদন্তভার নিল সিবিআই। এই মামলা সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য় সুপারিশ করেছিলেন মুখ্য সচিব নরেশ কুমার। প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও আপ সরকারের মধ্যে সম্পর্ক ভাল যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই দিল্লির নয়া আবগারি নীতি নিয়ে সিবিআই একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। এই মামলায় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে মামলায়ও দায়ের হয়েছে। এই গোটা অভিযানে অরবিন্দ কেজরীবাল সহ বিভিন্ন আপ নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে এই ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। এবার এর মধ্যেই ফের অস্বস্তি বাড়ল আপ শিবিরে। নয়া আবগারি নীতির পর এবার বাস কেনা নিয়েও শুরু হবে সিবিআই তদন্ত।
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর জেনারেল এই বছরের জুন মাসেই একটি অভিযোগ পেয়েছিলেন। সেখানে দিল্লির পরিবহণ মন্ত্রীকে বাসের টেন্ডারিং ও ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান এবং দিল্লি ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট সিস্টেমের (ডিআইএমটিএস) নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছিল। আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অভিযোগ জুলাই মাসে মুখ্য সচিবের কাছে পাঠান সাক্সেনা। সেই অভিযোগ অগস্ট মাসে ফের গভর্নরের কাছে পাঠান মুখ্য সচিব। সেই রিপোর্টে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গুরুতর অসঙ্গতির দিকে নজর কাড়েন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘সিভিসি নির্দেশিকা ও সাধারণ আর্থিক নিয়মগুলির ব্য়াপকভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।’ এবং টেন্ডার প্রক্রিয়ার অসঙ্গতিগুলি আড়াল করার জন্য ডিআইএমটিএসকে ইচ্ছাকৃতভাবে পরামর্শদাতা করা হয়েছিল। এবার সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই লেফটেন্যান্ট গভর্নর অভিযোগটি সিবিআই-র কাছে পাঠিয়েছে। তদন্তভার পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিয়েছে সিবিআই।
এদিকে দিল্লি সরকারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘বাসগুলি কেনাই হয়নি। টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। দিল্লির আরও শিক্ষিত লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রয়োজন। এই ব্যক্তির কোনও ধারণা নেই তিনি কীসে স্বাক্ষর করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে তিনি এই ধরনের তদন্ত শুরু করেছেন। এতদিনের তদন্তে কোনও ফলাফল মেলেনি। তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিযোগ করার পর তিনি এখন চতুর্থ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।’ এদিকে আপ সাক্সেনার বিরুদ্ধে তাঁর পদ অপব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি যখন খাদি ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনের (KVC) চেয়ারম্যান ছিলেন সেই সময় মুম্বইতে একটি খাদি লাউঞ্জের অভ্যন্তরীণ ডিজাইনের চুক্তি নিজের মেয়েকে পাইয়ে দিয়েছেন। এই পদে থাকাকালীন ১৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এবার বাস ক্রয় নিয়ে তদন্ত সিবিআই-র কাছে হস্তান্তর হওয়াতে দিল্লিতে সাক্সেনা-বিজেপির রণ আরও এক মাত্রা পেল বলে মনে করা হচ্ছে।