‘অখুশি প্রেমিকার মতো ব্যবহার’, অক্সিজেন বন্টন নিয়ে তুঙ্গে কেন্দ্র বনাম দিল্লির বিবাদ

আদালতের তরফে কেন্দ্রকে বলা হয় "অক্সিজেন বন্টন নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।" এর জবাবেই কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, "দিল্লিকেই প্রাধান্য় দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে উত্তরাখণ্ড থেকে অক্সিজেন আনানো হচ্ছে। সেখানেও তো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। রাজস্থান, উত্তর প্রদেশেও একই হাল। সমস্ত দিক বিবেচনা করেই আমাদের বন্টন করতে হচ্ছে।"

'অখুশি প্রেমিকার মতো ব্যবহার', অক্সিজেন বন্টন নিয়ে তুঙ্গে কেন্দ্র বনাম দিল্লির বিবাদ
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 22, 2021 | 5:03 PM

নয়া দিল্লি: অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে কেন্দ্র বনাম রাজধানীর বিবাদ। বৃহস্পতিবার সকালেই দিল্লির সরোজ স্পেশালিটি হাসপাতালের তরফে জানানো হয় যে তাদের কাছে কেবল এক ঘণ্টার অক্সিজেন পড়ে রয়েছে। দ্রুত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে তারা দিল্লি হাইকোর্টের দারস্থ হন। তবে শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, “দিল্লি সরকার অখুশি প্রেমিকার মতো ব্যবহার করছেন।”

ঘটনার সূত্রপাত হয় আজ সকালেই। সরোজ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, তাদের হাসপাতালে ক্রিটিকাল ও ইনটেনসিভ ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৭০ জন রোগী। ৪৮ জন রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন, যেখানে হাই ফ্লো অক্সিজেনের প্রয়োজন। ভর্তি হওয়ার জন্য ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন ১৭২ জন রোগী। এদের মধ্যে ৬৪ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় রোগী ভর্তিও নেওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয় দিল্লি হাইকোর্টে।

শুনানির শুরুতেই দিল্লি হাইকোর্টের তরফে অক্সিজেন ঘাটতির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয় ও আকাশপথে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থা আইনক্সের তরফে জানানো হয়, অতিরিক্ত অক্সিজেনই সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এর থেকে বেশি সরবরাহ সম্ভব নয়।

এরপরই আদালতের তরফে কেন্দ্রকে বলা হয় “অক্সিজেন বন্টন নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।” এর জবাবেই কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, “দিল্লিকেই প্রাধান্য় দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে উত্তরাখণ্ড থেকে অক্সিজেন আনানো হচ্ছে। সেখানেও তো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। রাজস্থান, উত্তর প্রদেশেও একই হাল। সমস্ত দিক বিবেচনা করেই আমাদের বন্টন করতে হচ্ছে।”

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে অক্সিজেন ট্যাঙ্কারের যাতায়াতে কেউ বাধা দিলে তা জানাতে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বুধবার দিল্লিগামী যে দুটি ট্যাঙ্কার আটকে পড়েছিল, তার যাতায়াতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

এ দিকে, দিল্লি সরকারের সমালোচনা করে কেবন্দ্রের তরফে বলা হয়, “রাজ্য সরকার অখুশি প্রেমিকার মতো ব্যবহার করছে। অন্তত কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। এটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার সময় নয় এখন, দিল্লি সরকার কমপক্ষে আমাদের সেই হাসপাতালগুলির তালিকা দিকে পারত, যাদের খুব জলদি অক্সিজেনের প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশাতেও অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে। সকাল থেকেই আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে অক্সিজেনের জন্য ফোন পাচ্ছি।”

অন্যদিকে কেন্দ্রের বন্টন নিয়ে সমস্যা প্রসঙ্গে আদালতের তরফে বলা হয়, “কেন্দ্র অক্সিজেন বন্টন করলেও স্থানীয় প্রশাসন যাতায়াতে বাধা দিচ্ছে। যদি অক্সিজেন সরবরাহই না করতে দেওয়া হয়, তবে বন্টন করে লাভ কী?” অবশেষে বিচারপতি জানান, আপাতত পানিপথ থেকে হরিয়ানায় অক্সিজেন সরবরাহ করা হোক এবং দিল্লির জন্য আইনক্সের সরবরাহ ক্ষমতা বাড়ানো হোক।

আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের বিপুল চাহিদা, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৈঠক নমোর