Chandipura virus: নতুন আতঙ্ক চাঁদিপুর ভাইরাস! মৃত ৮ শিশু, আক্রান্ত আরও ১৪

Chandipura virus: রোগীদের নমুনা নিশ্চিত করার জন্য পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। এই ভাইরাল সংক্রমণ প্রধানত শিশুদেরই হয়। তাই আতঙ্ক আরও বেশি। কী এই ভাইরাস? এর লক্ষণগুলিই বা কী? কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়? জেনে নেওয়া যাক সবকিছু।

Chandipura virus: নতুন আতঙ্ক চাঁদিপুর ভাইরাস! মৃত ৮ শিশু, আক্রান্ত আরও ১৪
Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Jul 18, 2024 | 3:17 PM

আহমেদাবাদ: নয়া আতঙ্কের নাম চাঁদিপুর ভাইরাস। ১০ জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসজনিত রোগে গুজরাটের আরাবল্লী জেলায় আট শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৪ শিশু। পশ্চিম ভারতের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই), রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঋষিকেশ প্যাটেল বলেছেন, সবরকাঁথা, আরাবল্লী, মহিসাগর, খেদা, মেহসানা এবং রাজকোট জেলা থেকে সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া, রাজস্থানের দু’জন এবং মধ্য প্রদেশের একজন রোগীর চিকিৎসা চলছে গুজরাটে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রোগীদের নমুনা নিশ্চিত করার জন্য পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। এই ভাইরাল সংক্রমণ প্রধানত শিশুদেরই হয়। তাই আতঙ্ক আরও বেশি। কী এই ভাইরাস? এর লক্ষণগুলিই বা কী? কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়? জেনে নেওয়া যাক সবকিছু –

কী এই চাঁদিপুর ভাইরাস ?

ভাইরাসটির আসল নাম, চাঁদিপুর ভেসিকুলোভাইরাস (CHPV)। ১৯৬৫ সালে, মহারাষ্ট্রর চাঁদিপুর গ্রামে এই ভাইরাস প্রথম সনাক্ত করা হয়েছিল। সেই থেকেই এই নামকরণ। এটি একটি আরএনএ ভাইরাস। এটি প্যাথোজেনটি ব়্যাবডোভিরিডা (Rhabdoviridae) ভাইরাল পরিবারের ভেসিকুলোভাইরাস গণের সদস্য।

এই ভাইরাল সংক্রমণের উপসর্গগুলো কী কী?

চাঁদিপুরা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর আসতে পারে। এছাড়া গুরুতর মাথাব্যথা হতে পারে। ঘন ঘন বমি, খিঁচুনি হতে পারে। উপরন্তু, এনসেফালাইটিস অর্থাৎ মস্তিষ্কে ফুলে যেতে পারে। এছাড়া, মানসিক বিভ্রান্তি, বিরক্তি দেখা দিতে পারে। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোমায় চলে যেতে পারে রোগী এবং মৃত্যু হতে পারে।

কীভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস?

মশা, পোকা-মাকড় এবং মাছির মতো ভেক্টরের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে চাঁদিপুর ভাইরাস। ভাইরাস আক্রান্ত ভেক্টরগুলি যখন কোনও মানুষকে কামড়ায়, তখন ওই ব্যক্তির দেহে তবে, ভাইরাসটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায় না, অর্থাৎ, ছোঁয়াচে নয়।

কাদের ঝুঁকি বেশি?

এই ভাইরাস প্রাথমিকভাবে নিশানা করে ৯ মাস থেকে ১৪ বছরের শিশু ও কিশোরদের। শিশুরা বাড়ির বাইরে খেলতে যায়। তাই, মশা, মাছি বা পোকা-মাকড়ের কামড় খাওয়ার সম্ভাবনা এদেরই বেশি থাকে। বর্ষায় জমা জলে মশার প্রজনন বেশি হওয়ায়, এই সময় এই ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আছে কি?

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের কোনও ডেডিকেটেড অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ নেই। অর্থাৎ প্রতিরোধ করার কোনও উপায় নেই। তবে, উপসর্গগুলি চিকিত্সা করে সারিয়ে তোলা যায়। বর্তমানে, এই ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিনও নেই। ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করার একমাত্র উপায় হল, মশা-মাছি নিয়ন্ত্রণ করা এবং মশা যাতে কামড়াতে না পারে, সেই দিকে নজর রাখা। এর জন্য ঢিলেঢালা এবং আপাদমস্তক ঢাকা পোশাক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। মশা তাড়ানোর ওষুধও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলিরও এলাকা সাফাইয়ে জোর দিতে হবে। এছাড়া, কীটনাশক স্প্রে করা, বাচ্চাদের লম্বা হাতার জামা পরানো, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা এবং পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এই সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

চিকিৎসা?

আগেই বলা হয়েছে, এই রোগের কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। উপসর্গগুলির চিকিৎসা করাই একমাত্র উপায়। গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে রোগীদের, বিশেষ করে শিশুদের, হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন। শরীরে জলের পরিমাণ সঠিক রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যদি তীব্র বমি হয়। জ্বর কমানোর ওষুধ দিয়ে জ্বর কমানো উচিত। খিঁচুনি বন্ধ করতে অ্যান্টিকনভালসেন্টস দেওয়া হয়। গুরুতর স্নায়বিক উপসর্গ দেখা দিলে, বা শ্বাসযন্ত্রের কোনও সমস্যা হলে, আইসিইউ-তে ভর্তি করতে হতে পারে।