Char Dham Project: ‘ওপারে হেলিপ্যাড বানাচ্ছে চিন’, চার ধাম প্রকল্পে রাস্তা চওড়া করার আর্জি কেন্দ্রের

Centre on Char Dham Project in Supreme Court: দুই পক্ষের বয়ান শোনার পরই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, "প্রতিরক্ষা দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং এতে উন্নয়নের প্রয়োজন। সম্প্রতি সীমান্তে যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, তা মাথায় রেখে দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে উদ্বেগগুলিকে কোনও ভাবেই অদেখা করা যাবে না।"

Char Dham Project: 'ওপারে হেলিপ্যাড বানাচ্ছে চিন', চার ধাম প্রকল্পে রাস্তা চওড়া করার আর্জি কেন্দ্রের
জাতপাত নিয়ে কী বলছে সুপ্রিম কোর্ট? ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2021 | 11:44 AM

নয়া দিল্লি: সীমান্তে চিন(China)-র দাপাদাপিতে ক্রমাগত বাড়ছে উদ্বেগ। এই পরিস্থিতিতেই চারধাম প্রকল্পের (Char Dham Project) রাস্তা চওড়া করা সম্ভব কিনা, তা জানতে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হল কেন্দ্র (Centre)। এর আগেও কেন্দ্রের তরফে রাস্তা চওড়া করার আবেদন জানানো হলেও উত্তরাখণ্ডে ক্রমাগত ভূমিধসের কথা উল্লেখ করে আদালতের তরফে সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার ফের রাস্তা চও়ড়া করার বিরোধিতা করে একটি আবেদন জানানো হলে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, পরিবেশ ও প্রতিরক্ষা- দুটি বিষয়ের ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন।

চার ধাম অর্থাৎ কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী ও যমুনেত্রীকে সংযুক্তিকরণের জন্য ৮৯৯ কিলোমিটারের যে সড়ক প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র, তার জেরে প্রচুর গাছ কাটা পড়বে এবং তা থেকে ভূমিধসের সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আদালতে পিটিশন দাখিল করে একটি অলাভজনক সংস্থা। এদিকে, দেহরাদুনের কাছে যাতায়াতে সুবিধার জন্য এই সড়কই ১০ মিটার চওড়া করতে চায় কেন্দ্র। যদিও এর আগেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল, রাস্তা  কোনওভাবেই ৫ মিটারের বেশি চওড়া করা যাবে না।

মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, চিন সীমান্তের ওপারে বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েন করেছে এবং সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে। প্রতিরক্ষা খাতে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চওড়া রাস্তা অত্যন্ত জরুরি। কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল বলেন, “সীমান্তের ওপারে চিন হেলিপ্যাড ও বাড়ি তৈরি করছে। দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদেরও প্রস্তুতি নিতে হবে। ওই সড়কপথ দিয়েই রকেট লঞ্চার, ট্যাঙ্কার সহ যাবতীয় সামরিক অস্ত্র সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হবে, তাই চওড়া রাস্তা প্রয়োজনীয়।”

পাল্টা জবাবে অলাভজনক সংস্থা “গ্রিন দুন”-র তরফে হাজির আইনজীবী কোলিন গনসালভেস চলতি বছরের ব্যাপক ভূমিধসের কথা উল্লেখ করে বলেন, “ধসের কারণে পাহাড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি কখনওই বলব না যে পরিবেশ রক্ষার জন্য দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে উপেক্ষা করা উচিত, কিন্তু সেনাবাহিনীর তরফে একবারও বলা হয়নি যে তাদের চওড়া সড়কের প্রয়োজন। রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই বলেছেন যে চার ধাম যাত্রার জন্য হাইওয়ের প্রয়োজন। সেনাবাহিনী অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাতে মত দিয়েছে।”

২০১৩ সালে মেঘভাঙা বৃষ্টি নেমে কেদারনাথে যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, তারপর শীর্ষ আদালতের তরফে ২৪ টি প্রকল্পে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল। সেই প্রকল্প টেনে এনেও আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, প্রায় ১৭টি হাইড্রোলিক প্রকল্পের কাজ হয়েছে এবং সেই প্রকল্পগুলির কারণেই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ওই ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছিল।

দুই পক্ষের বয়ান শোনার পরই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, “প্রতিরক্ষা দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং এতে উন্নয়নের প্রয়োজন। সম্প্রতি সীমান্তে যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, তা মাথায় রেখে দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে উদ্বেগগুলিকে কোনও ভাবেই অদেখা করা যাবে না। ১৯৬২ সালে যা হয়েছিল, সেনাবাহিনী যাতে ফের সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”

তবে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “প্রতিরক্ষা ও পরিবেশ, এই দুটি বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। যদি কেন্দ্রের তরফে বলা হয় যে তারা পর্যটনের কথা মাথায় রেখে রাস্তা বাড়ানোর অনুরোধ করছে, তবে আমরা কঠোর শর্ত রাখতে পারি, কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আদালতকে আরও সতর্ক হতে হবে।”

বিচারপতি সূর্যকান্তও আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর কাছে জানতে চান সীমান্তের ওপারে, যেখানে চিনা ফৌজ ক্রমাগত নির্মাণকাজ চালাচ্ছে, সেখানের পরিবেশের কী অবস্থা, সেই সম্পর্কে কোনও রিপোর্ট আছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, “চিনের সরকার পরিবেশ রক্ষা করে বলে জানা নেই। এই বিষয়ে কোনও রিপোর্ট রয়েছে কিনা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।” আজ ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।