বাধ সাধলেন প্রধান বিচারপতি, সিবিআই প্রধানের দৌড় থেকে বাদ ‘বিতর্কিত’ মোদী-আস্থানা
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন ওয়াইসি মোদী। এরপর 'মোদী-ঘনিষ্ঠতার' তকমা জুটছিল তাঁর কপালে।
নয়া দিল্লি: নতুন সিবিআইয়ের (CBI) প্রধান কে হবেন? তা স্থির করতে প্রধানমন্ত্রী বাসভবনে বৈঠকে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামন। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তিনটি নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে সিবিআই প্রধান হওয়ার দৌড় থেকে বাদ পড়তে হয়েছে দু’জনকে। সর্বসম্মতিক্রমে নাম ঠিক হয়েছিল মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ সুবোধ কুমার জয়সওয়াল, সশস্ত্র সীমা বলের ডিরেক্টর জেনারেল কেআর চন্দ্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ সচিব ভিএসকে কৌমুদির।
সবচেয়ে সিনিয়র হিসেবে দৌড়ে এগিয়ে থাকার কথা সুবোধ কুমার জয়সওয়ালের। তবে নাম ছিল আরও দু’জনের। নাম ছিল বিএসএফ প্রধান রাকেশ আস্থানা ও এনআইএ প্রধান ওয়াইসি মোদীর। কিন্তু প্রধান বিচারপতির ‘৬ মাস নিয়মে’ বাদ পড়তে হয়েছে ওই দু’জনকে। প্রধান বিচারপতি এনভি রামন শীর্ষ আদালতের একটি পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ টেনে জানান, কোনও পদাধিকারীর যদি ৬ মাস মেয়াদ থাকে তাহলে তাঁকে কোনও সর্বোচ্চ পদে আসীন করা যায় না।
এরপরই ওয়াইসি মোদী ও রাকেশ আস্থানার নাম বাদ পড়ে বলে জানা গিয়েছে। কারণ, আস্থানার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ অগস্ট ও ওয়াইসি মোদীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ মে। যদিও নাম বাছাই করার প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কংগ্রেস নেতার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দেশের অন্যতম প্রথম সারির এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর বেছে নেওয়ার সময়ও ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অধীরের দাবি, “যে পদ্ধতিতে গোটা বিষয়টা করা হয়েছে, তা কমিটির নির্দেশের পরিপন্থী। গত ১ মে আমার কাছে ১০৯ টি নাম পাঠানো হয়েছিল। আজ দুপুর একটার মধ্যে ১০ টি নাম বেছে নেওয়া হল, বিকেল ৪ টের মধ্যে তালিকায় ছিল ৬ টি নাম। এই ধরনের গা-ছাড়া মনোভাব অত্যন্ত আপত্তিকর।”
উল্লেখ্য, রাকেশ আস্থানা ও ওয়াইসি মোদীকে নিয়ে একাধিকবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সিবিআইয়ের বিশেষ অধিকর্তা থাকাকালীন সিবিআই প্রধান আলোক বর্মার সঙ্গে তরজা চরমে উঠেছিল আস্থানার। সে সময় আলোক বর্মাকে অপসারণ করেছিল কেন্দ্র। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন ওয়াইসি মোদী। পরবর্তীকালে গুজরাটের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হরেন পাণ্ড্য খুনের দায়িত্বেও ছিলেন ওয়াইসি মোদী। হরেন পাণ্ড্য গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছিলেন। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার অভিযোগ করেছিল রাজনৈতিক কারণেই খুন হতে হয়েছিল তাঁকে। ওয়াইসি মোদীর বিরুদ্ধেও তদন্ত সঠিক ভাবে না করার অভিযোগ উঠেছিল।
আরও পড়ুন: জামিনের জুজু দেখাতেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে নারদ মামলা প্রত্যাহার করল সিবিআই