Mamata Banerjee: শেষ মুহূ্র্তে গোয়া-সফরে কাটছাঁট, রাহুলের আগমনেই কি এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর?

Goa: মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরসূচির আচমকা পটপরিবর্তনের নেপথ্যে কি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আগমন? অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ

Mamata Banerjee: শেষ মুহূ্র্তে গোয়া-সফরে কাটছাঁট, রাহুলের আগমনেই কি এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর?
নেপালে আমন্ত্রণ মমতার (ছবি - পিটিআই)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 15, 2021 | 6:10 PM

গোয়া: সফরের শেষ মুহূর্তে রদবদল। আগামিকাল দুপুরেই গোয়া থেকে কলকাতা ফিরছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর তিনদিনের সফর সূচীর এ হেন আচমকা পরিবর্তন ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সূত্রের খবর, শনিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর একটি কমিউনিটি লাঞ্চের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানটিই বাতিল হয়েছে বলে খবর সূত্রের।

মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরসূচির আচমকা পটপরিবর্তনের নেপথ্যে কি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) আগমন? অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৯টায় একটি দলীয় বৈঠক সেরে কয়েকটি চার্চ ও মন্দির দর্শনের পর গোয়ার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের পর একটি কমিউনিটি লাঞ্চ সেরে আরও কিছু প্রশাসনিক বৈঠক সেরে তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।

আচমকাই, শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ জানা যায়,  কমিউনিটি লাঞ্চের অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে। দুপুরের মধ্যেই গোয়া থেকে কলকাতায় ফিরছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাহলে কি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আগমনেই এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলের? রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, অন্তত তেমনই।

সূত্রের খবর, শনিবার বিকেলে রাহুল গান্ধীর গোয়া আসার কথা ছিল। কিন্তু, পরে সেই সফরসূচি বদলে সকাল করা হয়। জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদই  গোয়াতে পা রাখতে চলেছেন রাহুল। কথা বলবেন গোয়ার মত্‍স্যজীবীদের সঙ্গেও। বিকেলে তাঁর একটি সভা হওয়ারও কথা রয়েছে। রয়েছে অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মসূচিও।

মমতার সফরের মাঝেই আগামিকাল গোয়া সফরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। দেশের দুই হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের গোয়া সফরের উত্তাপের আঁচ লেগেছে জাতীয় রাজনীতিতে।

নামমাত্র ভোটে লড়াই জন্যই গোয়াতে তৃণমূল নামেনি, বরং সরকার গঠনে আগ্রহী তাঁরা আগ্রহী দলের নেতাদের পক্ষ থেকে এই বার্তাটাই স্পষ্ট ছিল। তৃণমূলের (Trinamool Congress) সর্বোচ্চ নেত্রীর বক্তব্যে সেই বক্তব্যই আরও জোরালো হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির (BJP) একের একের পর এক সর্বভারতীয় নেতার আগমনে বহিরাগত তত্ত্ব খাঁড়া করেছিল তৃণমূল। ভোটবাক্সে বহিরাগত ফ্যাক্টর কাজ করেছে ভোটের ফলেই সেটা স্পষ্ট। গোয়াতে তাঁর ওপর বহিরাগত তকমা লাগার আগেই কৌশলে “আমিও গোয়ার সন্তান” বলে সেই বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন মমতা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে নিজের গোয়া সফরেই আগামী বছর হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারের দামামা বাজিয়ে দিতে চান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এর পাশাপাশি কংগ্রেস (Congress) কর্মী সমর্থক এবং দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে রাহুলের। ২০১৭ সালে ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় ১৭ টি আসন জিতে সর্ববৃহৎ দলের স্বীকৃতি পেলেও বিজেপির কৌশলের কাছে হার মানতে হয় রাহুল সনিয়াদের। কিন্তু স্থানীয় দল গুলির সমর্থন জোগাড় করে ১৩ টি আসন নিয়েও সরকার গঠন করে বিজেপি। তাই গোয়াতে আগের বারে জেতা লড়াই হেরে গিয়ে এবার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপ দিতে চাইছে শতাব্দী প্রাচীন দলটি।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আরও একটি ব্যখ্যা রয়েছে। তাঁদের মতে, সর্বভারতীয় স্তরে আসামের সুস্মিতা দেব, গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনো ফ্যালেরিওর মত কংগ্রেস নেতানেত্রীরা বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেসে আস্থা রাখতে না পেরে মমতার হাত ধরেছেন। গোয়াকে কেন্দ্র করে এককভাবে তৃণমূলের এই আস্ফালনকে ভাল চোখে দেখছে না কংগ্রেস। এরমধ্যেই মমতা আজ নিজের বক্তব্যে এত বছর ধরে কিছু করতে না পারার জন্য কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছেন। এতে বিজেপি বিরোধিতায় বিজেপি ঐক্য ব্যাহত হচ্ছে বলেই মত কংগ্রেসর। গোয়া সফরে এসে মমতা কংগ্রেসকে ভাঙাতে পারেন এই দুশ্চিন্তাও রয়েছে। তাই ভারসাম্য বজার রাখতে দেরি না করেই মাঠে নেমে পড়লেন রাহুল গান্ধী স্বয়ং, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘যেদিন স্যান্ডো গেঞ্জির পকেট তৈরি হবে, সেদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন দিদিমণি’