Rahul Gandhi: রাহুলের জন্য নিজের বাংলো ছাড়তেও প্রস্তুত গান্ধী পরিবার-ঘনিষ্ঠ খাড়্গে
৩০ দিনের নোটিস দেওয়ার পরেও ওই বাংলোয় থাকার অধিকার রয়েছে। ৩০ দিন পর বাজারদরের সমান ভাড়া দিয়ে এই বাংলোয় থাকা যেতে পারে।
নয়া দিল্লি: রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার ঘটনায় সরগরম গোটা দেশ। এবার রাহুলকে সরকারি বাংলো খালি করার নোটিস পাঠানোর ঘটনায় সরব হল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বর্তমানে সরকারি বাংলো ছাড়া রাহুল গান্ধীর কোনও বাড়ি নেই। এই পরিস্থিতিতে এক মাসের মধ্যে রাহুলকে সরকারি বাংলো ছেড়ে দেওয়ার নোটিস পাঠানোয় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge), কপিল সিব্বল (Kapil Sibal) থেকে কে.সি বেণুগোপাল (K.C Venugopal)। আবার কেন্দ্র রাহুল গান্ধীকে উচ্ছেদ করতে চাইলেও তাঁর জন্য নিজের বাংলো ছেড়ে দিতে প্রস্তুত গান্ধী পরিবার-ঘনিষ্ঠ তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, তাঁর নিজের কোনও ঘর নেই। তাই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-য় যাঁরা সামিল হয়েছেন, তাঁরা সকলে তাঁর পরিবারের সদস্য এবং যে এলাকা দিয়ে যাচ্ছেন সেটাই তাঁর ঘর মনে করেছেন বলে জানান রাহুল গান্ধী। তবে সরকারি নির্দেশ মেনে তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি বাংলো ছেড়ে দেবেন বলেও মঙ্গলবার জানিয়েছেন সনিয়া-তনয়। কিন্তু, একমাসের মধ্যে নির্দিষ্ট কোনও ঘরের ব্যবস্থা না করলে রাহুল গান্ধী কোথায় থাকবেন? একমাসের মধ্যে কী বিকল্প ব্যবস্থা করা সম্ভব? এই সমস্ত প্রশ্ন-ই উঠে আসছে। তবে রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা। আর বিকল্প পথেরও সন্ধান দিয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
মল্লিকার্জুন খাড়্গের সঙ্গে সনিয়া গান্ধী তথা গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠতার কথা কারও অজানা নয়। কংগ্রেস দলের ব্যাটনও গান্ধী পরিবারের বাইরে গেলেও খাড়্গের হাতেই ন্যস্ত হয়েছে। তিনিও দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করলেও জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে গান্ধী পরিবারের সদস্যদের মতামতের যথেষ্ট গুরুত্ব থাকবে। তিনি যে গান্ধী পরিবারের প্রতি আজও একান্ত অনুগত, তা রাহুল গান্ধীর জন্য নিজের বাংলো ছেড়ে দেওয়ার মন্তব্যে আরও প্রকট হল। এদিন কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে কেন্দ্রের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “তিনি (রাহুল গান্ধী) চাইলে তাঁর মায়ের (সনিয়া গান্ধী সঙ্গে থাকতে পারেন অথবা আমার বাংলোয় আসতে পারেন। আমি তাঁর জন্য বাংলো ছেড়ে দেব। তবে সরকারের হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো এবং হেনস্থা করার মতো আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।” এপ্রসঙ্গে গণতান্ত্রিক ভারতের উদাহরণ তুলে ধরে খাড়্গে আরও বলেন, “গণতন্ত্রে অনেক সময়ই আমরা তিন-চার মাস সরকারি বাংলো না পাওয়ার বিষয়টি মেনে নিই। আমি এই বাংলো পেয়েছি ছয় মাস পর। কী ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে সেটা জনগণ দেখছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
খাড়্গের সুরেই কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে.সি বেণুগোপাল। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী ঘর নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। তবে ভারত সরকার যেটা করছে সেটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য বড় ইস্যু।”
আবার ভাড়া দিয়ে ওই বাংলোয় থাকার অধিকার রাহুল গান্ধীর রয়েছে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রমোদ যোশী। রাহুল গান্ধীকে বাংলো ছাড়ার জন্য একমাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এর মাধ্যমে রাহুল গান্ধীর প্রতি বিজেপির ঘৃণা প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু, ৩০ দিনের নোটিস দেওয়ার পরেও ওই বাংলোয় থাকার অধিকার রয়েছে। ৩০ দিন পর বাজারদরের সমান ভাড়া দিয়ে এই বাংলোয় থাকা যেতে পারে। আর রাহুল গান্ধী জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তার মধ্যে পড়েন।” আরও একধাপ এগিয়ে নিম্মমানের রাজনীতি করা হচ্ছে বলে তোপ দেগেছেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল। তিনি বলেন, “নিম্নরুচির ব্যক্তির নিম্ন রাজনীতি। রাহুলকে বাংলো খালি করতে বলা হয়েছে। তাঁদের বিবেক চলে গিয়েছে ছুটিতে।”
যদিও বিরোধীদের সমালোচনায় কর্ণপাত করতে নারাজ কেন্দ্রের শাসকদল। পাল্টা জবাব দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, “ওই বাড়িটি তাঁর জন্য নয়, ওটা সাধারণ মানুষের জন্য।”