Bihar: জেনেবুঝে ‘মৃত’ প্রার্থীকেই জেতালেন ভোটাররা! বিহারের গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনে নজির

Bihar Panchayat Vote: বিহারের রাজধানী থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের খইরা ব্লকের এক দরিদ্র গ্রাম দীপকারহারে। পঞ্চায়েত ভোটে এখানকার প্রার্থী ছিলেন সোহান মুর্মু। গত ২৪ নভেম্বর সেই ভোটের ফল বেরনোর পর চিন্তায় পড়েছেন আধিকারিকরা।

Bihar: জেনেবুঝে 'মৃত' প্রার্থীকেই জেতালেন ভোটাররা! বিহারের গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনে নজির
আপাতত চার পুরসভায় ভোট হবে। ফাইল ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 28, 2021 | 12:05 AM

বিহার: পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Vote) জয় পেয়েছেন। কিন্তু বিজেতা প্রার্থীর জন্য উচ্ছ্বাসের বদলে অনুগামীদের চোখ ছলছল। ভোটাররাও জানতেন প্রিয় নেতাকে তাঁর আর পাশে পাবেন না। দরকারে তাঁর কাছে ছুটে যেতে পারবেন না। অনুগামীরাও জানতেন তাঁকে জয়ের আবির মাখাতে পারবেন না। তবুও সবাই মিলে তাঁকেই জয়যুক্ত করেছেন! এক প্রার্থীর ‘শেষ ইচ্ছা’ কে সম্মান জানাতে তাঁকে জয়যুক্ত করলেন ভোটাররা। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের (Bihar) দীপকারহারে (Deepakarhar)।

বিহারের রাজধানী থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের খইরা ব্লকের এক দরিদ্র গ্রাম দীপকারহারে। পঞ্চায়েত ভোটে এখানকার প্রার্থী ছিলেন সোহান মুর্মু। গত ২৪ নভেম্বর সেই ভোটের ফল বেরনোর পর চিন্তায় পড়েছেন আধিকারিকরা। ফের তাঁরা ভোটের জন্য আবেদন করছেন কমিশনে। কিন্তু কেন?

ভোটের ফল বেরতে দেখা গেল জয়ী হয়েছেন সোহান মুর্মু। কিন্তু তাঁর শংসাপত্র দিতে গিয়েই হল মুশকিল। বিজেতা প্রার্থীকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কোথায় তিনি? সন্ধান করতে গিয়ে সামনে এল এক মর্মস্পর্শী ঘটনা। আসলে ভোটের আগের দিন রাতেই মারা যান সোহান মুর্মু। এলাকার ভোটাররাও তা জানতেন। কিন্তু তাঁরা ভোট দিলেন তাঁকেই। ‘সিমপ্যাথি ভোটের’ এক নজির তৈরি হল বিহারের ওই অখ্যাত গ্রামে।

জয়ী প্রার্থীর পরিচয় ও খবর জানার পর বিমর্ষ দেখায় খয়রার বিডিও রাঘবেন্দ্র ত্রিপাঠী। খানিক তাঁরও যেন গলা ধরা গেল কথা বলতে গিয়ে… “খোঁজ নিয়ে জানলাম, গত ৬ নভেম্বর ভোটের আগের দিনই মারা গিয়েছিলেন সোহান মুর্মু।”

বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সীমানা অঞ্চলে এক খণ্ড অঞ্চলে অবস্থিত সোহান মুর্মুর এই গ্রাম। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে একসময় মাওবাদীদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। এখানকার আদি বাসিন্দাদের দাবি, নয়ের দশকে প্রথম নকশাল কর্মকাণ্ডের সূচনা হয় এখান থেকেই। নকশাল কর্মকাণ্ডের ভয়ঙ্কর রিপোর্ট পাওয়া যায় কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রেও।

তবে বিডিও বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের বিবরণ থেকেই বোঝা যায় যে এই গ্রাম এবং এখানকার বাসিন্দারা একটা আশ্চর্যরকম সরলতা নিয়ে জীবনযাপন করছেন। তাই, আবেগতাড়িত হয়ে তাঁরা একজন মানুষ মৃত জানার পরেও তাঁকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন।

এদিকে মৃত মুর্মুর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তাঁর শেষ ইচ্ছাই ছিল ভোটটা জেতা। মৃত্যুশয্যায় পড়ে থেকেও সোহানের মুখে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে ভোটের কথা, ভেবে গিয়েছেন ভোটের কথা। সেই কথাই ছড়িয়ে পড়েছিল গ্রামে। আর তার পর এই ফলাফল। প্রতিদ্বন্দ্বীকে মাত্র ২৮ ভোটে হারিয়েছেন ‘মৃত’ প্রার্থী। সবটাই গ্রামবাসীরা করেছেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।

যদিও শোকসন্তপ্ত পরিবার এবং গ্রামবাসীদের এমন সরল ভাবনা সরকারি আধিকারিকদের কাজ বাড়িয়ে দিয়েছে। জন্য আরও কাজ নিয়ে এসেছে। বিডিও রাঘবেন্দ্র ত্রিপাঠীর কথায়, “জয়ী প্রার্থীর শংসাপত্র তো কাউকে দেওয়া যাবে না। আমরা রাজ্য নির্বাচনে এই অনুরোধ নিয়ে চিঠি লিখতে যাচ্ছি যে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচন বাতিল করা হোক এবং নতুন করে আবার ভোট গ্রহণ করা হোক”।

আরও পড়ুন: Tripura: ত্রিপুরা হিংসার ভুয়ো খবর সংক্রান্ত ১০২ টি মামলা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ