Delhi High Court: স্বামীর সম্পত্তি থাকলে শ্বশুরের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দাবি করতে পারেন বিধবা পুত্রবধূ

দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, স্বামীর মৃত্য়ুর পর তাঁর সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেলে, তবেই শ্বশুরের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ চাইতে পারেন ছেলের বউ।

Delhi High Court: স্বামীর সম্পত্তি থাকলে শ্বশুরের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দাবি করতে পারেন বিধবা পুত্রবধূ
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 11, 2022 | 8:33 PM

নয়াদিল্লি: স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তি যদি স্ত্রীর কাছে থাকে। তাহলে শ্বশুরের কাছ থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দাবি করতে পারেন বউমা। এক মামলার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মুক্তা গুপ্তা এবং বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণার ডিভিশন বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে স্বামীর সম্পত্তি না থাকায় এক মহিলার রক্ষণাবেক্ষণের আবেদন খারিজ করেছে ওই ডিভিশন বেঞ্চ। সম্পত্তি না থাকাতেই শ্বশুরের থেকে খোরপোশের জন্য় তাঁর আবেদন খারিজ করেছে দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার প্রেক্ষিতেই সম্পত্তির বিষয়ে আলোকপাত করেছেন বিচারপতিরা।

খোরপোশের আবেদনকারী ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর তাঁদের মেয়ের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য়জনকভাবে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই মহিলার স্বামীর। এর পর দিন থেকেই ওই মহিলা নিজের মেয়েকে নিয়ে চলে যান বাপের বাড়িতে। এবং তার পর থেকে সেখানেই থেকেছেন তিনি। ওই মহিলার শ্বশুর আদালতে জানিয়েছেন, ছেলের মৃত্যুর পর থেকে পুত্রবধূ তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই রাখেননি। এমনকি তাঁদের কোনও খোঁজখবরও করেননি বলে অভিযোগ। এর পর প্রায় চার বছর কেটে যায়। ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুযারি শ্বশুরের কাছে থেকে খোরপোশ চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন ওই বিধবা মহিলা।

সেই মামলায় ওই মহিলা জানান, তিনি উচ্চ শিক্ষিত নন। তাই চাকরি করে উপার্জন করতে পারছেন না। দৈনন্দিন খরচ চালানোর জন্য় নিজের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের উপর তিনি পুরোপুরি নির্ভরশীল। কিন্তু বাবা-মা তাঁর খরচ চালাতে পারছেন না। মামলার আবেদন স্বামীহারা ওই মহিলা আরও জানান, তাঁর শ্বশুর এক জন শিক্ষিত ব্যক্তি। এবং চাকরি করেন। তাই তাঁর খরচ চালাতে তিনি বাধ্য। যদিও তাঁর অভিযোগ ছিল, শ্বশুর তাঁকে প্রবলভাবে অবহেলা করেন। রক্ষণাবেক্ষণ ও দৈনন্দিন খরচের জন্য় কোনও রকম সাহায্য করেন না। যদিও তাঁর শ্বশুর চাকরির মাইনের বাইরেও বাড়ি ভাড়া থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করেন বলে দাবি ছিল মহিলার। সব মিলিয়ে মাসে ৫৫ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা রোজগার করেন তাঁর শ্বশুর। শ্বশুরের থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।

এই মামলার জবাবে ওই মহিলার শ্বশুর আদালতে জানান, হিন্দু অ্যাডাপশন অ্যান্ড মেনটেন্যান্স অ্য়াক্ট, ১৯৫৬ আইনের ১৯ নম্বর ধারা অনুসারে, তাঁর ছেলে কোনও সম্পত্তি রেখে যায়নি। তাই তাঁর পুত্রবধূ এই খোরপোশের দাবি করতে পারেন না। সে সময় আদালতের নির্দেশ মতো, স্বামীর সম্পত্তি তাঁর কাছে রয়েছে, তা ওই বিধবা মহিলা দেখাতে পারেননি। এবং আদালত মহিলার দাবি খারিজ করে দেন।

আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধেই দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, স্বামীর মৃত্য়ুর পর তাঁর সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেলে, তবেই শ্বশুরের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ চাইতে পারেন ছেলের বউ। এই মামলায় স্বামীর সম্পত্তি ছিল না বলেই এই বিধবা মহিলার, শ্বশুরের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের খরচের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।