ডেল্টা প্লাসের থাবা ফরিদাবাদেও, আগামী মাস থেকেই জিনোম সিকোয়েন্সিং হবে রাজধানীতে

Delta Plus Variant: স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, সংক্রমণের নতুন প্রজাতির খোঁজ মিলতেই যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য হাসপাতালের নিয়মিত রোগীদের নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডেল্টা প্লাসের থাবা ফরিদাবাদেও, আগামী মাস থেকেই জিনোম সিকোয়েন্সিং হবে রাজধানীতে
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2021 | 4:20 PM

জ্যোতির্ময় রায়: দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনার ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট (Delta Plus Variant)। বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। শুক্রবার ফরিদাবাদেও ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত একজনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা রাজধানী দিল্লির কাছে অশনী সঙ্কেত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিতদের দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ জিনোম সিকোয়েন্সিং (Genome Sequencing) পরীক্ষা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিল্লির লোকনায়েক হাসপাতাল এবং লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট (আইএলবিএস) হাসপাতালে জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাব স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই লোকনায়ক হাসপাতালের ল্যাবটি শুরু হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ল্যাবটি তৈরি করতে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সিঙ্গাপুর থেকে আনানো হয়েছে।আগামী মাসেই ল্যাবটি চালু হলে দিল্লিতেই করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, এতদিন ভাইরাসের প্রকৃতি ও রূপ পরিবর্তন বা অভিযোজন জানতে গেলে এনসিডিসি(NCDC)-র দিল্লি ও পুণের ল্যাবে রোগীদের  নমুনা পাঠানো হত। পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে এক সপ্তাহ বা আরও বেশি সময় লাগত। তবে এই ল্যাব শুরু হলে রিপোর্ট আসতে কম সময় লাগবে। এছাড়া, করোনাভাইরাসের অভিযোজন দ্রুত শনাক্ত করা গেলে করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙা যাবে।

লোকনায়ক হাসপাতালই হল দিল্লির প্রথম হাসপাতাল, যেখানে জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা শুরু করা হচ্ছে। তবে দিল্লি সরকার বসন্ত কুঞ্জে অবস্থিত লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট (আইএলবিএস)-এও জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবও চালু করার পরিকল্পনা করেছে।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, সংক্রমণের নতুন প্রজাতির খোঁজ মিলতেই স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য হাসপাতালের নিয়মিত রোগীদের নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে , পাশাপাশি টেস্ট, ট্রাক, ট্রিটমেন্ট এবং টিকা দেওয়ার নীতি আরও কার্যকর পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হবে।

দ্রুত সংক্রমণ চিহ্নিতকরণের জন্য যেকোনও স্থানে উপস্থিত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং জিনোম পরীক্ষাও করা হবে। জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষায় যদি ডেল্টা প্লাসের উপস্থিতি ধরা পরে, তবে তারজন্যও উপযুক্ত প্রস্তুতি রয়েছে। কোনও এলাকায় ডেল্টা প্লাস আক্রান্তের খোঁজ মিললেই গোটা এলাকাটিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ধরা হবে এবং  বিধিনিষেধওআরোপ করা হবে। সেখানে বসবাসকারী সমস্ত মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যেসমস্ত রাজ্য বা জেলায় ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তদের সন্ধান পাওয়া গেছে, তাদের জন্য বিশেষ গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। গাইডলাইনে বলা হয়েছে যে, সংক্রমিত এলাকায় জনসমাগম ও চলাচল নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে জেলাগুলিতে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, সেখানে আপাতত কন্টেনমেন্ট জো়ন ঘোষণা করে সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে হবে।

এখনও পর্যন্ত রাজধানীতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আলফা ভ্যারিয়েন্ট (যা প্রথম ব্রিটেনে পাওয়া যায়), বিটা ভ্যারিয়েন্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (ভারত) ধরা পড়েছে। দিল্লিতে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হতেই, করোনা বিধি নিষেধকে উপহাস করে জনতার ঢেউ বাজার, শপং মলগুলিতে দেখা যাচ্ছে। করোনা নিয়ে সাধারণ জনগণ উদাসীন। সরকারও কেবল সতর্কবাণী দিয়েই নিজের কর্তব্য পালন করছে। বর্তমানে করোনার ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টও দিল্লিওর দরজায় কড়া নাড়ছে। এমন অবস্থায় বাজারে অনিয়ন্ত্রিত জনসমাগম এবং সরকারের উদাসীন মনোভাব আগামী দিনে কি বিপদ ডেকে আনবে, সেটা ঈশ্বরই জানেন।

আরও পড়ুন: ‘তোমার পরে ঠেকাই মাথা’, জন্মভিটেকে প্রণাম করে রাষ্ট্রপতি বললেন…