Delhi Air Pollution: নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ! শুধু চোখ-গলা জ্বালা নয়, একাধিক জটিল রোগ নিয়ে সতর্ক করলেন চিকিৎসকরা
Air Pollution Effect: ডঃ সুমিত রায় জানান, হাঁচি, কাশি, গলায় জ্বালা, ত্বকে চুলকানি বা অন্যান্য সমস্যা, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যার মতো একাধিক উপসর্গ দেখা যাচ্ছে দিল্লিবাসীদের মধ্যে। দিল্লির আশেপাশে নয়ডা, গাজিয়াবাদের বাসিন্দারাও একই সমস্যার মুখে পড়ছেন।
নয়া দিল্লি: শ্বাস নিলেই ঢুকছে ‘বিষ’। টানা দুইদিন ধরে ‘ভয়াবহ’ অবস্থা রাজধানীর বাতাসের। শনিবার সকালেও বাতাসের গুণমান ‘গুরুতর’ পর্যায়ে ছিল। বেলা গড়াতেই যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও জল ছেটানোয় দূষণের পরিমাণ কিছুটা কমে ‘অত্য়ন্ত খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছয়। শনিবার দিল্লিতে বাতাসের গুণমান গড় সূচক ছিল ৩৮১। দূষণ রুখতে ইতিমধ্যেই চার স্তরীয় অ্যাকশন প্ল্যান কার্যকর করেছে সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড। এবার দিল্লির এই বিষাক্ত পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। দিল্লির এই বিষাক্ত বাতাসে দিন কয়েক শ্বাস-প্রশ্বাস নিলেই সম্পূর্ণ সুস্থ যুবক-যুবতীদেরও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শীতের শুরু হতেই দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকাগুলির বাতাস বিষিয়ে ওঠা বর্তমানে ‘অতি সাধারণ’ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হলেও, দীপাবলির সময় দেদার বাজি পোড়ানো এবং দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যে চাষের খড়কুটো জ্বালানোর কারণেই প্রতি বছর দূষণ বাড়ে। আর এরই ভুক্তভোগী হন দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা। বিষাক্ত বাতাসের মধ্যে থাকার কারণে তাদের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ারের প্রধান ডঃ সুমিত রায় জানান, হাঁচি, কাশি, গলায় জ্বালা, ত্বকে চুলকানি বা অন্যান্য সমস্যা, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যার মতো একাধিক উপসর্গ দেখা যাচ্ছে দিল্লিবাসীদের মধ্যে। দিল্লির আশেপাশে নয়ডা, গাজিয়াবাদের বাসিন্দারাও একই সমস্যার মুখে পড়ছেন। এই বিষাক্ত পরিবেশের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে ব্রঙ্কোস্প্য়াজম দেখা দিতে পারে। এতে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশের নালির পেশি শক্ত হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে ফুসফুসের নালি সরু হয়ে যায়।
ডঃ রায় বলেন, “একজন সুস্থ ব্যক্তিও যদি এই বিষাক্ত পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ থাকেন, তবে তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে স্বাস্থ্যে। আমরা দেখেছি সম্পূর্ণ সুস্থ ব্যক্তি, যিনি সিগারেটও খান না, তাদেরও ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর প্রধান কারণ হল বায়ুদূষণ।”
শীতের সময়ে বাতাসে দূষণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়ায়, একজন সুস্থ ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দিল্লির বায়ুতে যে দূষিত কণাগুলি ভাসছে, তা রক্ত ও ফুসফুসে মিশে গেলে গুরুতর সমস্য়া দেখা দিতেব পারে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ দীপক গুপ্তাও জানান, যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের অতিরিক্ত সুরক্ষা গ্রহণ করা উচিত। চোখ জ্বালা, গলা জ্বালা বা শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধার মতো ছোটখাটো সমস্যা নয়, ফুসফুসে ক্য়ান্সারও হতে পারে। এইমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর ডঃ রণদীপ গুলেরিয়াও জানান, দূষণ নিশব্দে মানুষ মারছে। সিগারেটের থেকেও বায়ুদূষণে ফুসফুসের বেশি ক্ষতি হয়।