Gujarat: ১৬ হাজার রোগীর ‘হৃদয়’ সারিয়ে একচল্লিশেই হৃদরোগে মৃত্যু বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্টের
Cardiologist Dr Gaurav Gandhi Dies: মাত্র ৪১ বছর বয়সে তিনি প্রায় ১৬,০০০ ব্যক্তির হৃৎপিণ্ডের অস্ত্রোপচার করেছিলেন। নিজেই হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন কার্ডিওলজিস্ট, ডা. গৌরব গান্ধী।
আহমেদাবাদ: দেশের অন্যতম বিশিষ্ট তরুণ কার্ডিওলজিস্ট ডা. গৌরব গান্ধী। মাত্র ৪১ বছর বয়সে তিনি প্রায় ১৬,০০০ ব্যক্তির হৃৎপিণ্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন অস্ত্রোপচার করেছিলেন। হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে, ফেসবুকে ‘হল্ট হার্ট অ্যাটাক’ নামে একটি প্রচারও চালাতেন তিনি। মঙ্গলবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হল গুজরাটের জামনগরের এই বিশিষ্ট চিকিৎসকের। ডা. গৌরব গান্ধীর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে বরাবরই অত্যন্ত সচেতন ছিলেন তিনি। ধূমপান বা মদ্যপান করতেন না। সোমবার রাতেও একেবারে স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। কোনও শারীরিক অস্বস্তির কথাও উল্লেখ করেননি। তাঁর হৃৎপিণ্ডের কোনও রোগও ছিল না। এই বিশিষ্ট চিকিৎসকের অকাল মৃত্যুতে দেশের চিকিৎসা মহলে বড় মাপের শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতোই সোমবারও সারাদিন রোগীদের সেবাতেই নিয়োজিত ছিলেন ডা. গৌরব গান্ধী। সোমবার সন্ধ্যাতেও রোগী দেখেছিলেন তিনি। রাতের দিকে ফিরে এসেছিলেন তাঁর জামনগরের প্যালেস রোডের বাড়িতে। তারপর, রাতের খাবার খেয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর আচরণে কোনও অস্বাভাবিকতা ছিল না বলে জানিয়েছেন তাঁর বাড়ির লোকজন। শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও অভিযোগও করেননি এই বিশিষ্ট চিকিৎসক। প্রতিদিনই তিনি একটু আগে আগেই ঘুমোতে যেতেন এবং বেশ ভোরে উঠে পড়তেন। সোমবার রাতেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু, সকালে সাধারণত তিনি যে সময় ঘুম থেকে ওঠেন, মঙ্গলবার সকালে সেই সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি ওঠেননি। সকাল ৬টা নাগাদ পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ডাকতে গিয়েছিলেন। বারবার করে ডেকেও তাঁর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর, অচেতন অবস্থায় তাঁকে দ্রুত জিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু, ডা. গৌরব গান্ধীকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে আনার ৪৫ মিনিটের মধ্যে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গুজরাটের জামনগর থেকেই তাঁর প্রাথমিক মেডিক্যাল ডিগ্রি লাভ করেছিলেন ডা. গৌরব গান্ধী। আহমেদাবাদ থেকে তিনি কার্ডিওলজির বিশেষজ্ঞ হয়েছিলেন। এরপর, নিজ শহরে ফিরে এসে চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ডা. গৌরব গান্ধীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী এবং দুই পুত্র। তাঁর সতীর্থ ও অন্যান্য চিকিৎসকদের মধ্যেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একই সঙ্গে, উঠে গিয়েছে বড় প্রশ্ন, বর্তমানে কেন এত অল্প বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হচ্ছে মানুষের?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই দাবি করেছেন, এর জন্য বর্তমান যুব সমাজের অস্বাস্থ্যকর ‘লাইফস্টাইল’ দায়ী। অত্যধিক ধূমপান, মদ্যপান হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে ডা. গৌরব গান্ধী অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেশ কয়েকজনের অতি অল্প বয়সে মৃত্যু হয়েছে, যাঁরা স্বাস্থ্যকর জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন। এমনকি, খেলতে খেলতে কিংবা জিম করতে গিয়েও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এই অবস্থায় চিকিৎসকরা আঙুল তুলছেন ‘স্ট্রেস ফ্যাক্টর’-এর দিকে। প্রতিদিনের জীবনে যে মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, সেটিই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার নয়া কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।