Gogi-Tillu Gang War: খুনের বদলা খুন! ছাত্র রাজনীতি থেকে ‘বন্ধু’ টিল্লুর সঙ্গে শত্রুতা শুরু গ্যাংস্টার গোগির
Firing at Delhi Court: আজ আদালতে গোগির ওপর তার সবথেকে বড় প্রতিপক্ষ টিল্লু তাজপুরিয়ার গ্যাংই এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা।
নয়া দিল্লি: একজনের নাম জিতেন্দ্র (Jitendra Gogi), অপরজনের নাম সুনীল (Sunil Tillu)। তবে অপরাধের দুনিয়ায় আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় এই নামগুলো। খুন-রাহাজানির জগতে তারা ‘গোগি’ আর ‘টিল্লু’! এই নামেই তাদের চিনত সবাই। দিল্লি (Delhi) থেকে হরিয়ানা, তাদের খুঁজতে একসময় হন্যে হতে হয়েছে পুলিশকে। নাগালের মধ্যে এলেও কোনও ফাঁকে তারা বেরিয়ে যেত, টেরও পেত না পুলিশ। তাদের অপরাধের ধরণও অনেকটা একইরকম। একসময় তারা বন্ধুও ছিল বটে। ভাগ্যচক্রে দু’জনেই বন্দি হয় তিহার জেলে। অথচ দিল্লি-হরিয়ানার অলিতে গলিতে তাদের শত্রুতার গল্পই বেশি শোনা যায়। আজ দিল্লির রোহিণী আদালতের ভিতরে সেই গোগির দিকে তাক করেই গুলি চালায় কেউ বা কারা। পুলিশের অনুমান টিল্লু গ্যাং-এর লোকজনই রয়েছে এ দিনের ঘটনার পিছনে। কিন্তু কোথা থেকে শুরু এই গ্যাংওয়ার?
দেশের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পরবর্তী কালে বিশিষ্ট রাজনীতিক হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। এমন নজির নেহাত কম নয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতি থেকেই গ্যাংস্টার হিসেবে উত্থান গোগি আর টিল্লুর। বলা ভালো, গ্যাংওয়ার বা দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাতও সেই কলেজ থেকেই।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধানন্দ কলেজে পড়াশোনা করত জিতেন্দ্র আর সুনীল। বন্ধুত্বও ছিল দু’জনের। তখনও অপরাধ জগতের সঙ্গে তেমন কোনও যোগ ছিল না গোগির। কিন্তু কলেজের বন্ধু টিল্লুর সঙ্গে শত্রুতাই ক্রমশ অপরাধের পথে নিয়ে যায় গোগিকে। জানা যায় গণ্ডগোলটা শুরু হয় কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময়। আর পাঁচজন ছাত্রের মতো তারাও রাজনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। মুস্কিলটা হল সুনীল ওরফে টিল্লুর এক ভাইকে নিয়ে। নির্বাচনে লড়ছিল সেই বন্ধুটি। আর তার জন্য গলা ফাটাচ্ছিল সুনীল। এ দিকে, গোগি তখন প্রতিপক্ষ দলের সমর্থক। কিছুতেই টিল্লুর ভাইকে জিততে দেবে না সে। ঘটনাচক্রে জয় হল টিল্লুর দলেরই। ব্যস! মাথায় খুন চেপে গেল গোগির।
এর বদলা তো নিতেই হবে! দিনে দিনে শত্রুতা বাড়তে শুরু করল। এভাবেই একদিন খুন হয়ে গেল টিল্লুর এক বন্ধু দীপক। অপরাধ? গোগির এক বোনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল দীপক। টিল্লুর বন্ধু হয়ে গোগির বোনের দিকে নজর? সহ্য করতে পারেনি গোগি। সেই শুরু হল লড়াই। থেমে থাকার পাত্র নয় টিল্লুও। বন্ধু দীপকের খুনের বদলা তো খুনেই নিতে হবে! তাই লাশ পড়ল আরও একটা। গোগির বন্ধু অরুণ ওরফে কমান্ডোকে মেরে ফেলল টিল্লু গ্যাং। তারপর এই গত কয়েক বছরে রক্ত ঝরেছে অনেক। কলেজের সেই শত্রুতা মেটানোর খেলায় একের পর এক মৃত্যুর সাক্ষী থেকেছে দিল্লি, হরিয়ানা। এই গ্যাংওয়ারে অন্তত ২০-২৫ জনের মৃত্যুর হিসেব আছে পুলিশের কাছে। ২০১৩ তে দিল্লির আর এক গ্যাংস্টার নীতু দাবোড়িয়ার মৃত্যু হয় এনকাউন্টারে। জেলে যায় আর এক কুখ্যার গ্যাংস্টার নীরজ বাওয়ানিয়া। তখন কে হবে দিল্লির ডন? সেই নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র হয় গোগি-টিল্লুর। আর সেই লড়াইতেই শেষমেস মৃত্যু হয় গোগির।