PM Modi in Shimla: ‘ফাইল সইয়ের সময় আমি প্রধানমন্ত্রী, বাকি সময় ১৩০ কোটি মানুষের পরিবারের সদস্য’

'Garib Kalyan Sammelan' in Shimla: হিমাচল প্রদেশের সিমলায় 'গরীব কল্যান সম্মেলনে' ভাষণ দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বললেন, সরকারি ফাইল স্বাক্ষর করার সময়ই তিনি 'প্রধানমন্ত্রী', বাকি সময় তিনি দেশের ১৩০ কোটি মানুষের একজন।

PM Modi in Shimla: 'ফাইল সইয়ের সময় আমি প্রধানমন্ত্রী, বাকি সময় ১৩০ কোটি মানুষের পরিবারের সদস্য'
সিমলায় 'গরীব কল্যান সম্মেলনে' ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2022 | 5:49 PM

সিমলা: বরাবরই তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নন, বরং দেশের প্রধান সেবক বলেই পরিচয় দেন। সরকারের ৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে হিমাচল প্রদেশের সিমলায় ‘গরীব কল্যাণ সম্মেলনে’ ভাষণ দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বললেন, কিছু কিছু সময় তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় থাকতে হয় ঠিকই। যখন সরকারি ফাইলপত্র স্বাক্ষর করতে হয়, সেই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই তাঁকে স্বাক্ষর করতে হয়। কিন্তু, ওই সময়টুকু ছাড়া তিনি একজন সাধারণ মানুষ। দেশের ১৩০ কোটি মানুষের একজন। আর শুধু ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদীই নন, মোদী সরকারও এই মন্ত্রেই চলে। পূর্ববর্তী সরকারগুলির মতো সাধারণ মানুষের ‘মাই-বাপ’ হয়ে থাকেনি তাঁর সরকার, বরং ‘জনতা-জনার্দনের সেবক’ হয়েছে।

এদিন সিমলা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, দেশকে সেবা করার সুয়োগ পাওয়ার ৮ বছর পূর্তি তাঁর জীবনের একটা বিশেষ দিন। আর এই বিশেষ দিনে ‘দেবভূমিকে’ প্রণাম করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। তিনি আরও জানান, মোদী সরকারের ৮ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সরকার একদিকে কোভিড-১৯ মহামারিতে অনাথ শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে দেশের ১০ কোটির বেশি কৃষককে ‘পিএম কিষাণ নিধি’র সাম্প্রতিক কিস্তির অর্থ দেওয়া হয়েছে। এরপরই তিনি বলেন, ‘শুধু ফাইল সই করার সময়ই আমি প্রধানমন্ত্রী, বাকি সময় দেশের ১৩০ কোটি মানুষের পরিবারের সদস্য। এই পরিবারই আমার জীবনে সব। আর এই জীবনও আপনাদের জন্যই’।

সরকারের আট বছর পূর্তির দিনে পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারকে বিঁধতেও ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোথা থেকে শুরু করেছিলাম, তা মনে রাখা দরকার। তাহলেই কোথায় পৌঁছেছি তা উপলব্ধি করা যায়।’ এরপরই ইউপিএ জমানার কথা তুলে ধরেন তিনি। মোদী বলেন, ‘২০১৪-র আগে লুট, দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র, আটকে যাওয়া প্রকল্প – এইসবেই ভরে থাকত খবরের হেডলাইন। সরকার দুর্নীতিকে সরকারি ব্যবস্থার অংশ বানিয়ে ফেলেছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বদলে, তার সামনে মাথা ঝুঁকিয়েছিল। সরকারি প্রকল্পগুলির অর্থ, সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছনোর আগেই লুট হয়ে যেত। অর্থাভাবে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারতেন না দরিদ্ররা’।

তাঁর সরকারের সময় এই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে বলে দাবি করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চর্চা হয় সরকারি প্রকল্প থেকে পাওয়া সুবিধা নিয়ে। চর্চা হয়, গরীবের অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পৌঁছনো নিয়ে। গোটা বিশ্বে আলোচনা চলে ভারতের স্টার্টআপ সংস্থাগুলির বিকাশ নিয়ে। বিশ্বব্যাঙ্কও ভারতে ব্যবসা করার স্বাচ্ছন্দের বিষয়ে চর্চা করে। দেশের মানুষ আলোচনা করে, অপরাধীদের শায়েস্তা করার বিষয়ে সরকারের শক্তি নিয়ে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহনশীলতার নীতি নিয়ে’। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, সরকারি ব্যবস্থায় দুর্নীতি তাঁরা রুখে দিয়েছেন, ‘জনধন, আধার এবং মোবাইলের ত্রিশক্তি দিয়ে’। দরিদ্ররা চিকিৎসা ক্ষেত্রে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সহায়তা পায়। দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে, দেশবাসী সার্জিকাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে গর্ব করতে পারে। তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর সরকার সরকারি ব্যবস্থাকে গরীবের কল্যাণমুখী করে তুলেছে।

চলতি বছরের শেষ দিকেই হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, এদিন হিমাচল প্রদেশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগের কথাও আলাদাভাবে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, ভোকাল ফর লোকালের মতো প্রচারের মাধ্যমে, তাঁর সরকার হিমাচল প্রদেশের সম্বৃদ্ধ হস্তশিল্পগুলিকে দেশে-বিদেশে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে। এমনকি, কুলুতে তৈরি জ্যকেট পৌঁছে গিয়েছে কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরে, সেখানকার পুরোহিতরা সেই জ্যাকেট পরছেন। এছাড়া বাজেটে ‘পর্বতমালা’, ‘ভাইব্র্যান্ট বর্ডার ভিলেজ’-এর মতো প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। যা হিমাচল প্রদেশের মতো পাহাড়ি রাজ্যের উন্নয়নে সহায়ক হবে। এছাড়া, সরকারের নয়া শিক্ষা নীতির কারণে হিমাচলের শিক্ষার্থীরা এখন মাতৃভাষাতেই মেডিক্যাল এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। পাশাপাশি বিলাসপুরে সরকার এইমস হাসপাতাল তৈরি করেছে। হিমাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে ড্রোন পরিষেবাও পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।