Indian Army: খালি হাতে লড়লেও পারবে না চিনারা! এই ট্রেনিং নিচ্ছে সেনা

চিনা কুংফুর জবাব দিতে, পঞ্জাব রেজিমেন্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ঘটকার। গোর্খা রেজিমেন্ট অনুশীলন করছে খুকরি নাচ এবং মাদ্রাজ রেজিমেন্টের অনুশীলন করছে কালারি পায়ত্তু। ২০২০ সালের জুনে, গালওয়ানে যে সংঘর্ষ হয়েছিল তাতে ভারতীয় সেনার ২০ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল।

Indian Army: খালি হাতে লড়লেও পারবে না চিনারা! এই ট্রেনিং নিচ্ছে সেনা
জিনপিং বাহিনীকে খালি হাতে জবাব দিতে তৈরি হচ্ছে ভারতীয় সেনাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Feb 19, 2024 | 5:13 PM

নয়া দিল্লি: ২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল চিন ও ভারতীয় সেনার। ভারতীয় বাহিনীর টহলদারী এলাকায় ঢুকে পড়ায়, চিন সেনাকে বাধা দিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। কোনও গোলাগুলি চলেনি। কিন্তু, হাতাহাতি হয়েছিল দুই পক্ষের। পাহাড়ি উপত্যকা থেকে, প্যাংগং হ্রদে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা সদস্যের। ভারতীয় অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশের ফল কী হয়, সেদিন টের পেয়েছিল চিন সেনা। তবে, এবার চিনকে জবাব দিতে আরও তৈরি ভারত। হাতাহাতিতে যদি চিনারা তাদের কুংফু বা উসু-র মতো মার্শাল আর্ট ব্যবহার করে, ভারতও জবাব দেবে দেশিয় মার্শাল আর্ট, ঘটকা, খুকরি নাচ বা কালারি পায়ত্তু দিয়ে।

আসলে, গালওয়ানের ওই রক্তাক্ত সংঘর্ষের পরই ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্ট তাদের প্রশিক্ষণে যুক্ত করেছে বিভিন্ন শৈলির ভারতীয় মার্শাল আর্ট। সেনাবাহিনীর যে স্বাভাবিক শারীরিক অনুশীলনগুলি আগে চলত, সেগুলির সঙ্গেই যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় মার্শাল আর্ট। পঞ্জাব রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণে সেনা সদস্যরা অনুশীলন করছেন ঘটকা। গোর্খা রেজিমেন্ট অনুশীলন করছে খুকরি নাচ। মাদ্রাজ রেজিমেন্ট অনুশীলন করছে কালারি পায়ত্তু। বিশেষ করে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মোতায়েন সেনা শিবিরগুলিতে চলছে মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ।

অরুণাচল প্রদেশের পূর্বদিকে কিবিথু এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে মোতায়েন আছে পঞ্জাব রেজিমেন্টের একটি দল। মেজর কার্তিক জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ওই এলাকার ভূখণ্ডের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে, নিজস্ব চ্যালেঞ্জ রয়েছে। টহলদারীতে বেরিয়ে খড়স্রোতা নদী, নালা, অবিরাম বর্ষণ, সুউচ্চ দূর্গম পাহাড়, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার মোকাবিলা করতে হয় তাঁদের। আর এই সকল চ্যালেঞ্জের মোরাবিলা করার শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেই কারণেই তাঁরা বিভিন্ন শারীরিক কসরতের অনুশীলন করেন। আর ইদানিং, তার মধ্যে যুক্ত হয়েছে মার্শাল আর্টস। ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার, কর্নেল প্রিন্স রোহিত জানিয়েছেন, সামরিক চাকরিতে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। প্রশিক্ষণ এবং মহড়ার মাধ্যমে সেই সকল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার জন্য তৈরি করা হয় সেনা সদস্যদের।

শুধু ভারতীয় মার্শাল আর্টস নয়, গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনুশীলনে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে ইজরায়েলি মার্শাল আর্টসও। উধমপুরে ভারতীয় সেনার উত্তর কমান্ডে, ‘ক্রাভ মাগা’ নামে এক ইজরায়েলের মার্শাল আর্টের অনুশীলন শুরু করা হয়েছিল। বস্তুত, এই অনুশীলন দিয়েই ভারতীয় বাহিনীতে মার্শাল আর্টসের অনুশীনল শুরু হয়। পরে, সেনার বিভিন্ন রেজিমেন্ট, বিভিন্ন মার্শাল আর্ট বেছে নেয়। এক উচ্চপদস্থ সেনা কর্তা বলেছেন, “গালওয়ানের মতো হঠাৎ যদি কোনও মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, সেই ক্ষেত্রে আমরা অপ্রস্তুত থাকতে পারি না। সেই হামলার জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের তৈরি থাকতেই হবে। আর তাই বাহিনীতে মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে।”

অপর এক কর্তা বলেছেন, “বেশ কিছু প্রাচীন ভারতীয় মার্শাল আর্ট ফর্ম রয়েছে, যা আমাদের জন্য উপযুক্ত। হাতাহাতির সময় এই মার্শাল আর্টসগুলি আমাদের কাজে আসবে।” সেনা সদস্যদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে, ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত, ভারতীয় সেনার সকল কর্মীদের প্রতি তিনমাস অন্তর একবার করে যুদ্ধ প্রস্তুতি এবং দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হয়। ২৫ মিনিটে ৫ কিলোমিটার পথ দৌড়াতে হয়। ৩০ বছরের বেশি বয়স যাদের, তাদের অবশ্য অতিরিক্ত দুই মিনিট সময় দেওয়া হয়। তবে, অতি সম্প্রতি সেনা কর্তাদের শারীরিক ফিটনেসের পর্যালোচনার পদ্ধতি সংশোধন করেছে সেনা। তবে, নয়া পদ্ধতি এখনও কার্যকর করা হয়নি।